সাক্ষাৎকার

#০৫৫ বাংলাদেশের মাশরুম গবেষণার অগ্রদূত — ড. ইকবাল হোসেন

Share
Share

ড. ইকবাল হোসেন ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার আখানগর গ্রামের খালিফাপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষাজীবনে তিনি প্রথমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন, পরে সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় (ঠাকুরগাঁও) ও ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ (সাভার) থেকে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি উত্তীর্ণ হন। এরপর ২০০৪ সালে কৃষিতে অনার্স এবং ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে প্লান্ট প্যাথলজি বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন scholar.google.com
২০১৪ সালে তিনি চীনের Kunming Institute of Botany, ইউনিভার্সিটি অফ চাইনিজ একাডেমি অফ সাইন্সেস থেকে ডিএসসি/পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। scholar.google.com বর্তমানে তিনি চীনের Guangdong Institute of Microbiology‑এ (Guangdong Academy of Sciences‑এর অন্তর্ভুক্ত) সহযোগী অধ্যাপক (গবেষণা) হিসেবে কর্মরত আছেন।
তাঁর গবেষণার মূল ফোকাস হলো মাশরুম (macrofungi) — বিশেষ করে বাংলাদেশের মাশরুম প্রজাতিসংক্রান্ত ট্যাক্সনমি ও মলিকুলার ফাইলোজেনি। তিনি বাংলাদেশের জন্য প্রথমবারের মতো কয়েকটি নতুন মাশরুম জেনাস এবং প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন। তাঁর এই কাজ বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ ও নতুন।

💬 প্রশ্নোত্তর পর্ব:

প্রশ্ন: বিজ্ঞানী.অর্গ: প্রথমেই আপনার সম্বন্ধে আমাদের একটু বলুন।
উত্তর: আসসালামুয়ালাইকুম। আপনাকে এবং আপনার প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞানী.অর্গ কে শুভেচ্ছা ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার আখানগর গ্রামের খালিফাপাড়ায় জন্মগ্রহণ করি। বর্তমানে আমি চীনের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান গুয়াংডং ইন্সটিটিউট অব মাইক্রোবায়োলজি‑তে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে সহযোগী অধ্যাপক (গবেষণা) হিসেবে কর্মরত আছি। ২০১৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ ফেলো হিসেবে (প্রথম ও দ্বিতীয় মেয়াদে) একই প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি। ২০১৪ সালে কুনমিং ইনস্টিটিউট অব বোটানি যা ইউনিভার্সিটি অব চাইনীজ একাডেমি অব সাইন্সেস এর অন্তর্ভুক্ত একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান হতে ডিএসসি/পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করি। ২০০৪ সালে (অনুষ্ঠিত ২০০৬ সালে) কৃষিতে অনার্স এবং ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে প্লান্ট প্যাথলজি বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জন করি। চীনে আসার পূর্বে বিএএফ শাহীন কলেজ ঢাকা‑তে প্রায় এক বছর (অগাস্ট ২০০৯ থেকে সেপ্টেম্বর ২০১০) শিক্ষকতা করেছি। ২০০০ সালে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ১৯৯৮ সালে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি‑তে উত্তীর্ণ হয়েছি। এর আগে স্থানীয় গ্রামের স্কুল ভেলার হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আমার শিক্ষার হাতেখড়ি।

