গবেষণায় হাতে খড়ি

গবেষণার প্রস্তুতি ছাড়া বিদেশে উচ্চশিক্ষায় নয়!

Share
Share

প্রফেসর- ড. মোহা: ইয়ামিন হোসেন

ফিশারীজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

গবেষণা না শিখে প্লিজ বিদেশে উচ্চশিক্ষায় যাবেন না – আপনার এই না জানাটা দেশ ও নিজ প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ নষ্ট করবে!ভবিষ্যৎ-এ ঐ ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ থেকেই আর কোন ফেলোই আর নিবে না!

বি সিরিয়াস প্লিজ!

বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি যাত্রার পূর্বে কিছু মৌলিক বিষয় চিন্তা করা প্রয়োজন। বিশেষ করে, আমেরিকা, কানাডা, যুক্তরাজ্য (ইউকে), এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা করতে গেলে, শুধুমাত্র IELTS, TOEFL, বা GRE স্কোরের উপর নির্ভর করলেই হবে না। এর পাশাপাশি আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে, যা আপনাকে সফলভাবে বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনে সহায়তা করবে।

নিচে বিস্তারিতভাবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হলো:

১. গবেষণা ও প্রস্তুতির গুরুত্ব:

গবেষণা: বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হলে শুধু প্রয়োজনীয় স্কোর পেলে হবে না, আপনাকে গবেষণার প্রতি আগ্রহ এবং প্রস্তুতির সাথে কাজ করতে হবে। বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার মান অনেক উচ্চ, এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে গবেষণা প্রোজেক্টে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন: কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কী ধরনের গবেষণা হচ্ছে এবং আপনার আগ্রহের সাথে তা কতটা মিল রয়েছে, তা সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। আপনার ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার ও আগ্রহের সাথে মিলিয়ে বিষয় নির্বাচন করতে হবে।

২. IELTS, TOEFL, GRE এর ভূমিকা:

– IELTS/TOEFL: এই পরীক্ষাগুলি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করার জন্য ইংরেজি দক্ষতা পরীক্ষার জন্য। যদিও উচ্চ স্কোর গুলির গুরুত্ব রয়েছে, তবে স্কোরের পাশাপাশি আপনার একাডেমিক সাফল্য ও গবেষণা দক্ষতা আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

– GRE: এটা মূলত মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে স্নাতকোত্তর বা পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করার সময় একটি ভাল GRE স্কোর প্রয়োজন হয়। তবে শুধুমাত্র স্কোর পেলেই ভর্তি হওয়া যায় না, আপনার একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড, গবেষণা অভিজ্ঞতা এবং প্রফেসরদের সাথে সম্পর্কও গুরুত্বপূর্ণ।

৩. বিশ্ববিদ্যালয়ে সফলতা অর্জন:

একাডেমিক দক্ষতা: স্কলারশিপ পাওয়া এক জায়গা, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকে থাকতে এবং সাফল্য অর্জন করতে হলে আপনাকে কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায় এবং নতুন ধারণায় আগ্রহ থাকতে হবে। শুধু শিক্ষাগত যোগ্যতা নয়, একটি সুসজ্জিত গবেষণার অভিজ্ঞতা এবং নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য দক্ষতার প্রয়োজন।

ক্যারিয়ার সম্ভাবনা: যেসব ছাত্র-ছাত্রীরা বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছেন, তাদের জন্য গবেষণার অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে একটি ভালো ক্যারিয়ার গড়তে সহায়ক হবে। একাডেমিক গবেষণার মাধ্যমে আপনি প্রতিষ্ঠিত হয়ে নিজের নাম তুলে ধরতে পারবেন।

৪. ফেরত পাঠানো সমস্যা:

অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই এখন শুধুমাত্র উচ্চ স্কোর বা স্কলারশিপের ভিত্তিতে ভর্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে না। যদি আপনার রিসার্চের অভিজ্ঞতা না থাকে, অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোনো উপযুক্ত প্রকল্প বা গবেষণার জন্য আগ্রহ না থাকে, তবে তা ফেরত পাঠানোর ঝুঁকি থাকতে পারে।

ব্যক্তিগত দৃষ্টি এবং পরিকল্পনা: বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে যে, আপনি ভবিষ্যতের জন্য কী ধরনের গবেষণা করতে চান এবং সেটা কীভাবে তাদের প্রোগ্রামের সঙ্গে সম্পর্কিত।

