বুদ্ধিমত্তা

বুদ্ধিমত্তা

বাংলা ভাষায় “মাথা মোটা” কথাটা বুদ্ধিহীন অর্থে ব্যবহৃত হলেও আমরা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিতে কথাটিকে প্রশংসা হিসাবে গ্রহণ করতে পারি কারণ মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যকলাপ ও বুদ্ধিমত্তার জন্য সত্যই লিপিড সমৃদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। মানুষের জীবনযাত্রার ধরন, চিন্তাভাবনার বিশেষত্ব, বা বয়সের ভিত্তিতে মস্তিষ্কের গঠন ক্রমাগত বদলালেও মস্তিষ্ক মোটামুটি ১০০ বিলিয়ন স্নায়ুকোষ বা “নিউরোন” এবং বেশ কিছু স্নায়ুকোষের সাহায্যকারী কোষ বা “গ্লিয়াল কোষ” নিয়ে তৈরি হয়। এই স্নায়ুকোষের সাধারণত তিনটি অংশ থাকে – গোলাকার অংশটি যেখানে নিউক্লিয়াস থাকে তাকে “কোষ দেহ” বা “সোমা” বলে, সরু ও লম্বা সুতোর মত অংশটি “অ্যাক্সন” নামে পরিচিত, এবং স্নায়ুকোষের প্রবর্ধিত ছোট ছোট ও অসংখ্য শাখায় বিভক্ত অংশগুলিকে আমরা “ডেনড্রাইট” নামে জানি। এত সংখ্যক স্নায়ুকোষের প্রতিটির কোষ দেহ যে পর্দা (প্লাজমা মেমব্রেন) দ্বারা ঢাকা থাকে, সেটি তৈরি হয় লিপিড-র দুটি স্তর নিয়ে। শুধু তাই নয়; “হোয়াইট ম্যাটার” অর্থাৎ যে স্নায়ুকোষগুলি দৈর্ঘ্যে বড় এবং যাদের মধ্য দিয়ে মস্তিষ্কের বেশ দূর দূর অংশে উদ্দীপনা পৌঁছে যায়, তাদের অ্যাক্সন যে মায়োলিন আবরণে ঢাকা থাকে তারও ৮০% -ই লিপিড। এই সকল তথ্য থেকেই বোঝা যায় যে আমদের সকলেরই মাথা কত মোটা!

আমরা কি করতে পারি তা নির্ভর করে আমরা নিজেদের সম্পর্কে জানতে কতটা আগ্রহী তার উপর; নিঃসন্দেহে আমরা আমাদের মস্তিষ্ক দ্বারাই পরিচালিত হই, তাই বলা যায় যে, মস্তিষ্ক কি করতে পারে তা নির্ভর করে মস্তিষ্ক তার নিজের সম্পর্কে জানতে কতটা আগ্রহী তার উপর। একটি মস্তিষ্ক তার নিজের সম্পর্কে জানতে কতটা আগ্রহী তার পরিমাপ হলো “স্মৃতি”(মেমোরি) ও “চিন্তা”(থট্)। আপনি শুধু নিজের সম্পর্কে নয়, অনেক ক্ষেত্রেই আপনি অন্য কোন ব্যক্তি সম্পর্কিত তথ্যও মনে রাখেন বা অন্য কোন ব্যক্তি সম্পর্কেও চিন্তা করেন, কিন্তু ভুললে চলবে না যে, আপনার মস্তিষ্ক নিজেকে আরো ভালোভাবে জানতে আগ্রহী বলেই সেই তথ্যগুলি তার স্মৃতিতে ধরে রাখে এবং নিজেকে জানতে প্রয়োজনমত স্মরণ করে বা নতুন কিছু চিন্তা করে। “স্মৃতি” ও “চিন্তা”- এই দুই স্তম্ভের উপরই গড়ে ওঠে “বুদ্ধিমত্তা”-র ইমারত, অর্থাৎ মস্তিষ্ক কি করতে পারে তার পরিমাপ হলো এই “বুদ্ধিমত্তা”।