প্রশ্ন: বিজ্ঞানী.অর্গ: কে আপনাকে বিজ্ঞানী হতে উদ্বুদ্ধ করল?
উত্তর: আজকের আমি হয়ে উঠা প্রকৃতপক্ষে অনেক মানুষের অবদান রয়েছে। পিতা‑মাতা, আত্মীয়‑স্বজন থেকে শুরু করে অনেক শিক্ষক‑শিক্ষিকার অবদান রয়েছে। কৃষি বিষয়ে পড়াশুনা করেছি বলে স্বাভাবিকভাবেই NARS-এর অধীনে গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোতে (BARI, BRRI প্রভৃতি) বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কাজ করা মনের মধ্যে প্রবলভাবে একটা আকুতি ছিল এবং সেই সাথে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের প্রতীক্ষা ছিল। ২০১০ সালের দিকে চীন থেকে একটা অফার পেয়ে যাই উচ্চতর শিক্ষা তথা পিএইচডি করার জন্য এবং আমার গবেষণার কাজটি সম্পন্ন করি চীনের প্রফেসর ড. চু লিয়াং ইয়াং-এর তত্ত্বাবধানে। পরবর্তী সময়ে আমার পোস্টডক্টরাল কাজ করি চীনের আরেক প্রফেসর ড. থাই হুই লি‑র অধীনে। প্রফেসর ইয়াং এবং প্রফেসর লি‑র অনেক ভূমিকা রয়েছে আজকে আমাকে এ জায়গায় নিয়ে আসার জন্য। তাছাড়া আরও কিছু মানুষের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ অবদান রয়েছে যেমন‑ শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. এফ এম আমিনুজ্জামান, প্রফেসর নাসিমা আকতার, প্রফেসর ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম, প্রফেসর ড. নাজনীন সুলতানা, প্রফেসর ড. সালাউদ্দিন মাহমুদ চৌধুরীসহ প্রমুখ এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট‑এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আশরাফ উদ্দিন আহমদ উল্লেখযোগ্য। আমার বাবা (মোঃ আব্বাস আলী) এবং আমার মামা (আব্দুস সামাদ) বাংলাদেশ থেকে মাশরুম সংগ্রহে অনেক সহায়তা করেছেন যা পরবর্তীতে আমার পিএইচডি গবেষণায় অনেক কাজে লেগেছে। নতুন কিছু জানার আগ্রহে এবং মনের প্রবল ইচ্ছা আর সেই সাথে তাদের অবদানের সমন্বয়ে আজকের আমি হয়ে উঠা।

প্রশ্ন: বিজ্ঞানী.অর্গ: আপনি কোথায় ও কি বিষয়ের উপর পিএইচডি করেছেন?
উত্তর: আমি ২০১৪ সালের জুন মাসে কুনমিং ইনস্টিটিউট অব বোটানি (যা ইউনিভার্সিটি অব চাইনীজ একাডেমি অব সাইন্সেস‑এর অন্তর্ভুক্ত একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান) হতে ডিএসসি/পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করি। যদিও আমার মাস্টার্সের গবেষণার কাজ ছিল মাইক্রো ফাংগাস নিয়ে এবং আমি শস্যডাল ছোলার রোগ সৃষ্টিকারী গ্রে মোল্ড অব বট্রাইটিস (Botrytis cinerea)‑র কিছু শারীরবৃত্তীয় এবং দমন ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট‑এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদের অধীনে। পরবর্তীতে পিএইচডি‑তে আমি কাজ করেছি ম্যাক্রোফাংগাস নিয়ে, যাকে আমরা সাধারণ কথায় “মাশরুম” বলে থাকি। পিএইচডি‑তে আমি বাংলাদেশের মাশরুমের উপর কাজ করেছি। আমার গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল দুইটি মাশরুম ফ্যামিলির ট্যাক্সনমি এবং মলিকুলার ফাইলোজেনি নিয়ে কাজ করা; তার মধ্যে একটি হলো বোলেটাসেয়ী (Boletaceae) এবং অন্যটি হলো আমানিটাসেয়ী (Amanitaceae)। আমার এ গবেষণায় এই দুই ফ্যামিলির মোট ৩৪টি প্রজাতির মাশরুম বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো আবিষ্কার তথা শনাক্ত করতে সক্ষম হই। এর মধ্যে একটি নতুন জেনাস/গণ (Borofutus) এবং ১৭টি নতুন প্রজাতির মাশরুম ছিল। নতুন জেনাসের মাশরুমটি সহ মোট ৫টি নতুন প্রজাতির মাশরুম (Borofutus dhakanus, Phylloporus catenulatus, Phylloporus gajari, Phylloporus attenuatus এবং Amanita cinereovelata) ইতিমধ্যে বিভিন্ন মাইকোলজিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে আবিষ্কৃত হওয়া প্রথম মাশরুম এবং বাকিগুলো প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।