৫. অধ্যয়ন ও গবেষণার পদ্ধতি:

বিদেশে গিয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন করার জন্য আপনি গবেষণার জন্য যথাযথ প্রস্তুতি নিতে পারেন। বিশেষ করে:

বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রোগ্রাম ও অধ্যাপককে জানুন: প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব গবেষণা বিষয় এবং প্রোজেক্ট থাকে। সেগুলোতে আগ্রহী হয়ে থাকলে, আপনি তাদের গবেষণা দলের অংশ হতে পারবেন।

গবেষণা নেটওয়ার্ক গড়ে তুলুন: যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনি আবেদন করছেন, তাদের গবেষণা নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে চেষ্টা করুন। এতে আপনার গতি বাড়বে এবং নতুন সুযোগও সৃষ্টি হবে।

উপসংহার:

বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত একটি বড় পদক্ষেপ, তবে এটা সফল করতে হলে গবেষণা দক্ষতা এবং প্রোগ্রামের প্রতি আগ্রহ থাকতে হবে। স্কলারশিপ এবং ভাল স্কোর প্রয়োজন, তবে এগুলোর পাশাপাশি গবেষণার অভিজ্ঞতা এবং যথাযথ প্রস্তুতির গুরুত্ব কম নয়। তাই বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে হলে বিষয়টির ব্যাপারে সুপরিকল্পিতভাবে প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।

বিদ্র: ফেসবুক থেকে সংগ্রহীত—————–https://www.facebook.com/share/17i1a1AgsF/

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ফ্রি ইমেইল নিউজলেটারে সাবক্রাইব করে নিন। আমাদের নতুন লেখাগুলি পৌছে যাবে আপনার ইমেইল বক্সে।

বিভাগসমুহ

Related Articles
গবেষণায় হাতে খড়ি

গবেষণার বিষয়ে কিছুই জানি না, কিভাবে শুরু করবো, কার কাছে যাবো, কিভাবে স্কলারশিপ পাবো?

প্রফেসর- ড. মোহা: ইয়ামিন হোসেন ফিশারীজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের গবেষণার...

গবেষণায় হাতে খড়ি

উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ পেতে বাংলাদেশী ফেলো কিভাবে বিদেশী প্রফেসরকে ম্যানেজ করবেন?

প্রফেসর- ড. মোহা: ইয়ামিন হোসেন ফিশারীজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য...

গবেষণায় হাতে খড়ি

কিভাবে একটা গবেষণা প্রজেক্ট প্রস্তাবনা লেখা হয়?

প্রফেসর- ড. মোহা: ইয়ামিন হোসেন ফিশারীজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। একটি গবেষণা প্রজেক্ট...

গবেষণায় হাতে খড়ি

প্রাকটিকাল ক্লাস দিয়ে শুরু হোক গবেষণা ও পাবলিকেশন!

প্রফেসর- ড. মোহা: ইয়ামিন হোসেন ফিশারীজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। গবেষণা এবং পাবলিকেশন...

গবেষণায় হাতে খড়ি

দেশের টেকসই উন্নয়ন ও মানবকল্যাণ: জরুরি প্রয়োজন ও করণীয়!

লেখক: প্রফেসর ড মোহাঃ ইয়ামিন হোসেনফিশারীজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের শিক্ষার মান...

Three Columns Layout

গবেষণার তথ্য ও বিজ্ঞানীদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে, বিজ্ঞানী.অর্গ নবীন প্রজন্মকে গবেষণার প্রতি অনুপ্রাণিত করে।

Contact

biggani.org❤️gmail.com

Biggani.org connects young audiences with researchers' stories and insights, cultivating a deep interest in scientific exploration.

বিজ্ঞানী অর্গ (biggani.org) বাংলাদেশি বিজ্ঞানীদের একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে গবেষণা ও বিজ্ঞান নিয়ে বাংলা ভাষায় তথ্য ও সাক্ষাৎকার প্রচার করে – নবীনদের গবেষণা ও উচ্চশিক্ষায় প্রেরণা দেয়া হয়।

যোগাযোগ:

biggani.org@জিমেইল.com

biggani.org, a community of Bangladeshi scientists, shares interviews and information about researchers and scientists in Bengali to inspire young people in research and higher education.