মানুষের বুদ্ধিমত্তা মূলত দুই রকম – “যৌক্তিকতা”(রাশানালিটি), এবং “কল্পনা”(ইম্যাজিনেশন্) ও “স্বজ্ঞা”(ইন্টুয়েশন্) [স্বজ্ঞা হলো আদতে কোন নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে বা সমস্যার পরিপ্রেক্ষিতে কল্পনা করার ক্ষমতা]। স্নায়ুবিজ্ঞানের আলোকে যৌক্তিকতা কি তা নিশ্চিত করে বলা কিংবা কল্পনা বা স্বজ্ঞার নির্দিষ্ট একটা ব্যখ্যা প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হলেও সম্ভাব্য কোন ব্যখ্যা খাড়া করার চেষ্টা করা যেতেই পারে।

 

যৌক্তিকতা

আমাদের মস্তিষ্কের সেরিব্রাল কর্টেক্স কতগুলি লোবে (খণ্ড) বিভক্ত – “ফ্রন্টাল লোব”, “প্যারাইটাল লোব”, “অকিপিটাল লোব”, ও “টেম্পোরাল লোব”।

অকিপিটাল লোব-এ অবস্থিত “ভিসুয়াল কর্টেক্স”-এর কাছাকাছি রয়েছে একটি নিউরাল লুপ (নিউরাল লুপ হলো কতগুলি স্নায়ুকোষের সমষ্টি যারা কোন একটি নির্দিষ্ট কাজ করার জন্য একটি সিরিস বা ক্রমে সংযুক্ত থেকে উদ্দীপনাকে মস্তিষ্কের এক স্থান থেকে স্থানান্তরে নিয়ে যায়)  যা দৃষ্টি সম্বন্ধীয় তথ্যের (ভিসুয়াল ইনফরমেশন)  “শর্ট টার্ম মেমোরি”(স্বল্প মেয়াদী স্মৃতি)  হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও একটি ফোনোলজিকাল নিউরাল লুপ আছে যা ফ্রন্টাল লোব-এ অবস্থিত “ব্রকাস্ এরিয়া”-র সাথে সম্মিলিতভাবে শব্দ ও ভাষা সম্বন্ধীয় তথ্যের (অডিটারি ইনফরমেশন)  স্বল্প মেয়াদী স্মৃতি হিসাবে কাজ করে। এই প্রসঙ্গে “স্বল্প মেয়াদী স্মৃতি” কি তা সহজ করে বলে দিই। আপনি এখন যে বাক্যটা পড়ছেন তার অর্থ বুঝতে গেলে বাক্যের শেষের দিকের অংশটা পড়ার সময় বাক্যের শুরুটাও আপনাকে মনে রাখতে হবে আর আপনার মস্তিষ্কের স্বল্প মেয়াদী স্মৃতিই এই কাজটা করে দেয় – অর্থাৎ অল্প সময়ের (১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড অথবা কখনও ১ মিনিট) জন্য অল্প কিছু তথ্য এটি ধরে রাখে।

