কিভাবে কাজ করে?

কম্পিউটার দিয়ে কি এলিয়েন খোঁজা যাবে?

Share
Share

আমাদের অনেকের বাসাতেই কম্পিউটার আছে তাই না? কিন্তু আমরা কি সব সময়ই সেই কম্পিউটারটি ব্যবহার করি? সম্ভবত না, তাই না। অন্তত আমরা ঘুমাবার সময় অন্তত কম্পিউটারটিকে বন্ধ করে দিই। কিন্তু বিজ্ঞানীরা আহ্বান করছেন যে সেই অব্যবহৃত সময়টুকুতে তারা তোমার কম্পিউটার ব্যবহার করতে চায় – তাদের গবেষণার বিভিন্ন গণনা বা সমস্যা সমাধানের কাজে। আর এই উদ্যোগটি শুরু হয়েছিল SETI নামে একটি প্রোজেক্টের বদৌলতে। আজকে আমরা সেই SETI নামের প্রোজেক্টটির গল্প শুনবো।

মহাকাশ – কত রহস্যে ভরা

আমরা কি এই মহাকাশে একলা? মানুষ ছাড়া এই মহাজগতে আর কি কোন গ্রহে কেউ নেই? এই প্রশ্ন এর মুখোমুখি আমরা সেই প্রাচীনকাল থেকে৷ এই যে এত বিশাল মহাকাশ, কোটি কোটি গ্রহ নক্ষত্র এর মধ্যে একটিতেও কি মানুষের মত কোন বুদ্ধিমান প্রাণী এর আবির্ভাব হয়নি? একলা মানুষ সুদূর আকাশের দিকে তাকিয়ে এই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে তার নিজের কাছে৷ মানুষের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যত এগিয়েছে মানুষ ততই এই প্রশ্নগুলি উত্তর খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করেছে৷

আচ্ছা তোমাদেরও কি এমন প্রশ্ন মনে আসে? মানুষ ছাড়া এই মহাজগতে আর কি কোন গ্রহে কেউ নেই? এই প্রশ্ন এর মুখোমুখি আমরা সেই প্রাচীনকাল থেকে৷ এই যে এত বিশাল মহাকাশ, কোটি কোটি গ্রহ নক্ষত্র এর মধ্যে একটিতেও কি মানুষের মত কোন বুদ্ধিমান প্রাণী এর আবির্ভাব হয়নি? একলা মানুষ সুদূর আকাশের দিকে তাকিয়ে এই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছে তার নিজের কাছে৷ মানুষের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যত এগিয়েছে মানুষ ততই এই প্রশ্নগুলি উত্তর খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করেছে৷

আমাদের বর্তমান প্রযুক্তি দিয়ে মানুষের পক্ষে একটা দূরত্বের পরে আর অতিক্রম করা সম্ভব নয়৷ এর মধ্যে সব থেকে আলোচিত মাধ্যম হল রেডিও তরঙ্গ৷ বিজ্ঞানীরা ভাবলো এমন কি হতে পারে না যে, অন্য কোন গ্রহ থেকে কেউ আমাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে? আর যদি সেই চেষ্টা কেউ করেও থাকে তবে রেডিও তরঙ্গ এর মাধ্যমেই সেই চেষ্টাটি করবে। আর যদি তা হয়ে থাকেই, তবে মহাকাশ থেকে যে রেডিও তরঙ্গ আসছে তা পর্যবেক্ষণ করে দেখা উচিত৷ এই উদ্দেশ্য কে সামনে রেখে Search for Extraterrestrial Intelligence সংক্ষেপে SETI শুরু হয়৷ প্রথম SETI নিয়ে আলোচনা শুরু হয় ১৯৫৯ সনে৷ Drs. Philip Morrison এবং Guiseppe Coconni সেই সময় Nature পত্রিকাতে প্রথম Searching for Interstellar Communication নামে একটি প্রবন্ধ লিখেন৷ সেটিই এই SET এর সূত্রপাত ঘটায়৷ কেউ যদি সেই প্রবন্ধটি পড়তে চাও তবে এইখানে পড়ে দেখতে পারবে

Contact সিনেমাতে এইরকমই Ellie Arroway ও তার সঙ্গী গবেষকরা আকাশের রেডিও তরঙ্গ বড় বড় টেলিস্কোপ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করে ও পরিশেষে তারা একটি গ্রহ থেকে তরঙ্গ পায় এবং তা দিয়ে তারা মহাকাশযান তৈরি করে৷ কিন্তু কল্পনার সেই জগৎ নয় বাস্তবেও ঠিক একই রকম ভাবে বিজ্ঞানীরা খোঁজ করার চেষ্টা করছেন যে মহাকাশে অন্য কোন গ্রহ থেকে কেউ আমাদেরকে কোন সংকেত পাঠালো কিনা? বিজ্ঞানী যে অদ্ভূত কাজ করে, তা নিশ্চয় বুঝতে পারছো। তবে অদ্ভূত শোনালেও এর জন্য কাজ করছে অনেক বাঘা বাঘা বিজ্ঞানীরা।