প্রশ্ন: বিজ্ঞানী.অর্গ: আপনি বর্তমানে চীনের Guangdong Institute of Microbiology, Guangdong Academy of Sciences এ গবেষণা করছেন। এই প্রতিষ্ঠান সম্বন্ধে বলুন। এখন আপনি কি গবেষণা করছেন?
উত্তর: এটি ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান যেটি গুয়াংডং প্রদেশের গুয়াংজো শহরে অবস্থিত। প্রথমে এটি চাইনীজ একাডেমি অফ সাইন্সেস (CAS)‑এর অধীনস্থ একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ছিল। পরে এটি ১৯৭২ সালে গুয়াংডং একাডেমি অফ সাইন্সেস (GDAS)‑এর অধীনে চলে আসে। গুয়াংডং একাডেমি অফ সাইন্সেসের ২৪টি গবেষণা ইনস্টিটিউট রয়েছে; তার মধ্যে গুয়াংডং ইনস্টিটিউট অব মাইক্রোবায়োলজি হল মূল গবেষণা ইনস্টিটিউট। এখানে প্রায় ২৫০ জনের মত স্টাফ রয়েছে। এখানে যারা প্রথমে গবেষণায় (এন্ট্রি লেভেল‑রিসার্চ/সহকারী অধ্যাপক) প্রবেশ করে তাদের পিএইচডি ডিগ্রি থাকা আবশ্যক এবং সেই সঙ্গে ভাল মানের জার্নালে (SCI) কয়েকটি প্রকাশনা থাকতে হবে। … (উল্লেখ করেছেন) … আমি বর্তমানে বেশ কয়েকটি মাশরুম জেনাসের (যেমন‑ Rossbeevera, Xanthagaricus, Pluteus, Tricholomopsis প্রভৃতি) ট্যাক্সনমি এবং ফাইলোজেনি নিয়ে কাজ করছি যেগুলো চীন থেকে সংগৃহীত।

প্রশ্ন: বিজ্ঞানী.অর্গ: আপনি অনেক গবেষণাতে ডিএনএ সিকুয়েন্স ব্যবহার করে অনেক কিছু জানার চেষ্টা করছেন। এই প্রযুক্তি সম্বন্ধে আমাদের বলুন। এটি কিভাবে বৈজ্ঞানিকদের সাহায্য করে?
উত্তর: উদ্ভিদ অথবা প্রাণী যাই বলুন না কেন আণবিক গঠনের দিক থেকে সবকিছু মূলত চারটি ক্ষারকের (A, T, G এবং C) সমন্বয়ে গঠিত; কিন্তু ক্রোমোজোমে এদের বিন্যাস ভিন্নতার কারণে প্রজাতি থেকে প্রজাতিতে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। আমরা মূলত ডিএনএ সিকুয়েন্স ব্যবহার করি প্রজাতি থেকে প্রজাতি, গণ/জেনাস থেকে গণ অথবা পরিবার/ফ্যামিলি থেকে পরিবার এমনকি আরো উচ্চ র‌্যাঙ্কিং (প্রজাতি থেকে পর্ব) এর মাঝে সম্পর্ক নির্ণয়ের জন্য। … (উল্লেখ করেছেন) … আমরা মাশরুম গবেষণার জন্য স্বল্প দৈর্ঘ্যের অর্থাৎ ৬০০‑১২০০ বেসের সিকুয়েন্স (ITS, LSU, tef1, rpb1, rpb2 প্রভৃতি) ব্যবহার করে থাকি। মাশরুম যেহেতু একটি স্বল্প আয়ুষ্কাল (২‑৫ দিন) ফসল এবং সহজেই এদের দেহাবশেষ মাটির সাথে মিশে যায় সেই কারণে কয়েকশত বছর আগের এদের জীবাশ্ম প্রকৃতিতে খুঁজে পাওয়া বেশ দুরূহ। এই ক্ষেত্রে ডিএনএ সিকুয়েন্স ব্যবহার করে তাদের বিবর্তনের বয়স নির্ধারণ করতে বৈজ্ঞানিকদের সাহায্য করে থাকে।

