অতিথি লেখক- আজিজুল হক
সহকারী অধ্যাপক, ইয়েংনাম বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রায় প্রতিটি গবেষণাপত্রই একটি গল্প বলে। তবে প্রশ্ন হলো, সেই গল্পটি কাদের সামনে এবং কীভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে? অনেক সময় লেখক শুধুমাত্র নিজের দৃষ্টিকোণ থেকে গল্পটি তুলে ধরেন, কিন্তু হয়তো সম্পাদক, রিভিউয়ার কিংবা পাঠকরা সেই গল্পের অন্য কোনো দিক দেখতে চান।
গবেষণা প্রকাশ একটি প্রতিযোগিতামূলক ও জটিল প্রক্রিয়া। শুধু ভালো গবেষণা করলেই সফল হওয়া যায় না। কারণ আন্তর্জাতিক জার্নালে গবেষণাপত্র গ্রহণের পেছনে থাকে নানা পক্ষের ভিন্ন প্রত্যাশা ও মূল্যায়ন মানদণ্ড। একাডেমিক বা বৈজ্ঞানিক লেখার নিজস্ব একটি স্টাইল, শব্দচয়ন এবং যথাযথ টার্মিনোলজি ব্যবহার করতে হয়, যা সাধারণ গল্পের লেখার থেকে ভিন্ন। অনেক সময় লেখকরা মূল নিয়ম-কানুন বুঝে নেওয়ার আগেই লেখায় হাত দেন, যার ফলে বারবার অপ্রয়োজনীয় Rejection-এর সম্মুখীন হন। তাই সফল গবেষণা প্রকাশের জন্য লেখকদের অবশ্যই সম্পাদক, রিভিউয়ার এবং পাঠকের দৃষ্টিভঙ্গি বুঝে নিতে হবে এবং সেই অনুযায়ী গবেষণাপত্র গঠন করতে হবে। যেমন:
লেখক:
লেখক হিসেবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজের গবেষণা তথ্যকে স্পষ্ট, সঠিক ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে উপস্থাপন করা। এর মধ্যে রয়েছে তথ্যের যথাযথ বিশ্লেষণ, ফলাফল যুক্তিসঙ্গতভাবে উপস্থাপন এবং পুরো গবেষণাপত্রের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। লেখককে ভাবতে হবে গবেষণাপত্রের প্রতিটি অংশ একে অপরের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা এবং পাঠক সহজেই গবেষণার লজিক বুঝতে পারে কিনা। এছাড়া লেখার সময় সঠিক বৈজ্ঞানিক টার্ম ব্যবহার করাও জরুরি।
সম্পাদক:
সম্পাদকদের প্রধান লক্ষ্য হলো গবেষণাপত্রটি কি জার্নালের উদ্দেশ্য (aim) ও বিষয়ভিত্তিক সীমানার (scope) মধ্যে পড়ে? এটি কি জার্নালের পাঠকবৃন্দের কাছে প্রাসঙ্গিক এবং আকর্ষণীয় হবে? গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করলে সেটি জার্নালের সাইটেশন সংখ্যায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে?
রিভিউয়ার:
রিভিউয়াররা গভীরভাবে গবেষণার পদ্ধতি, তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ, ফলাফল এবং তত্ত্বগুলো মূল্যায়ন করেন। তাঁরা যাচাই করেন এই গবেষণাটি নতুন কোনো ধারণা বা তথ্য উপস্থাপন করেছে কিনা, গবেষণার মান ও গভীরতা যথাযথ কিনা এবং লেখক কি তার মূল হাইপোথিসিস বা গবেষণার লক্ষ্য সঠিকভাবে প্রমাণ করতে পেরেছেন। রিভিউয়াররা গবেষণাপত্রের যেকোনো ত্রুটি, অস্পষ্টতা বা অসম্পূর্ণতা নির্দেশ করে যাতে তা উন্নত করা যায়।
পাঠক:
অবশেষে যারা গবেষণাপত্র পড়বেন, তারা খুঁজে দেখেন এই গবেষণাটি তাদের জন্য কতটা তথ্যবহুল ও ব্যবহারযোগ্য। নতুন কোনো ধারণা বা প্রযুক্তি শেখার সুযোগ আছে কি না। তাদের কাজ বা গবেষণার ক্ষেত্রকে এগিয়ে নিতে এটি কতটা সহায়ক।
Leave a comment