বিজ্ঞানী ডট অর্গে আমরা Z-Gen প্রজন্মদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছি। সেই সিরিজে আমরা এইবার সাক্ষাৎকার নিয়েছি দীপংকর সরকার দীপ্ত এর। তিনি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির এনএসইউ অপটিক্স ল্যাবে প্রফেসর ড. মাহ্দী রহমান চৌধুরী এর রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে কর্মরত আছেন।
আপনার গবেষনার বিষয় সমন্ধে আমাদের বলুন
আমার গবেষণার ক্ষেত্র মূলত মেশিন লার্নিং ইন বায়োমেডিকেল সেক্টর। সুনির্দিষ্ট করে বলতে গেলে আমি কম্পিউটার ভিশন এবং মেডিকেল ইমেজ এনালাইসিস নিয়ে কাজ করি। আমার গবেষণার লক্ষ্য মূলত ২ টি।
১) কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার বদৌলতে কম্পিউটার ভিশন সেক্টরে যেই অগ্রগতি সাধিত হয়েছে, সেই অগ্রগতিকে কিভাবে মেডিকেল ইমেজ (এক্স-রে, এমআরআই, আলট্রাসাউন্ড) এনালাইসিসে কাজে লাগানো যায়।
২) মেডিকেল ইমেজ সম্পর্কিত অসংখ্য সমস্যার সমাধান করার জন্য কিভাবে কম্পিউটার ভিশন ক্ষেত্রটির পরিবর্ধন ও পরিমার্জন করা যায়।
সামগ্রিকভাবে আমার লক্ষ্য কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা তথা কম্পিউটার ভিশন ও মেডিকেল ইমেজ এনালাইসিস ক্ষেত্রের উন্নতি সাধন।
আপনার গবেষনার কাজগুলি কিভাবে আমাদের উপকৃত করছে?
রোগ নির্ণয়, নিরাময় এবং রোগ সম্পর্কিত পূর্বাভাস পেতে বিভিন্ন ধরণের প্যাথলজিক্যাল টেস্টের বিকল্প নেই। এর মধ্যে বিভিন্ন ইমেজিং টেকনোলজি ব্যবহার করে অনেক রোগের নির্ণয় ও নিরাময় করা হয়। এখন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে এসব ইমেজিং টেকনোলজি থেকে সংগ্রহকৃত ডাটা এবং রোগের নির্ণয় ও নিরাময়ের জন্য এই ডাটার যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করা একটি ওপেন চ্যালেঞ্জ। আমার গবেষণার মাধ্যমে, আমি এই চ্যালেঞ্জের সমাধান খোঁজার চেষ্টা করি। আমার এই গবেষণালব্ধ ফলাফল থেকে সরাসরি রোগ নির্ণয় ও নিরাময়ে কাজে লাগে এমন ডিভাইসের সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট উপকৃত হবে। অন্য কথায়, উন্নত, উন্নয়নশীল বা অনুন্নত যেকোনো দেশেরই স্বাস্থ্যখাতে এক্সপার্ট মানুষের ব্যবহারকে সীমিত করে রোগ নির্ণয় ও নিরাময় করার পদ্ধতিকে সাধারণ মানুষের জন্য সুলভ ও সহজলভ্য করার ক্ষেত্রে আমার গবেষণার কাজগুলি ভূমিকা রাখবে।
গবেষনা কাজের কোন অভিজ্ঞতা কি আমাদের সাথে শেয়ার করবেন?
আমার একটি গবেষণা কাজের বিষয় ছিলো ক্যান্সার ডায়াগনসিস ডাটার ইমব্যালেন্স নিয়ে কাজ করা। মূলত রিয়েল লাইফ ক্যান্সার ডাটাসেট এর ইনফেক্টেড এন্ড হেলথি সেল এর সংখ্যায় যেই তীব্র বৈষম্য থাকে, তাকে প্রপারলি এড্রেস করে এমন আলগরিদমিক টেকনিক খুঁজে বের করাই ছিলো আমার কাজের উদ্দেশ্য। আমরা একাধিক ক্যান্সার ডাটার উপর গবেষণা করে দেখাতে সমর্থ হই যে তীব্র বৈষম্যযুক্ত ডাটার ক্ষেত্রে একটি বিশেষ টেকনিক অপেক্ষাকৃত বেশি কার্যকরী।
একজন বিজ্ঞানীর কি কি গুণ থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন?
একজন বিজ্ঞানীর প্রথমত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি অপরিসীম আগ্রহ থাকা প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, আগ্রহের কেন্দ্র বিন্দুতে যেই বিষয়টি রয়েছে তার পিছনে সময় ও শ্রম ব্যায় করার মতো মানসিকতা ও অধ্যবসায় থাকা প্রয়োজন। তৃতীয়ত, একজন বিজ্ঞানীর নীতিগত মানদণ্ড (এথিকাল স্ট্যান্ডার্ড) অনেক উচ্চ পর্যায়ের হবার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি। কারণ শেষোক্তটি ছাড়া মানুষের কল্যাণে বিজ্ঞান সাধনা সম্ভব না।
বাংলাদেশের তরুণ শিক্ষার্থী যারা বিজ্ঞানে কাজ করতে চায় – তাদের জন্য আপনার কোন ম্যাসেজ কিংবা বার্তা কি?
আমি জাপানীজ একটি অ্যানিমেশনে এই উপদেশটি শুনেছিলাম “গাছ রোপন করার সঠিক সময়টি ছিলো ২০ বছর আগে। দ্বিতীয় সঠিক সময়টি হলো আজকে”। সুতরাং যেই অবস্থায় আছেন শুরু করুন, প্রচুর পড়াশুনা করুন – এতে করে নির্দিষ্ট বিষয়ে আগ্রহ তৈরী হবে, ইউনিভার্সিটির প্রফেসরদের সাথে যোগাযোগ করুন, তাদের নির্দেশ মতো সবটুকু ঢেলে দিন। প্রফেসরদের সাথে যোগাযোগের অসমর্থ হলে সিনিয়র ভাইয়া-আপুদের সাথে যোগাযোগ করুন, পরামর্শ নিন, সেইমতো কাজ করুন। কন্ট্রিবিউশন যত সামান্যই হোক না কেন, পিছপা হবেন না। সর্বোপরি লক্ষ্য রাখুন, নিজেকে বিজ্ঞান মনস্ক ও গবেষণায় অনুরাগী এমন একটি কমিউনিটিতে যুক্ত করার।
আপনার লিংকডইন সাইটের ওয়েবএড্রেস
https://www.linkedin.com/in/deponker-sarker-depto-607559224
আপনার ওয়েবসাইট, গবেষনাকাজের লিংক ইত্যাদি
আপনার সাথে যোগাযোগের তথ্য:
dipto007sarker@জিমেইল.com
Leave a comment