নবীন প্রজন্মদের সাক্ষাৎকার সিরিজে এবার আমরা সাক্ষাৎকার নিয়েছি ফয়সাল আহাম্মদ খান এর। তিনি Giga Tech Limited এ Head of R&D হিসেবে কর্মরত। তার সাক্ষাৎকারটি পড়ুন:
প্রথমেই আপনার সম্বন্ধে আমরা জানতে চাই
আমি একজন ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রক্রিয়াকরণ উত্সাহী, যিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিন লার্নিং ব্যবহার করে বাস্তব জীবনের সমস্যা সমাধানে আগ্রহী। আমি নতুন প্রযুক্তি শেখা এবং তা গ্রহণ করার জন্য উৎসাহী। আমি বিশ্বাস করি, বৃহত্তর অর্জন করতে এককভাবে কাজ করার চেয়ে সহযোগিতামূলক কাজ করা বেশি কার্যকর।
আপনার গবেষনার বিষয় কি?
আমার গবেষণার সংক্ষিপ্ত সময়কালে, আমি ন্যাচেরাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং এর বেশ কিছু কোর কম্পোনেন্ট নিয়ে কাজ করি, এছাড়া আমি ভাষাবিজ্ঞানের ক্ষেত্র, বিশেষ করে শ্যালো এবং ডিপেনডেন্সি পার্সিং, পাশাপাশি কনটেক্সচুয়াল পার্ট অফ স্পিচ ট্যাগিং নিয়ে কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করি। এছাড়াও, আমার ডাটা অ্যানোটেশন পাইপলাইনের ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে।
বর্তমানে আমি একটি ক্ষুদ্র টিম নিয়ে ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিংয়ের এন্ড-টু-এন্ড ইকো সিস্টেম নিয়ে গবেষণা করছি, যেখানে মানব-অ্যানোটেটেড ডেটাসেট তৈরি, ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল তৈরি, বিভিন্ন নির্দিষ্ট কাজের জন্য মডেল ফাইন-টিউন, এবং সর্বশেষ ব্যবহারকারীর জন্য অ্যাপ্লিকেশন তৈরির প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত। এই কাজের মদ্ধে আমাদের একটি অন্যতম কাজ হল আমাদের প্রাপ্ত ফলাফল এর বেঞ্ছমার্কিং রিপোর্ট করা।
ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল সাধারণত অন্যান্য মডেলের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে এবং জটিল ও নির্দিষ্ট কাজের জন্য মডেলগুলোকে সহায়তা প্রদান করে। ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল ডেটার মধ্যে থাকা প্যাটার্নগুলো শিখে যাতে এটি জেনারালাইজ আউটপুট প্রদান করতে সক্ষম হয়। এটির মূল কাজ হল প্রতিটি বাক্যের প্রতিটি শব্দের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করা, যা পরবর্তীতে প্রসঙ্গ অনুযায়ী অর্থবহ ফলাফল উৎপাদনে সহায়ক হয়।
আপনার গবেষনার কাজগুলি কিভাবে আমাদের উপকৃত করছে কিংবা করবে?
আমরা বাংলা ভাষাবিজ্ঞানের বেশ কিছু কোর কম্পোনেন্ট এর মানগত ডাটাসেট তৈরি করে বেঞ্ছমার্কিং করার চেষ্টা করতেসি যেটা ভাষা নিয়ে আরও গুরুত্তপুর্ন গবেষণার মেটেরিয়াল হিসাবে কাজ করবে। সর্বশেষ কেডিডি তে প্রকাশিত গবেষণা পত্রে সেন্টিমেন্ট এর ডাটাসেটটি গবেষণার জন্য উম্মুক্ত করা হয়। যেখানে সেন্টিমেন্ট অ্যানালাইসিস মডেলের স্টেট অফ দ্যা আর্ট অ্যাকুরেসির অ্যানালাইসিস উপস্থাপন করা হয়। যে কোন মডেল নিয়ে কাজ করার সময় পাব্লিশড ডাটাসেট মডেল মূল্যায়নের জন্য গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা রাখে। এছাড়া বাংলা লেমাটাইজারের নিয়মাবলী প্রণয়ন সংক্রান্ত একটি কাজ ইএমএনএলপি ২০২৩ ফাইন্ডিংস এ প্রকাশিত হয়। বর্তমানে নেইমড এন্টিটি সনাক্তকরনের একটি গবেষণাপত্র বর্তমানে চলমান আছে।
বাংলাদেশের তরুণ শিক্ষার্থী যারা বিজ্ঞানে কাজ করতে চায় – তাদের জন্য আপনার কোন ম্যাসেজ কিংবা বার্তা কি?
আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত মেধাবী, তবে তাদের মেধার যথাযথ পরিচর্যা এবং সমন্বয়ের ঘাটতি রয়েছে। তাদের প্রতি আমার পরামর্শ হলো, তারা যেনো অনার্স বা আন্ডারগ্র্যাড সময়েই তাদের ক্যারিয়ারের দিক নির্ধারণ করে নেয়। পাস করে বের হয়ে কী করবে সেটা নিয়ে চিন্তা না করে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার অন্তত এক বছর আগে পরিকল্পনা করা উচিত যে তারা ভবিষ্যতে কী হতে চায় এবং সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।
শিক্ষার্থীদের উচিত তাদের কাজের বিষয়ে সমসাময়িক সময়ে প্রকাশিত গবেষণাপত্রগুলি নিয়মিত পড়া। পাশাপাশি, যে বিষয় নিয়ে তারা পড়াশোনা করছে, সেই বিষয়ে কী কী রিসোর্স রয়েছে তারও একটা ধারণা থাকা উচিত। নিজেকে গবেষণার জন্য প্রস্তুত করতে হলে নিয়মিত গবেষণাপত্র পড়ার বিকল্প নেই। যদি শিক্ষার্থীরা গ্রুপভিত্তিকভাবে প্রতি সপ্তাহে একজন করে ভিন্ন ভিন্ন গবেষণাপত্র পর্যালোচনা করে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করে, তাহলে তা আরও ভাল হবে।
সবশেষে, যা বলতে চাই তা হলো, বিশ্বাস এবং পরিশ্রম থাকলে যে কোনো কিছু অর্জন করা সম্ভব।
আপনার ইমেইল ঠিকানা: [email protected]
আপনার লিংকডইন সাইটের ওয়েবএড্রেস: www.linkedin.com/in/faisalahamedkhan
আপনার ওয়েবসাইট, গবেষনাকাজের লিংক: https://scholar.google.com/citations?hl=en&user=jAk1N_YAAAAJ
আমরা বিজ্ঞানী অর্গের পক্ষ থেকে ফয়সাল আহাম্মদ খান এর উত্তোরত্তর সাফল্য কামনা করি। তিনি আমাদের নবীন গবেষকদের জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
Leave a comment