মস্তিষ্ক চোখের মাধ্যমে “দৃষ্টি সম্বন্ধীয় স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি”-তে (ভিসুয়াল শর্ট টার্ম মেমোরি) তথ্য সংগ্রহ করে তাকে দুটি উপাংশে বিশ্লেষণ করে – “স্থানিক দৃষ্টি সম্বন্ধীয় তথ্য”(স্পেসিয়াল ভিসুয়াল ইনফরমেশন) এবং “সময়গত দৃষ্টি সম্বন্ধীয় তথ্য”(টেম্পোরাল ভিসুয়াল ইনফরমেশন)। একইভাবে মস্তিষ্ক কানের মাধ্যমে “শব্দ ও ভাষা সম্বন্ধীয় স্বল্পমেয়াদী স্মৃতি”-তে (অডিটারি শর্ট টার্ম মেমোরি) যে তথ্য সংগ্রহ করে তাকে “স্থানিক শ্রবণ সংক্রান্ত তথ্য”(স্পেসিয়াল অডিটারি ইনফরমেশন) এবং “সময়গত শ্রবণ সম্পর্কিত তথ্য”(টেম্পোরাল অডিটারি ইনফরমেশন) -এ বিশ্লেষণ করে। এরপর দৃষ্টি সম্বন্ধীয় তথ্যের স্থানিক উপাংশগুলি মস্তিষ্কের “ভেন্ট্রাল ইনট্রাপ্যারাইটাল এরিয়া” ও ”ল্যাটারাল ইনট্রাপ্যারাইটাল এরিয়া”-তে এনকোডেড্ (সংকেতাক্ষরে লিখিত)  হয় ও তারপর সেরিব্রাল কর্টেক্স এর ফ্রন্টাল লোব এর সামনের দিকে অবস্থিত “প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স” এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী অংশটিতে (সেন্ট্রাল এক্সিকিউটিভ পার্ট)  আসে। আবার শব্দ ও ভাষা সম্বন্ধীয় তথ্যের স্থানিক উপাংশগুলি “প্রাইমারী অডিটারি কর্টেক্স” এবং “কডাল অডিটারি বেল্ট ও প্যারাবেল্ট”-এ এনকোডেড্ হয়ে প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স এর ঐ একই অংশে আসে। প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী অংশটি এই সকল দৃষ্টি, শব্দ ও ভাষা সম্বন্ধীয় এনকোডেড্ তথ্যকে সার্চ ক্রাইটেরিয়া হিসাবে ব্যবহার করে “ডিক্ল্যারেটিভ লং টার্ম মেমোরি” (ব্যক্ত দীর্ঘ মেয়াদী স্মৃতি)-তে এনকোডেড্ অবস্থায় সঞ্চিত বিভিন্ন অভিজ্ঞতা (এক্সপিরিয়েন্স), ঘটনা (ইভেন্ট), সত্য (ফ্যাক্ট), ধারণা (কনসেপ্ট)  সম্বন্ধীয় তথ্যগুলির মধ্য থেকে কিছু তথ্য উদ্ধার (রিট্রিভ) করে তাদেরকে ডিকোড্ (পাঠোদ্ধার করা)  করে – এই প্রক্রিয়াকেই মস্তিষ্কের “স্মরণ করা” বলা হয়ে থাকে। আর উদ্ধার করা এনকোডেড্ তথ্যগুলিকে ডিকোড্ করার পর তাদেরকে “প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স” এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী অংশটি যদি পুনরায় এনক্রিপ্ট করে, সেই প্রক্রিয়ার নামই “যুক্তির ভিত্তিতে নতুন কিছু ভাবা”[অর্থাৎ একটি মস্তিষ্কের যে কোন নতুন ভাবনা হলো আদতে ঐ মস্তিষ্কেরই কোন না কোন স্মৃতির এনক্রিপ্টেড্ রূপ]। “স্মরণ করা” ও “যুক্তির ভিত্তিতে নতুন কিছু ভাবা” – এই প্রক্রিয়াগুলিকে সম্পাদন করার ক্ষমতাই হলো “যৌক্তিকতা”।

এখন “এনকোডিং” ও “এনক্রিপ্শন” কি তা বোঝা আবশ্যক। তথ্যকে এনকোড্ করা হয় যাতে প্রায় সকল ভোক্তা (কন্সিউমার)  তাকে ডিকোড্ করে তার পাঠোদ্ধার করতে পারে কিন্তু তথ্যকে এনক্রিপ্ট করা হয় যাতে নির্দিষ্ট কিছু ভোক্তাই সেই তথ্যকে ডিক্রিপ্ট করে তা বুঝতে পারে। নির্দিষ্ট ভোক্তা ছাড়াও বাকি ভোক্তারা এনক্রিপ্টেড্ তথ্য বুঝে নিতেই পারে কিন্তু তা অনেক ক্ষেত্রেই  সময় সাপেক্ষ। “স্পেশাল থিয়োরি অফ রিলেটিভিটি” তত্ত্বের ইতিহাস ঘাঁটলে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইন্সটাইন এর মস্তিষ্কের যে চিন্তা-ভাবনা থেকে এই তত্ত্বের জন্ম হয়, তার এনক্রিপ্শন্ এতটাই শক্তিশালী ছিল যে তৎকালীন অধিকাংশ জ্ঞানী-গুণী বিজ্ঞানীর মস্তিষ্ক তার মর্ম বোঝেনি – ব্যতিক্রম ছিলেন বিজ্ঞানী প্লাঙ্ক। প্রায় সমগ্র বিজ্ঞানী মহলেই এই তত্ত্ব স্বীকৃতি পায় ঠিকই কিন্তু তা সম্ভব হতে বেশ কয়েক বছর সময় লেগে যায়।