প্রশ্ন: বিজ্ঞানী.অর্গ: আপনি এখন কি নিয়ে গবেষণা করছেন?
উত্তর: মূলত আমি মাশরুমের ট্যাক্সনমি এবং মলিকুলার ফাইলোজেনি নিয়ে কাজ করি। বর্তমানে আমার নিজস্ব কিছু চাইনীজ প্রজেক্ট রয়েছে মাশরুমের উপরে সেগুলো নিয়ে কাজ করছি। সেই ২০০৯ সাল থেকে শুরু আজ অবধি এসব নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।

প্রশ্ন: বিজ্ঞানী.অর্গ: এই গবেষণাগুলি গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর: অজানাকে জানা মানুষের আজন্ম স্বভাব। এটা বলা হয়ে থাকে যে উদ্ভিদ এবং ফাংগাসের অনুপাত ১ : ৬ অর্থাৎ এক ভাগ উদ্ভিদ থাকলে সেখানে ৬ ভাগ ফাংগাসের উপস্থিতি থাকার কথা। যেখানে পৃথিবীতে ৯৫‑৯৮% উদ্ভিদের নাম জানা হয়ে গেছে সেখানে মাত্র ৫‑৭% ফাংগাস আবিষ্কৃত হয়েছে। এই পরিসংখ্যান থেকে সহজেই অনুমেয় যে এখনও ৯৩‑৯৫ ভাগ ফাংগাস অনাবিষ্কৃত রয়েছে। এরা প্রকৃতিতে মৃতজীবি, মিথোজিবি এবং পরজীবি হিসেবে কাজ করে। … (উল্লেখ করেছেন) … এই দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করলে মাশরুম নিয়ে গবেষণার বেশ গুরুত্ব রয়েছে।

প্রশ্ন: বিজ্ঞানী.অর্গ: আসলেই এই পরিসংখ্যান একেবারেই নগণ্য‑ এটার পিছনে আপনি কি কারণ বলবেন?
উত্তর: আমার জানা মতে বাংলাদেশের ইতিহাসে মাশরুমের ট্যাক্সনমি নিয়ে গবেষণা মাত্র ১০ বছরেরও কম সময় ধরে হয়েছে; অন্যদিকে চীনের ১৫০ বছরেরও পুরনো ইতিহাস রয়েছে। … (উল্লেখ করেছেন) … উপযুক্ত প্রশিক্ষকের অভাব এবং যারা এই বিষয়ে গবেষণা করতে চান তাদের সুযোগ না পাওয়া অথবা যারা শুরু করেছেন তাদের আর্থিকভাবে সহায়তা না পাওয়া আমার কাছে প্রধান কারণ বলে মনে হচ্ছে। … (উল্লেখ করেছেন) …

প্রশ্ন: বিজ্ঞানী.অর্গ: ভবিষ্যতে কি নিয়ে কাজ করতে চান?
উত্তর: মাশরুম নিয়েই কাজ করে যেতে চাই। এক্ষেত্রে আমি এটিকে তিনটি ভাগে ভাগ করে ব্যাখ্যা করতে চাই:
১. ফাংগাল ট্যাক্সনমিস্ট তৈরি করা।
২. ফাংগারিয়াম স্থাপন করা।
৩. মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে মাশরুম তথা মাইকোলজি অন্তর্ভুক্ত করা।

