নিউজ ডেস্ক, বিজ্ঞানী অর্গ
বয়সকে থামিয়ে দেওয়ার স্বপ্নে কোটি কোটি ডলার খরচ করে অবশেষে হতাশ হয়েছেন প্রযুক্তি দুনিয়ার বিত্তশালী বিনিয়োগকারী ব্রায়ান জনসন। পাঁচ বছর ধরে চালানো একটি পরীক্ষা শেষে তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন, যেই ওষুধ বয়স থামাবে বলে ভেবেছিলেন, সেটাই উল্টো করে দিয়েছে তার শরীরে বয়সের গতি।
এই ওষুধটির নাম রাপামাইসিন (Rapamycin)। এটি ইঁদুরের ওপর চালানো গবেষণায় আয়ু বাড়াতে সক্ষম হলেও মানুষের শরীরে এর কার্যকারিতা নিয়ে এখন নতুন করে প্রশ্ন উঠছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে ব্রায়ান জনসন জানিয়েছেন, রাপামাইসিন তার বিপাক ক্রিয়া, ইমিউন ফাংশন এবং এপিজেনেটিক বয়স বৃদ্ধির চিহ্নগুলোর উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তাই তিনি এই ওষুধ ব্যবহার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জনসনের বয়স প্রতিরোধমূলক কর্মকাণ্ডগুলো খুবই চরম পর্যায়ের। তিনি প্রতিদিন ৫০টির বেশি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করেন, এমনকি নিজের ছেলের রক্ত নিয়েও প্লাজমা ট্রান্সফিউশন করেছেন শরীরের বয়স কমানোর আশায়। এ নিয়ে নেটফ্লিক্সে তৈরি হয়েছে একটি ডকুমেন্টারি — “Don’t Die: The Man Who Wants to Live Forever” — যেখানে জনসনের জীবনযাত্রা ও গবেষণামূলক প্রচেষ্টা তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবছর তিনি প্রায় ২০ লাখ ডলার ব্যয় করেন এই “অমরত্বের খোঁজে”। তবে রাপামাইসিন নিয়ে তার অভিজ্ঞতা এখন নতুনভাবে চিন্তা করার কারণ তৈরি করছে বৈজ্ঞানিকদের জন্য — বিশেষ করে যারা দীর্ঘজীবন ও বার্ধক্য প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করছেন।
এই ঘটনায় একটি বড় প্রশ্ন সামনে এসেছে:
ইঁদুরে কার্যকর যে উপাদান, তা কি মানুষের শরীরেও একইভাবে কাজ করে?
ব্রায়ান জনসনের এই ব্যর্থতা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, বিজ্ঞান কখনোই সরলরৈখিক নয়। নতুন কিছু আবিষ্কারের পথে ভুল, ব্যর্থতা ও আত্মসমালোচনাও গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। জনসনের মতো প্রযুক্তি দানবদের এই অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতের গবেষকদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হতে পারে।
বিস্তারিত পড়ুন:
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/articles/PMC6814615
আপনি কি মনে করেন ভবিষ্যতে সত্যিকারের বার্ধক্য প্রতিরোধ সম্ভব হবে? মতামত জানান আমাদের ফেসবুক পেজে।
Leave a comment