তথ্যপ্রযুক্তি

বির্বতিত ওয়েব সার্চের ভিতর জেনেটিক এলগোরিদম

Share
Share

ইন্টারনেটের বড় বড় সার্চ ইঞ্জিন যেমন গুগল কিভাবে কাজ করে সেটা নিয়ে আমি আলোচনা করতে বসিনি। আমরা সাধারন মানুষের দৈনিক কাজে যেভাবে সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করি সেটাকে একটা নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতির সাথে বেঁধে ফেলতে এই লেখার উৎপত্তি। এতে করে ঐ বিষয়ে যে সমস্ত জানা ব্যাপার আছে সেগুলো খুব সহজে আমরা ব্যবহার করতে পারব।

বির্বতিত ওয়েব সার্চ বিষয়টা শুনতে যতো খটোমটো লাগছে আসলে ততটা খটোমটো নয়। আপনি হয়ত এমনিতেই এই পদ্ধতিতে সার্চ করে থাকেন। একটা লেখা লিখেছিলাম কিভাবে লিটারেচার সার্চ করতে হয় তার উপর। সেই পদ্ধতি যেকোনো ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বলে অনুবাদ করে দিচ্ছি এখানে:

“ধরুন আমাকে একটি সমস্যা সমাধান করতে দেয়া হল। আমি সমস্যাটা থেকে কতগুলো কিওর্য়াড বাছাই করি এবং সেটা দিয়ে গুগলে সার্চ করি। তাতে যে ফলাফলগুলো পাই সেখান থেকে আমি নতুন কিওর্য়াড বাছাই করি এবং সেগুলো দিই। এভাবে যতক্ষন না ভালো কিছু পাই ততক্ষন চালাতে থাকি আমার সার্চ।”

এই পদ্ধতি কিভাবে জেনেটিক এলগোরিদমের সাথে যায়? জেনেটিক এলগোরিদমের মূল কিন্তু আমাদের সভত্যা এবং প্রানী জাতির বির্বতনের সাথে জড়িয়ে আছে। আপনি হয়ত ‘survival of the fittest’ কথাটি শুনে থাকবেন। এর অর্থ হচ্ছে প্রকৃতি দূর্বল সন্তান পছন্দ করে না। তাই প্রতি জেনারেশনে দূর্বল প্রানীরা ঝরে পড়ে এবং উন্নততর প্রজাতি টিকে যেতে থাকে। এখন বলুন বির্বতিত ওয়েব সার্চের সাথে মিলটা ধরতে পেরেছেন?

জেনেটিক এলগোরিদম হচ্ছে একটি নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতি যেটা উপরের এই প্রক্রিয়াকে অনুকরন করে। উইকিপিডিয়ায় এর উপর সুন্দর দুটি আর্টিকেল আছে, নাম জেনেটিক এলগোরিদম এবং জেনেটিক প্রোগ্রামিং

এতক্ষনে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন আসলে এই ওয়েব সার্চ জেনেটিক এলগোরিদমেরই একটি প্রয়োগ। আপনাদের সুবিধার্তে এখানে আরেকবার বির্বতিত ওয়েব সার্চের পদ্ধতি লিখে দিচ্ছি:

১। আপনার বিষয়বস্তুর সাথে সর্ম্পকিত কিন্তু হয়ত এলোমেলো এমন কিছু কিওর্য়াড বেছে নিন২। এই কিওর্য়াডগুলোর জন্য সার্চ করুন

৩। যে সমস্ত ফলাফল পেয়েছেন তার মধ্যে থেকে ভালোগুলো বাছাই করুন। ভালো ফলাফল থেকে আবার কিছু কিওয়ার্ড বাছাই করুন।

৪। নতুন এই ভালো কিওয়ার্ড গুলো দিয়ে আবার সার্চ করুন যতক্ষন না ঠিক যা চাইছেন তাই পেয়ে যান

৫। যদি বেশ কিছুক্ষন ধরে খুঁজেও কিছু না পান তাহলে থামুন

জেনেটিক এলগোরিদমের মতো এর মধ্যেও কিছু সমস্যা আছে। আপনার শুরুর কিওয়ার্ড যদি ভালো না হয় তাহলে হয়ত কোনদিনই আপনার কাঙ্খিত জিনিস খুঁজে পাবেন না। আবার প্রতিবারে যদি কোন ফলাফলই আপনার পছন্দ না হয় তাহলে সারা জীবন খুঁজেও কিছু পাবেন না। উলটোটা হলে, অর্থাৎ সব ফলাফলই আপনার পছন্দ হলে শেষমেষ আপনার হাতে প্রচুর অপ্রয়োজনীয় তথ্য জমা হয়ে যাবে।

আপনি অবাক হয়ে যাবেন এই পদ্ধতি কত দ্রুত কাজ করতে পারে জেনে। আমার যতদুর মনে পড়ে আমাকে কখনো তিন বারের বেশী সার্চ করতে হয়নি একটা জিনিস খুঁজতে। প্রায়ই আমি যেটা করি সেটা হলো, দুতিনবার খুঁজে কিছু ফলাফল বেছে নিই। তারপর ভালো হোক মন্দ হোক আমি ওটা নিয়ে কাজ করতে থাকি। কিছুক্ষন কাজ করে সেটা সম্বন্ধ্যে ধারনা ভাল হলে, সমস্যাটা ভেঙ্গে উপসমস্যা থেকে নতুন কিছু কিওর্য়াড বাছাই করি এবং আবার সার্চ করা শুরু করি।

যদি আপনি উপরের সমস্যা গুলো সম্বন্ধ্যে অবহিত থাকেন তাহলে কিন্তু বির্বতিত ওয়েব সার্চ আপনার চলার পথের একটি ভাল পাথেয় হতে পারে।

এখন আপনি বলুন দেখি কিভাবে ওয়েব সার্চ করে থাকেন?