প্রশ্ন: বিজ্ঞানী.অর্গ: চীনে যারা গবেষণা কাজে যেতে চান তাদের জন্য কি উপদেশ দিবেন?
উত্তর: আমার মনে হয় চীন প্রতি সেকেন্ডে পরিবর্তন করছে। সময়ের নিরিখে এরা অনেক এগিয়ে গেছে এবং আরও সামনের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। … (উল্লেখ করেছেন) … গবেষণার কাজে মূলত সরকারী ফান্ডই বেশি। … (উল্লেখ করেছেন) … একজন গবেষক হিসেবে গবেষণায় মনোযোগী হওয়া, ভাল মানের জার্নালে প্রকাশনা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন: বিজ্ঞানী.অর্গ: তরুণ শিক্ষার্থীরা যারা বিজ্ঞানে কাজ করতে চান তাদের জন্য আপনার কোন উপদেশ বা বক্তব্য আছে?
উত্তর: যারা বিজ্ঞানে কাজ করতে চান তাদেরকে আমি স্বাগত জানাই। যারা বাংলাদেশ থেকে বাইরে গবেষণায় কাজ করছেন সবাই সুনামের সহিত কাজ করছেন। … (উল্লেখ করেছেন) … মেধা একটি আপেক্ষিক বিষয় মাত্র, তবে মেধার সাথে কঠোর পরিশ্রম আর ধৈর্যের সমন্বয় ঘটাতে পারলে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন।

প্রশ্ন: বিজ্ঞানী.অর্গ: আপনার ইনস্টিটিউটে তরুণ গবেষকদের মাস্টার্স ও পিএইচডি তে ভর্তি হবার সুযোগ আছে কি? কোথায় যোগাযোগ করবেন এবং এর জন্য কিভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে?
উত্তর: এক কথায় বলতে গেলে নেই। এটি আর দশটা ইনস্টিটিউট থেকে ভিন্ন অনেকটা বাংলাদেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহের মতো। এখানে সরাসরি বিদেশী শিক্ষার্থীদের মাস্টার্স ও পিএইচডি সংশ্লিষ্ট গবেষণা সুযোগ নেই, তবে পোস্টডক রিসার্চ ফেলো হিসেবে সুযোগ রয়েছে। … (উল্লেখ করেছেন) …

🔗 প্রোফাইল লিংক: https://scholar.google.com/citations?hl=en&user=2GTkHzQAAAAJ scholar.google.com

ড. ইকবাল হোসেনের মাশরুম‑রিসার্চ দেশের বৈজ্ঞানিক পরিসরে একটি নতুন অধ্যায় রচনা করছে। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্যে মাশরুম নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ কাজের ক্ষেত্রে তিনি এক প্রশ্নাতীত ভূমিকা পালন করছেন। biggani.org পরিবার তার এই ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে এবং আশা রাখে— তাঁর গবেষণা বাংলাদেশি তরুণ বিজ্ঞানীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হোক। আমরা তাঁর ভবিষ্যৎ গবেষণার সাফল্য কামনা করছি।


Pioneer of Mushroom Research in Bangladesh: Dr. Iqbal Hossain

Dr. Iqbal Hossain was born in Khalifapara, Akhanagar, Sadar Upazila, Thakurgaon District. He began his education at the local primary school, later completing SSC at Thakurgaon Government Boys High School and HSC at Cantonment Public School & College, Savar. He earned a BSc in Agriculture in 2004 and an MSc in Plant Pathology in December 2007.

In 2014, he obtained a DSc/PhD from the Kunming Institute of Botany, University of Chinese Academy of Sciences, China. He currently works as an Associate Professor (Research) at the Guangdong Institute of Microbiology, part of the Guangdong Academy of Sciences. His primary research focus is on mushrooms (macrofungi), especially taxonomy and molecular phylogeny of Bangladeshi species. He has discovered several new genera and species of mushrooms for Bangladesh.

💬 Interview Highlights:

Q: Could you tell us about yourself?
A: Greetings. I was born in Khalifapara village, Thakurgaon, Bangladesh. I am currently an Associate Professor (Research) at the Guangdong Institute of Microbiology, China, since January 2019. Prior to that, I completed a postdoctoral fellowship at the same institute from December 2014 to December 2018. I obtained my PhD in June 2014 under Professor Chu Liang Yang. I briefly taught at BAF Shaheen College, Dhaka, before moving to China. My education journey started at the local primary school, followed by SSC and HSC, and finally higher studies in agriculture and plant pathology.

