কলামগবেষণায় হাতে খড়ি

কলাম: বিদেশি স্কলারশিপ বন্ধের পথে: আমাদের অসচেতনতা নাকি ইচ্ছাকৃত ভুল?

Share
Share

অতিথি লেখক:
প্রফেসর ড. মোহা: ইয়ামিন হোসেন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পাওয়া প্রতিটি শিক্ষার্থীর স্বপ্ন এবং ভবিষ্যৎ উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এটি শুধু শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত উন্নয়ন নয়, বরং পুরো জাতির জন্যও এক গৌরবের বিষয়। তবে, স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নথি যেমন Statement of Purpose (SoP), Research Proposal, এবং Cover Letter—এসব আবেদনকারী নিজে থেকে লেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই ডকুমেন্টগুলো শিক্ষার্থীর যোগ্যতা, উদ্দেশ্য, এবং গবেষণার প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে।

তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, কিছু শিক্ষার্থী এজেন্সির মাধ্যমে এসব ডকুমেন্ট তৈরি করে। এটি মূলত নৈতিকতার বিরোধী এবং একটি বড় অপরাধ। এটি পরীক্ষার হলে নকল করে পাস করার মতোই জঘন্য একটি কাজ। এভাবে স্কলারশিপ পেয়ে গেলে সেই শিক্ষার্থীর ভবিষ্যতের প্রতিটি অর্জন এবং ইনকাম প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। কারণ, প্রকৃতপক্ষে সে তার যোগ্যতায় এই সুযোগ অর্জন করেনি। এটি এমন একটি পরিস্থিতি যেখানে অন্য একজন প্রকৃত যোগ্য প্রার্থী তার সঠিক জায়গা থেকে বঞ্চিত হয়।

এভাবে এজেন্সি থেকে তৈরি করা ডকুমেন্ট দিয়ে স্কলারশিপ পাওয়া মানে নৈতিকতা লঙ্ঘন করা এবং অন্যের প্রাপ্য রিজিক ছিনিয়ে নেওয়া। এটি আখিরাতে জবাবদিহির জন্য ভয়াবহ কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

এর চেয়েও ভয়াবহ হলো, বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যখন জানতে পারে যে বাংলাদেশের কিছু শিক্ষার্থী এই ধরনের অযোগ্য উপায়ে স্কলারশিপ গ্রহণ করছে, তখন তারা পুরো জাতির উপর আস্থা হারায়। এর ফলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ প্রাপ্তির সুযোগ সংকুচিত হতে পারে। এমনকি বাংলাদেশকে হয়তো কিছু স্কলারশিপ লিস্ট থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে। এভাবে অল্প কিছু মানুষের অজ্ঞতা ও লোভের কারণে পুরো জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

এজন্য প্রয়োজন, এসব এজেন্সি-নির্ভর প্রক্রিয়া বন্ধ করা এবং শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে প্রস্তুত করা। শিক্ষার্থীদের SoP, Research Proposal, এবং Cover Letter লেখার জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো গবেষণা, লেখালেখি, এবং আবেদন প্রস্তুতির জন্য ওয়ার্কশপ এবং ট্রেনিং প্রোগ্রাম আয়োজন করতে পারে। এতে শিক্ষার্থীরা নিজের যোগ্যতায় উন্নতি করতে পারবে এবং নৈতিকতার ভিত্তিতে তাদের সুযোগ অর্জন করতে পারবে।

এভাবেই শিক্ষার্থীরা প্রকৃতভাবে দক্ষতা অর্জন করবে, গবেষণায় নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আনবে এবং জাতি উন্নতির পথে এগিয়ে যাবে। এমন একটি সৎ এবং যোগ্য প্রজন্মই দেশের সুনাম বৃদ্ধি করবে, ইনশাআল্লাহ।


বিদ্র: ফেসবুক থেকে সংগ্রহীত:——–

https://www.facebook.com/share/p/15fa7ccFbC

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ফ্রি ইমেইল নিউজলেটারে সাবক্রাইব করে নিন। আমাদের নতুন লেখাগুলি পৌছে যাবে আপনার ইমেইল বক্সে।

বিভাগসমুহ

গবেষণার তথ্য ও বিজ্ঞানীদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে, বিজ্ঞানী.অর্গ নবীন প্রজন্মকে গবেষণার প্রতি অনুপ্রাণিত করে।

Contact:

biggani.org@জিমেইল.com

সম্পাদক: ড. মশিউর রহমান

Biggani.org connects young audiences with researchers' stories and insights, cultivating a deep interest in scientific exploration.

Copyright 2024 biggani.org