 

(ইংরেজী ব্লগে প্রকাশিত একটি লেখার অনুবাদ)

Share

3 Comments

  • আপনার bibliographic search engine এর উপর প্রবন্ধটি অনেক আগেই পড়েছিলাম। বেশ তথ্যমূলক। তবে আজকে লেখাটি বেশ ভাল লাগল। আমি নিজে IEEE এর সদস্য এবং কিছু কনফারেন্সের সাথে জড়িত তাই IEEE Xplore টা বেশী ব্যবহার করা হয়। তবে বেশি ব্যবহার করি গুগলের স্কলার। বেশ চমৎকার সাহায্য করে। অন্যান্যগুলিও মাঝে মধ্যে ব্যবহার করি। মাইক্রোসফটও live এর মত একটি লিটারেচার সার্চ ইঞ্চিন নিয়ে এনেছে। নামটি এখন মনে পড়ছেনা। সেটিও ভাল লেগেছিল।

    আমি গুগলই বেশী ব্যবহার করি। তবে কিওয়ার্ড সংযুক্ত করে ” ” চিহ্নগুলি বেশী ব্যবহার করি। তাছাড়া সাইট খুজবার জন্য site: দিয়েও খুজি। যেমন মনে করুন আমি একটি সফট খুজছি যা নিয়ে বেশী আলোচনা হয়েছে তখন এমন লিখি: site:digg.com “DVD” burner” । যেহেতু digg এ সবাই আলোচনা করতে ওস্তাদ তাই তাদের মতামতগুলি থেকে খুঁজে খুব সহজেই ভাল জিনিস পাওয়া যায়।

  • I appreciate your resourceful article. Mostly I use meta-search engines for my literature search. Often I find Coopernic search application is handy and user-friendly. Fine-tuning keywords combinations is fairly helpful to reach our target.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ফ্রি ইমেইল নিউজলেটারে সাবক্রাইব করে নিন। আমাদের নতুন লেখাগুলি পৌছে যাবে আপনার ইমেইল বক্সে।

বিভাগসমুহ

Related Articles
তথ্যপ্রযুক্তি

নতুন ফিচার গ্রহণের পূর্বে ব্যবসার লাভ ক্ষতির বিশ্লেষণ

এই প্রবন্ধে নতুন ফিচার ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যবসায়িক লাভ ও ক্ষতির বিশ্লেষণ করা...

তথ্যপ্রযুক্তিপণ্য পরিচিতিপ্রযুক্তি বিষয়ক খবর

ইন্টেল বনাম আর্ম: পরবর্তী প্রজন্মের পিসি কোন প্রোসেসরে চলবে?

গত কয়েক বছরে কম্পিউটার প্রসেসর মার্কেটে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে। ইন্টেল প্রসেসর দীর্ঘদিন...

তথ্যপ্রযুক্তি

ইন্টারনেটের আস্থা সংকট: তথ্যের যুগে বিভ্রান্তি

ইন্টারনেট যখন প্রথম যাত্রা শুরু করেছিল নব্বইয়ের দশকে, তখন আমাদের সবাইকে এক...

তথ্যপ্রযুক্তি

কোডিংয়ের গুরুত্ব: শিক্ষার্থী এবং পেশাগত উন্নয়নের জন্য ভবিষ্যতের সাফল্যের পথ

আজকের ডিজিটাল যুগে, কোডিং এমন একটি মৌলিক দক্ষতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, যা...

তথ্যপ্রযুক্তিনতুন প্রযুক্তি

হ্যাক্ অসম্ভব এমন ইন্টারনেট

কোনো অ্যান্টিভাইরাস সফ্টওয়্যার বা ভাইরাস স্ক্যান প্রোগ্রামিঙই একশো শতাংশ সুরক্ষা দিতে পারে...

Three Columns Layout

গবেষণার তথ্য ও বিজ্ঞানীদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে, বিজ্ঞানী.অর্গ নবীন প্রজন্মকে গবেষণার প্রতি অনুপ্রাণিত করে।

Contact

biggani.org❤️gmail.com

Biggani.org connects young audiences with researchers' stories and insights, cultivating a deep interest in scientific exploration.

বিজ্ঞানী অর্গ (biggani.org) বাংলাদেশি বিজ্ঞানীদের একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে গবেষণা ও বিজ্ঞান নিয়ে বাংলা ভাষায় তথ্য ও সাক্ষাৎকার প্রচার করে – নবীনদের গবেষণা ও উচ্চশিক্ষায় প্রেরণা দেয়া হয়।

যোগাযোগ:

biggani.org@জিমেইল.com

biggani.org, a community of Bangladeshi scientists, shares interviews and information about researchers and scientists in Bengali to inspire young people in research and higher education.