Q: Who inspired you to become a scientist?
A: Many people influenced me—parents, relatives, teachers. My interest in agricultural research and higher studies naturally guided me toward scientific work. I was fortunate to have guidance from several professors in Bangladesh and China. My father and uncle also helped me in mushroom collection in Bangladesh, which later contributed to my PhD research.

Q: Where and on what did you complete your PhD?
A: I completed my PhD at the Kunming Institute of Botany, focusing on macrofungi (mushrooms). My research involved taxonomy and molecular phylogeny of two mushroom families—Boletaceae and Amanitaceae. During my PhD, I identified 34 mushroom species from Bangladesh for the first time, including a new genus, Borofutus, and 17 new species. Five of these have already been published in international mycology journals.

Q: Tell us about your current work at the Guangdong Institute of Microbiology.
A: The institute, founded in 1964 in Guangzhou, China, is a leading research center under the Guangdong Academy of Sciences. Currently, I am working on the taxonomy and phylogeny of several mushroom genera collected from China, including Rossbeevera, Xanthagaricus, Pluteus, and Tricholomopsis.

Q: You often use DNA sequencing in your research. How does it help scientists?
A: DNA sequencing allows us to identify and classify species by comparing genetic sequences. For mushrooms, we use sequences like ITS, LSU, tef1, rpb1, and rpb2 to study evolution and relationships among species. This method is especially important because mushrooms are short-lived and decompose quickly, making traditional identification difficult.

Q: Why is your research important?
A: Only 5–7% of fungi on Earth have been discovered, while 95–98% of plants are already known. This means 93–95% of fungi remain unexplored. Mushrooms play crucial roles as decomposers and symbionts, so studying them enhances our understanding of biodiversity.

Q: Why has fungal research been limited in Bangladesh?
A: Fungal taxonomy research in Bangladesh is relatively recent, less than 10 years old, compared to China’s 150-year history. Lack of trained experts, limited funding, and few research opportunities have hindered progress.

Q: What are your future plans?
A: I plan to continue mushroom research with three main goals:

  1. Train fungal taxonomists.
  2. Establish a fungarium in Bangladesh.
  3. Introduce mycology into secondary and higher secondary education.

Q: Advice for students interested in research abroad, especially in China?
A: China is rapidly advancing in science. Government-funded research is abundant, and publication in high-quality journals is crucial. Students should be dedicated and hardworking to succeed.

Q: Advice for young Bangladeshi scientists?
A: Hard work and perseverance, combined with talent, are key. Bangladeshis working abroad are gaining valuable experience and building reputations. Young researchers should take inspiration from them.

Q: Can students join your institute for MSc or PhD?
A: Not directly. Opportunities for foreign students are limited, but postdoctoral research positions are available.

🔗 Profile Link: Google Scholar

Dr. Iqbal Hossain’s work in mushroom research opens a new chapter in Bangladesh’s scientific community. His discoveries in taxonomy and molecular phylogeny are pioneering, offering inspiration for young scientists and advancing knowledge of Bangladesh’s biodiversity.

Share
Written by
নিউজডেস্ক

আমরা বিজ্ঞানের বিভিন্ন খবরাখবর ও বিজ্ঞানীদের সাক্ষাতকার প্রকাশ করি। আপনারা কোন লেখা প্রকাশিত করতে চাইলে যোগাযোগ করুন: [email protected], [email protected]

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ফ্রি ইমেইল নিউজলেটারে সাবক্রাইব করে নিন। আমাদের নতুন লেখাগুলি পৌছে যাবে আপনার ইমেইল বক্সে।

বিভাগসমুহ

গবেষণার তথ্য ও বিজ্ঞানীদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে, বিজ্ঞানী.অর্গ নবীন প্রজন্মকে গবেষণার প্রতি অনুপ্রাণিত করে।

Contact:

biggani.org@জিমেইল.com

সম্পাদক: ড. মশিউর রহমান

Biggani.org connects young audiences with researchers' stories and insights, cultivating a deep interest in scientific exploration.

নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ইমেইল নিউজলেটার, টেলিগ্রাম, টুইটার X, WhatsApp এবং ফেসবুক -এ সাবস্ক্রাইব করে নিন।

Copyright 2024 biggani.org