গবেষণায় হাতে খড়ি

জার্নাল প্রকাশনায় লেখকদের নৈতিকতা

Share
Share

লেখক- আজিজুল হক
সহকারী অধ্যাপক, ইয়েংনাম বিশ্ববিদ্যালয়।

গবেষণা ও প্রকাশনা একটি বিজ্ঞানভিত্তিক প্রক্রিয়া, যেখানে শুধুমাত্র বৈজ্ঞানিক তথ্যের সঠিকতা নয়, লেখকদের নৈতিকতা এবং পেশাদারিত্বও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যখন একজন লেখক তার গবেষণার ফলাফল একটি জার্নালে প্রকাশের জন্য জমা দেন, তখন তাঁকে শুধুমাত্র তার কাজের বৈজ্ঞানিক মান বজায় রাখতে হয় না, বরং নৈতিক দায়িত্বও পালন করতে হয়। গবেষণা ও প্রকাশনার ক্ষেত্রে নৈতিকতা গবেষণার মান এবং তার বিশ্বস্ততা নিশ্চিত করে।

লেখকদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক দিক:

১. প্ল্যাজিয়ারিজম থেকে বিরত থাকা: অন্য কারো কাজ বা ধারণাকে অনুমতি ছাড়া বা সঠিকভাবে উদ্ধৃত না করে ব্যবহার করা পেশাদারিত্বের পরিপন্থী। প্রতিটি লেখককে তাদের কাজের সব উৎস সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে, যাতে কোন ধরনের কপিরাইট লঙ্ঘন না ঘটে।

২. সত্যনিষ্ঠতা ও সঠিকতা: গবেষণার ফলাফল সঠিকভাবে উপস্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি। কোনো তথ্য বিকৃত বা মিথ্যা না হওয়া নিশ্চিত করতে হবে, যাতে গবেষণার মান ও জার্নালের বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় থাকে।

৩. সহ-লেখকদের সম্মান: সহ-লেখকদের অবদানকে যথাযথভাবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। যাদের কোনো গুরুত্বপূর্ণ অবদান নেই, তাদের নাম লেখক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা নৈতিকভাবে ভুল।

৪. স্বার্থের দ্বন্দ্ব: যদি লেখক বা গবেষকের ব্যক্তিগত বা আর্থিক স্বার্থ গবেষণার ফলাফলে প্রভাব ফেলতে পারে, তা অবশ্যই প্রকাশ করা উচিত। এটি গবেষণার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে এবং নৈতিকতা রক্ষা করে।

৫. বৈজ্ঞানিক স্বচ্ছতা: গবেষণার প্রক্রিয়া এবং ফলাফল সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই স্বচ্ছতা কেবল জার্নাল পাঠকদের জন্যই নয়, বৈজ্ঞানিক কমিউনিটির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

৬. সহ-লেখক হিসেবে অযোগ্য ব্যক্তির অন্তর্ভুক্তি পরিহার করা: যদি কোনো ব্যক্তি গবেষণায় কোনো গুরুত্বপূর্ণ অবদান না রাখেন, তাহলে তার নাম লেখক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত নয়। শুধুমাত্র সম্পর্ক বা পদমর্যাদার জন্য কোনো নাম অন্তর্ভুক্ত করা গবেষণার মানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

৭. টাকা বা সম্পর্কের জন্য লেখক না হওয়া: অর্থ বা ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তিকে লেখক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা গবেষণার মানের জন্য ক্ষতিকর। লেখক হওয়া উচিত কেবলমাত্র সেই ব্যক্তিকে, যিনি গবেষণার ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিকভাবে মূল্যবান অবদান রেখেছেন। ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে কাউকে লেখক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত নয়।

একটি সম্মানজনক এবং নৈতিক গবেষণা ও প্রকাশনা পরিবেশ তৈরি করতে প্রতিটি লেখককে এই নৈতিক নীতিগুলি মেনে চলা উচিত।


বিদ্র: ফেসবুক থেকে সংগ্রহীত:——–
https://www.facebook.com/share/p/15fa7ccFbC

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ফ্রি ইমেইল নিউজলেটারে সাবক্রাইব করে নিন। আমাদের নতুন লেখাগুলি পৌছে যাবে আপনার ইমেইল বক্সে।

বিভাগসমুহ

Related Articles
কলামগবেষণায় হাতে খড়ি

কলাম: google scholar citation — গবেষণায় জালিয়াতির নতুন পথ!

গবেষকরা কীভাবে ভুয়া প্রোফাইল এবং উদ্ধৃতি বিক্রির পরিকল্পনার মাধ্যমে গুগল স্কলারের উদ্ধৃতি...

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগগবেষণায় হাতে খড়ি

গবেষণাপত্রের গুণগত মান যাচাইয়ের AI টুল

একজন পেশাদার পর্যালোচকের মতো আপনার গবেষণাপত্র মূল্যায়ন করার জন্য একটি AI-চালিত টুল...

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগগবেষণায় হাতে খড়ি

গবেষণা পদ্ধতির হ্যান্ডবুক

নতুনদের জন্য গবেষণা পদ্ধতির একটি বিস্তৃত বাংলা নির্দেশিকা আবিষ্কার করুন। এই হ্যান্ডবুকটিতে...

গবেষণায় হাতে খড়ি

ইংরেজি ব্যাকরণের পাঁচটি সাধারণ ভুল কীভাবে এড়ানো যায়

একাডেমিক লেখালেখিতে ৫টি সাধারণ ইংরেজি ব্যাকরণ ভুল কীভাবে এড়ানো যায় তা শিখুন।...

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগগবেষণায় হাতে খড়ি

পিএইচডি বিক্রি হচ্ছে টাকায়, গবেষণার নামে চলছে প্রতারণা

বাংলাদেশে ভুয়া পিএইচডি ডিগ্রির উদ্বেগজনক উত্থান সম্পর্কে জানুন। জালিয়াতি কীভাবে প্রকৃত গবেষণা...

Three Columns Layout

গবেষণার তথ্য ও বিজ্ঞানীদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে, বিজ্ঞানী.অর্গ নবীন প্রজন্মকে গবেষণার প্রতি অনুপ্রাণিত করে।

Contact

biggani.org❤️gmail.com

Biggani.org connects young audiences with researchers' stories and insights, cultivating a deep interest in scientific exploration.

বিজ্ঞানী অর্গ (biggani.org) বাংলাদেশি বিজ্ঞানীদের একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে গবেষণা ও বিজ্ঞান নিয়ে বাংলা ভাষায় তথ্য ও সাক্ষাৎকার প্রচার করে – নবীনদের গবেষণা ও উচ্চশিক্ষায় প্রেরণা দেয়া হয়।

যোগাযোগ:

biggani.org@জিমেইল.com

biggani.org, a community of Bangladeshi scientists, shares interviews and information about researchers and scientists in Bengali to inspire young people in research and higher education.