বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি ও আউটসোর্সিং নিয়ে অনেক উচ্চবাচ্য করা হলেও প্রকৃত অবস্থাটা অনেকটাই বেহাল অবস্থা। আমরা অনেক আশার কথা বলি, অনেক টাকা উপার্জনের কথা বলি, কিন্তু বাস্তবতাটা খুবই করুন। অন্তত যারা এই সেক্টরে কাজ করেন তারা জানেন। আমাদের অনেক সমস্যা থাকলেও আমরা মূল সমস্যা হল, আমরা গুণগত মানের প্রযুক্তিবিদ তৈরি করতে পারছিনা।
আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে যে প্রযুক্তিগুলি শেখান হয় তা খুবই পুরান। সেটা রপ্ত করে যখন আমরা প্রযুক্তির সেক্টরে কাজ করতে নামছি, তখন শেখা জিনিসগুলি কোনই কাজে লাগছেনা। তা সমাধান করার জন্য প্রযুক্তিবিদদের স্বশিক্ষিত হতে হচ্ছে। যারা দ্রুত নিজে শেখার কৌশল জানেন তারা এগিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু যারা ভালো ট্রেইনার না পেলে শিখতে পারেননা তারা পিছিয়ে পড়ছেন।
মানছি আজকাল অনলাইনেই অনেক শেখা যায়, তারপরেও আপনার পাশে যদি একজন বস থাকেন – যিনি সত্যিই প্রযুক্তিটি বোঝেন, সমস্যা সমাধান করতে জানেন, তাহলে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যায়। আমরা আউটসোর্সের কাজে যে সমস্ত কাজ নিয়ে আনছি তা খুবই নিচু কাজ। নতুন বিষয় নিয়ে দক্ষ প্রযুক্তিবিদ আমরা তৈরি করতে পারছিনা। নীল সাগরের থেকে লাল সাগরেই আমরা সাতার কাটতে পছন্দ করি (এটি বিজনেস স্ট্রাটেজি এর একটি মডেল)। যে জায়গাটিতে অনেক কম্পিটিশন (লাল সাগর) সেই ক্ষেত্রগুলো আমরা ফোকাস করি। যেখানে কম কম্পিটিশন কিন্তু নিজেকে তৈরি করতে হবে (নীল সাগর) সেইখানে আমরা কম যাই। এর ফলে আমাদের কম্পিটিশন করতে হয় আরো কম মূল্য দিয়ে।কম করতে করতে এমন অবস্থায় পৌছায় যে আমাদের লস ছাড়া আর লাভ হয়না। সবথেকে ভালো উদারহণ হল গার্মেন্টস সেক্টর। এবং দু:খজনক হলেও আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি অনেকটা সেই একই স্ট্রাটেজি নিয়ে এগুচ্ছে।
নর্থ-সাউথে যখন শিক্ষকতা করতাম তখন একবার কিছু ছাত্র-ছাত্রীদের দিয়ে একটি হোম ওয়ার্ক করে দেখেছিলাম যে টপ প্রযুক্তিগুলি আমাদের দেশে প্রয়োগ হতে প্রায় ৮ (আট) বছর দেরী করে। এখন হয়তো এই গ্যাপটি অনেকখানি কমে এসেছে, তবে আছে।
এই দুর্দশা থেকে উত্তরণের জন্য আমার সাজেশন হল, আমাদের নতুন প্রযুক্তিগুলি দ্রুত শিখে সেই বিষয়ের কাজগুলি নিতে হবে, সেই প্রযুক্তি দিয়ে পণ্য আমাদের তৈরি করতে হবে।
আরেকটু বিস্তারিত বলি। সামনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, বিটকয়েন, ডাটা সায়েন্স জাতীয় নতুন প্রযুক্তি জানা প্রযুক্তিবিদদের প্রচুর চাহিদা থাকবে। আমাদের দ্রুত এই নতুন প্রযুক্তি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলামে যুক্ত করে প্রযু্ক্তিবিদদের তৈরি করতে হবে। আর কিছু না হলেও আমরা এই বিষয়ে অনেক ওপেনসোর্স প্রোজেক্ট চলছে, যেখানে আমরা যোগ দিয়ে তাদের সাথে কাজ করে নিজে প্রযুক্তি জ্ঞানকে আরো ধারালো করে নতুন নতুন কাজ দেশেই নিয়ে আনতে পারি। ছোট খাট লেভেলে অনেকেই এইবিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা মানছি। কিন্তু আরো ব্যাপকভাবে আমাদের কাজ করতে হবে। বিশ্বের সামনের কাতারে থাকতে হবে আমাদের দক্ষ মানবসম্পদ নিয়ে।
এমাজন তাদের ক্লাউডে এই প্রযুক্তির উপর বেশ কিছু প্লাটফর্ম তৈরি করছে। সেইগুলিও শিখতে পারেন
- https://aws.amazon.com/events/aws-innovate/machine-learning/
- https://aws.amazon.com/tensorflow
- https://aws.amazon.com/machine-learning/ai-services/
শিখতে পারেন মাইক্রোসফট এর প্লাটফর্ম
- https://azure.microsoft.com/en-us/overview/ai-platform/
- https://www.microsoft.com/en-us/ai?activetab=pivot1%3aprimaryr5
- https://techcommunity.microsoft.com/t5/ai-platform/ct-p/AIPlatform
- https://aischool.microsoft.com/en-us/home
- https://azure.microsoft.com/en-us/services/machine-learning/
- https://docs.microsoft.com/en-us/azure/machine-learning/
শিখতে পারেন গুগলের প্লাটফর্ম
- https://cloud.google.com/solutions/ai/
- https://cloud.google.com/ai-platform/
শিখতে পারেন ওপেনসোর্স মেশিন লার্ণিং টেনশনফ্লো: https://www.tensorflow.org/
নিম্নের বেশ কিছু ওপেনসোর্স প্রোজেক্ট রয়েছে, যেগুলিতে আপনি যোগ দিতে পারে।
- https://github.com/corda/corda
- https://github.com/paritytech/polkadot
- Hyperledger: ওপেনসোর্স ভিত্তিক এন্টারপ্রাইজ ব্লকচেইন: https://www.hyperledger.org/projects/fabric
- https://www.goquorum.com/
- https://www.openchain.org/
এছাড়া নিম্নের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের প্লাটফর্ম বেশ ভালো করছে। সেইগুলো শিখতে পারেন।
- https://kaleido.io/product/
- https://www.hyperledger.org/
যদি আপনি নতুন প্রযুক্তিগুলোর আরো কোন রেফারেন্স জানেন তবে কমেন্টে সংযুক্ত করুন।
ড. মশিউর রহমান
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে আরো নতুন নতুন সংবাদ জানতে সাবস্ক্রাইব করুন।
[mc4wp_form id=”3448″]
Very good article tnx