গবেষণায় হাতে খড়ি

IELTS পরীক্ষার প্রতি অনীহা এবং পিছিয়ে থাকায় বাংলাদেশের ফেলোদের উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপের অন্তরায়!

Share
Share

প্রফেসর ড মোহাঃ ইয়ামিন হোসেন

ফিশারীজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

বাংলাদেশের ফেলোদের মধ্যে আইইএলটিএস (IELTS) পরীক্ষার প্রতি অনীহা এবং পিছিয়ে থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা তাদের উচ্চশিক্ষা ও স্কলারশিপের সুযোগের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এই সমস্যার কিছু কারণ এবং এর ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি তুলে ধরা যেতে পারে।

১. প্রস্তুতির অভাব ও অনীহা:

IELTS একটি আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষা যা ইংরেজি ভাষার দক্ষতা যাচাই করে। এমবকি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অর্জনের প্রতি যথেষ্ট মনোযোগ দেয় না। তাদের মধ্যে ইংরেজির প্রতি ভীতি বা দক্ষতার ঘাটতির কারণে IELTS পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার অনীহা দেখা যায়। এই পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সময়, পরিশ্রম এবং অর্থের প্রয়োজন, যা অনেক শিক্ষার্থী এড়াতে চান।

২. সচেতনতার অভাব:

IELTS পরীক্ষার গুরুত্ব এবং এর মাধ্যমে কীভাবে আন্তর্জাতিক স্কলারশিপ বা উচ্চশিক্ষার দরজা খোলা যায়, এ সম্পর্কে সচেতনতার অভাব রয়েছে। অনেক শিক্ষার্থীই জানেন না যে, IELTS সার্টিফিকেট বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি এবং স্কলারশিপের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। এই কারণেও তারা আগ্রহ প্রকাশ করতে পারে না।

৩. আর্থিক সীমাবদ্ধতা:

IELTS পরীক্ষার ফি এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় কোচিংয়ের খরচ অনেক শিক্ষার্থীর জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী আর্থিকভাবে স্বচ্ছল না হওয়ায় তারা IELTS পরীক্ষা দেওয়ার ঝুঁকি নিতে চান না। পরীক্ষার ব্যর্থতা হলে ফি ফিরিয়ে পাওয়া যায় না, যা শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

৪. উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহের অভাব:

এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীই দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষার প্রতি খুব বেশি আগ্রহ দেখায় না। তাদের লক্ষ্য থাকে স্থানীয় চাকরি বা সরকারি কর্মে প্রবেশ। ফলে IELTS প্রস্তুতি এবং পরীক্ষার বিষয়টি তাদের কাছে অপ্রয়োজনীয় মনে হয়। অনেক সময় পরিবার থেকেও উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ যাওয়ার প্রতি তেমন উৎসাহ দেওয়া হয় না, যা এই অনীহাকে বাড়িয়ে দেয়।

৫. ভাষার প্রতি মানসিক বাধা:

অনেক শিক্ষার্থীর মধ্যে ইংরেজি ভাষার প্রতি এক ধরনের মানসিক বাধা রয়েছে। তারা মনে করেন যে IELTS পরীক্ষা দেওয়া খুব কঠিন এবং সফল হওয়া প্রায় অসম্ভব। এই ধারণা থেকেই তারা পরীক্ষার জন্য আগ্রহী হয় না।

৬. সুযোগ হারানো:

IELTS পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করার ফলে অনেক শিক্ষার্থী বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। স্কলারশিপের সুযোগগুলোও হাতছাড়া হয়, যা তাদের উচ্চশিক্ষার পথ সংকুচিত করে। ফলে তাদের শিক্ষাজীবন দেশীয় পরিসরে সীমাবদ্ধ থেকে যায় এবং আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ও গবেষণায় অংশ নেওয়ার সুযোগ কমে যায়।

৭. সমাধানের উপায়:

এই সমস্যার সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও সহযোগিতা প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে IELTS পরীক্ষার গুরুত্ব বোঝাতে বিশেষ কর্মশালা আয়োজন করা উচিত। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শিক্ষকদের উচিত IELTS প্রস্তুতির জন্য সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া। এছাড়া অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ বা বিশেষ তহবিল গঠন করা যেতে পারে, যা তাদের জন্য সাহায্যকারী হতে পারে।

এই সমস্যার সমাধান করতে পারলে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ গ্রহণ করে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা অর্জন করতে পারবে, যা তাদের ব্যক্তিগত উন্নতির পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বিদ্র: ফেসবুক থেকে সংগ্রহীত———–https://www.facebook.com/share/p/1Dy35jWaHF/

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ফ্রি ইমেইল নিউজলেটারে সাবক্রাইব করে নিন। আমাদের নতুন লেখাগুলি পৌছে যাবে আপনার ইমেইল বক্সে।

বিভাগসমুহ

গবেষণার তথ্য ও বিজ্ঞানীদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে, বিজ্ঞানী.অর্গ নবীন প্রজন্মকে গবেষণার প্রতি অনুপ্রাণিত করে।

Contact:

biggani.org@জিমেইল.com

সম্পাদক: ড. মশিউর রহমান

Biggani.org connects young audiences with researchers' stories and insights, cultivating a deep interest in scientific exploration.

Copyright 2024 biggani.org