“ব্যক্ত দীর্ঘ মেয়াদী স্মৃতি” কি তা আলোচনা করা বাকি রয়ে গেছে। আপনি তিন-চার বছর বা তারও আগে যে সিনেমাটি দেখেছেন তার বিষয়বস্তু অথবা কোথাও বেড়াতে গিয়ে আপনি কি কি করেছেন বা কি কি দেখেছেন তা স্মরণ করে গরগর করে বলে দিতে পারেন এই ব্যক্ত দীর্ঘ মেয়াদী স্মৃতির বদান্যতায়। মস্তিষ্ক যে তথ্যগুলোকে এই ব্যক্ত দীর্ঘ মেয়াদী স্মৃতিতে সঞ্চিত রাখবে বলে ঠিক করে; টেম্পোরাল লোব-র মধ্যভাগে অবস্থিত “হিপ্পোক্যাম্পাস”, “এন্টোরাইনাল কর্টেক্স”, ও “পেরিরাইনাল কর্টেক্স” অংশ তিনটি তথ্যগুলিকে এনকোড্ করে, এরপর তথ্যগুলির কনসলিডেশন্ (একত্রীকরণ) ও তারপর সেগুলির সঞ্চয় (স্টোরিং)  হয় সাধারণত “টেম্পোরাল কর্টেক্সে”।

 

স্বজ্ঞা ও কল্পনা

কিছু বিষয় আছে যা স্মরণ করতে হয় না বা স্মরণে রাখতে হয় না, স্মরণে রয়ে যায়। আমি সাইকেল চালানো শিখে তিন বছর অল্প-বিস্তর সাইকেল চালিয়েছিলাম। গত বারো বছর আমি সাইকেল ছুঁইনি পর্যন্ত কিন্তু আমি আত্মবিশ্বাসী যে সাইকেল চালাতে গিয়ে আমি মোটেই ভারসাম্য হারাবো না কারণ সাইকেল চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যসমূহ (কিংবা কোন বাদ্যযন্ত্র বাজানোর দক্ষতা)  মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবেই তার প্রোসিডিউরাল লং টার্ম মেমোরি (পদ্ধতিগত দীর্ঘ মেয়াদী স্মৃতি)-তে জমা করে রাখে। তবে এমন অনেক তথ্য আছে যারা ব্যক্ত দীর্ঘ মেয়াদী স্মৃতির জন্য উপযুক্ত হলেও সেই তথ্যগুলির দৈনন্দিন জীবনে খুব বেশী ব্যবহারের জন্য মস্তিষ্ককে প্রায়ই তথ্যগুলিকে চট্-জল্দি স্মরণ করতে হয় কিংবা কিছু বিষয়ে আমাদের পছন্দ বা বিশেষ অনুভূতির কারণে মস্তিষ্ক সেই সংক্রান্ত তথ্যগুলিকে নিজ স্মৃতিতে চিরস্থায়ী করতে চায়। এই সকল ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত দীর্ঘ মেয়াদী স্মৃতিই ভরসা। “সেরিবেলাম”, “পুটামেন”, “কডেট নিউক্লিয়াস”, ও “মোটর কর্টেক্স” – প্রধানত এই চারটি অংশ নিয়ে পদ্ধতিগত দীর্ঘ মেয়াদী স্মৃতি তৈরি হয় যেখানে তথ্যগুলির এনকোডিং ও স্টোরিং উভয়ই সম্পাদিত হয়।

শব্দ ও ভাষা সম্বন্ধীয় তথ্যের সময়গত  উপাংশগুলি প্রথমে “সুপিরিয়র টেম্পোরাল সালকাস”-এ সময়ের ভিত্তিতে ও তারপর “অ্যাসোসিয়েটিভ অডিটারি কর্টেক্স”-এ কম্পাঙ্কের ভিত্তিতে এনকোডেড্ হওয়ার পর “ভিসুয়াল কর্টেক্স”-এ আসে। আবার “সুপিরিয়র টেম্পোরাল সালকাস”-র পলিসেন্সরি অংশটি দৃষ্টি সম্বন্ধীয় তথ্যের সময়গত  উপাংশগুলিকে এনকোড্ করে ভিসুয়াল কর্টেক্স-এ পাঠায়। ভিসুয়াল কর্টেক্স এই সকল এনকোডেড্ তথ্যকে সার্চ ক্রাইটেরিয়া হিসাবে ব্যবহার করে পদ্ধতিগত দীর্ঘ মেয়াদী স্মৃতিতে এনকোডেড্ অবস্থায় সঞ্চিত বিভিন্ন অর্জিত দক্ষতা (স্কিল) ও করণীয় কাজ (টাস্ক)  সম্বন্ধীয় তথ্যগুলির মধ্য থেকে কিছু তথ্য রিট্রিভ করে তাদেরকে ডিকোড্ করে – মস্তিষ্কের এই কার্য সম্পাদন করার ক্ষমতাই “স্বজ্ঞা”(ইন্টিউয়েশন্)-র পরিচায়ক। আর রিট্রিভ করা এই এনকোডেড্ তথ্যগুলিকে ডিকোড্ করার পর তাদেরকে কাজে লাগানোর জন্য ভিসুয়াল কর্টেক্স যদি পুনরায় তাদেরকে এনক্রিপ্ট করতে পারে, মস্তিষ্কের সেই ক্ষমতাকেই “কল্পনা”(ইম্যাজিনেশন্)  বলে।

