প্রফেসর- ড. মোহা: ইয়ামিন হোসেন
ফিশারীজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
আপনার সিজিপিএ ৩.০, যা অনেকেই মনে করেন উচ্চশিক্ষার জন্য যথেষ্ট নয়, কিন্তু বাস্তবতা হলো—এটি কখনোই আপনার ভবিষ্যত শিক্ষার পথে বাধা নয়, বরং আপনার আগ্রহ, পরিশ্রম এবং লক্ষ্য নিয়ে কিভাবে অগ্রসর হবেন সেটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
পরিশ্রমের গুরুত্ব:
মহান আল্লাহর রহমতে, যদি আপনার ভাগ্যে বিদেশে স্কলারশিপের রিজিক লেখা থাকে, তবে সেটি নিশ্চিতভাবে আপনি পাবেন। তবে, আপনার সিজিপিএ ৩.০ থাকলেও বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু অতিরিক্ত যোগ্যতা এবং প্রস্তুতি দরকার হবে। এটি এক বছর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সম্ভব, যা আপনার সুযোগকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
IELTS স্কোর:
একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো IELTS পরীক্ষায় ভালো স্কোর অর্জন করা। বেশিরভাগ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্কলারশিপের জন্য IELTS একটি প্রধান যোগ্যতা নির্ধারক। আপনাকে ৭.০-৭.৫ বা তার বেশি স্কোর করার জন্য চেষ্টা করতে হবে, কারণ এটি আপনার ইংরেজি ভাষার দক্ষতার প্রমাণ দেবে। ভাষা দক্ষতা এবং কমিউনিকেশন স্কিল এই ক্ষেত্রে আপনার অ্যাপ্লিকেশনকে আরও দৃঢ় করবে।
গবেষণা ও পাবলিকেশন:
স্কলারশিপের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি হলো গবেষণা এবং একাডেমিক প্রোফাইল। আপনার সিজিপিএ কম হলেও, যদি আপনার হাতে ৪-৫ টি ভালো মানের গবেষণাপত্র থাকে এবং আপনি নিজেকে গবেষণা-ক্ষেত্রে দক্ষ হিসেবে প্রমাণ করতে পারেন, তবে স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।
আপনার ফিল্ডে নতুন নতুন গবেষণা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করুন, জার্নাল আর্টিকেল পড়ুন, এবং আপনার আগ্রহের বিষয়ে গবেষণার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করুন।
পোর্টফোলিও উন্নয়ন:
আপনার একাডেমিক এবং এক্সট্রা-কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিসগুলোর প্রোফাইল তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যেসব স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করেছেন বা কোনো প্রজেক্টে কাজ করেছেন তা উল্লেখ করুন। আপনার লিংকডইন প্রোফাইলকে আরও সমৃদ্ধ করুন এবং প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক তৈরি করুন। এতে আপনি বিদেশে সুযোগ সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পাবেন।
দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন:
যেসব দেশ স্কলারশিপ দেয় তাদের মধ্যে কানাডা, জার্মানি, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, এবং অস্ট্রেলিয়া অন্যতম। অনেক উন্নত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাভিত্তিক এমএস বা পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য স্কলারশিপ পাওয়া তুলনামূলক সহজ। আপনার পছন্দ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নিন, যেখানে গবেষণা কার্যক্রম এবং অধ্যাপকদের সাথে আপনার আগ্রহ মিলবে।
নিজেকে বিশ্বাস করা এবং ধৈর্য ধরে প্রস্তুতি:
আল্লাহ যদি আপনার ভাগ্যে স্কলারশিপ দিয়ে থাকেন, তাহলে তা অবশ্যই আপনার কাছে আসবে। আপনি সিজিপিএ কম নিয়ে চিন্তিত না হয়ে নিজেকে নিয়ে আশাবাদী থাকুন এবং প্রস্তুতি শুরু করুন। সঠিক পরিকল্পনা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে, আপনার স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যেতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
আজ থেকেই পরিকল্পনা শুরু করুন—IELTS প্রস্তুতি নিন, গবেষণার কাজ শুরু করুন এবং নিজেকে সর্বোচ্চভাবে উন্নত করার চেষ্টা চালিয়ে যান।
মহান আল্লাহ আপনাকে উচ্চশিক্ষার জন্যে বড় মাপের স্কলারশিপ কবুল করুন।
বিদ্র: ফেসবুক থেকে সংগ্রহীত———–https://web.facebook.com/share/p/19iuTG9yL1/
Leave a comment