 

উপসংহার

মস্তিষ্ক তার দীর্ঘ মেয়াদী স্মৃতির নির্দিষ্ট কোন তথ্য যতবারই স্মরণ করুক না কেন সর্বদা নির্দিষ্ট কিছু সক্রিয় স্নায়ুকোষই উদ্দীপিত হয়, আবার স্বজ্ঞা ভিত্তিক কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় মস্তিষ্কের কিছু সক্রিয় স্নায়ুকোষই উদ্দীপিত হয়ে ওঠে কারণ এইসকল ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে শুধুই “ডিকোডিং” প্রক্রিয়া চলে। কিন্তু স্বল্প মেয়াদী স্মৃতির কোন তথ্য স্মরণ করার সময় কিংবা কল্পনা করার সময় অথবা যুক্তির ভিত্তিতে নতুন কিছু ভাবার সময় প্রত্যেক “ডিকোডিং” প্রক্রিয়ার পর “এনক্রিপ্শন্” প্রক্রিয়াও সম্পাদিত হয় বলে কিছু সক্রিয় স্নায়ুকোষের উদ্দীপিত হওয়া ছাড়াও কিছু নিষ্ক্রিয় স্নায়ুকোষ সক্রিয় হয়ে উদ্দীপিত হয়ে ওঠে। এইভাবে মস্তিষ্কের “ডিকোডিং” ও “এনক্রিপ্শন্” এই দুই রকম চিন্তা প্রক্রিয়া স্মৃতিকে কাজে লাগিয়ে বুদ্ধিমত্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটায় !

যাই হোক্, “বুদ্ধিমত্তা” সম্পর্কে আপনার বুদ্ধি কি বলে?

 

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে আরো নতুন নতুন সংবাদ জানতে সাবস্ক্রাইব করুন।

Diganta Paul
Latest posts by Diganta Paul (see all)

About Diganta Paul

জন্ম: ১৯৮৯ সালে ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হাওড়া জেলায়। শিক্ষা: প্রাথমিক, মাধ্যমিক, ও উচ্চ-মাধ্যমিক শিক্ষা হাওড়া জিলা স্কুলে। এরপর কলকাতার "সেইন্ট থমাস্ কলেজ অফ এঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনলজি" কলেজ থেকে বৈদ্যুতিক কারিগরিবিদ্যা নিয়ে প্রযুক্তিতে স্নাতক (B.Tech. in Electrical Engineering)। পেশা: তথ্য প্রযুক্তি পেশাদার (IT Professional)। নেশা: বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা নিয়ে পড়াশোনা ও চিন্তাভাবনা। এছাড়াও বিজ্ঞান প্রবন্ধ, বিজ্ঞান নিবন্ধ, কল্পবিজ্ঞান ভিত্তিক গল্প, কল্পবিজ্ঞান কবিতা, গাণিতিক কল্পকাহিনী, বিজ্ঞান নাটক, ও বিজ্ঞান কবিতা লেখা। যোগাযোগ: digantapaul5@gmail.com

Check Also

স্পেস-টাইম কন্টিনিউয়াম

কখনও ভেবে দেখেছেন যে কেন মানুষের বাস্তব চেতনা শুধু দৈর্ঘ্য বা দূরত্ব মাত্রা ও সময় মাত্রার বেড়াজালে আবদ্ধ ? কেন আমাদের উপলব্ধি “স্পেস-টাইম কন্টিনিউয়াম” প্রেক্ষাপট ছেড়ে বেরোতে পারে না ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে পদার্থবিদ্যা নিজেই হোঁচট খায় ! তবে পদার্থবিদ্যার প্রসূতি যা অর্থাৎ মনুষ্য-মস্তিষ্ক, তার গভীরে প্রবেশ করলে এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যেতেও পারে !

ফেসবুক কমেন্ট


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।