মহাকাশের অন্য কোন গ্রহ থেকে বুদ্ধিমান কেউ যদি রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে কোন তথ্য পাঠায় তবে তা এই তরঙ্গগুলির মধ্যে কোথায় না কোথাও খুঁজলে তাদের পাঠানো তথ্য পাওয়া যাবে৷ এছাড়া যদি কোন সিগন্যাল কোন গ্রহ থেকে পাঠানও হয় তবে কত চ্যানেলে পাঠাচ্ছে তা জানাও একটি বড় সমস্যা৷ কেননা অসংখ্য চ্যানেল দিয়ে তা পাঠানো সম্ভব৷ ব্যাপারটা অনেকটা আমাদের সাধারণ রেডিও এর চ্যানেল এর সাথে মিল আছে৷ কোন রেডিও স্টেশন ধরবার জন্য রেডিওর নব ঘুরিয়ে আমরা চ্যানেল পরিবর্তন করতে থাকি৷ কিন্তু মহাকাশের রেডিও তরঙ্গকে পর্যবেক্ষণ করবার জন্য অনেক বড় রেডিও টেলিস্কোপ দরকার এবং সেগুলি পর্যবেক্ষণ করবার জন্য অনেক সুপার কম্পিউটার দিয়ে যাচাই করা দরকার৷ কিন্তু একক কোন প্রতিষ্ঠান বা গবেষণা কেন্দ্রের পক্ষে এই বিশাল ক্যালকুলেশন বা গণনা করে দেখা কঠিন৷ সবথেকে বড় সমস্যা হল মহাকাশ থেকে যত রেডিও তরঙ্গ আসছে তার প্রায় সবই Noise (অপ্রীতিকর শব্দ, গোলমাল শব্দ) এ ভরা থাকে৷ উপরের চিত্রে এমনি একটি Arecibo রেডিও টেলিস্কোপ এর ছবি তোমাদেরকে দেখালাম৷ ছবিতে ছোট বলে মনে হলেও এটি কিন্তু অনেক বড় আকারের।

SETI এর শুরুর গল্প

১৯৯৯ সনে বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ে Dan werthimer‍ ও David P. Anderson দুজন বিজ্ঞানী SERENDIP প্রজেক্ট এ কাজ করছিলেন৷ তারা দেখেন যে Arecibo এন্টিনা থেকে যে তথ্য প্রজেক্ট এ ব্যবহৃত হয় তার একটা বৃহত্তর অংশই পর্যবেক্ষণ করে দেখা হয় না৷ তার একটি কারণ হল এইগুলি পর্যবেক্ষণ করে দেখার জন্য বিশাল বিশাল সুপার কম্পিউটারের প্রয়োজন হবে, আর তখন তাদের পক্ষে এত কম্পিউটার কেনা সম্ভব নয়৷ বিজ্ঞানীরা ভাবতে বসলেন কীভাবে এই কাজটি করা যায়? তারা দেখলেন যে যদি সেই তথ্যগুলিকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে ভাগ করে নেয়া হয় তবে সাধারণ কম্পিউটার এর মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করে পরীক্ষা করে দেখা সম্ভব যে সেটির ভিতরে মহাকাশ থেকে পাঠানো কোন সংকেত লুকানো আছে কিনা। সাধারণ কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা যখন তাদের কম্পিউটারটি ব্যবহার করে না তখন এই ক্যালকুলেশনের জন্য কম্পিউটারটি ব্যবহার করা যায়৷ তারা Seti@home নামের একটি স্ক্রিনসেভার (Screensaver) তৈরি করেন৷

তোমরা কি কখনও এই স্ক্রিনসেভার তোমার কম্পিউটারে ব্যবহার করেছ? এটি একটি সাধারণ প্রোগ্রাম, যখন কম্পিউটার দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার করা হয় না, তখন তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয় ও স্ক্রিনে বিভিন্ন ছবি দেখা যায়৷ এই স্ক্রিনসেভারটি বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ের Seti এর ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে সাধারণ ব্যবহারকারীরা তাদের কম্পিউটারের অলস সময়টি এই প্রোজেক্টে ডোনেট করতে পারে। এই থেকে শুরু হল বিশাল কর্মযজ্ঞ।

ছবি: SETI প্রোজেক্টে অংশ নিয়ে এই প্রবন্ধের লেখক তার কম্পিউটারের ২২ হাজার ঘন্টা ব্যবহার করেছেন বিজ্ঞানের কাজে।

SET এর কর্মযজ্ঞ

SETI@home প্রকল্পটি ১৯৯৯ সালে শুরু হয়েছিল এবং প্রায় ২০ লক্ষ স্বেচ্ছাসেবক তাদের কম্পিউটারের ক্ষমতা প্রদান করেছিলেন, এবং এ পর্যন্ত ২২ লক্ষ CPU বছরের সমান প্রসেসিং শক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এর অর্থ হলো, যদি একটি CPU ২২ লক্ষ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করত, তবে এটি যা করতে পারত, সেই পরিমাণ কাজ SETI@home প্রকল্প স্বল্প সময়ে করে ফেলেছে। কি ভাবতেই অবাক হতে হচ্ছে তাই না? কত বিশাল ছিলে এর কর্মযজ্ঞ।

SETI কি চলমান?

SETI@home প্রকল্পটি ১৯৯৯ সাল থেকে বিপুল পরিমাণে রেডিও ডেটা সংগ্রহ করেছে। বিশাল ডেটাসেটের কারণে গবেষকরা এ পর্যন্ত প্রাপ্ত সমস্ত ডেটা বিশ্লেষণে মনোনিবেশ করতে চেয়েছিলেন। এত বেশি ডেটা সংগ্রহ করার পর, তারা মনে করলেন যে নতুন ডেটা সংগ্রহের বদলে পুরোনো ডেটার বিস্তারিত বিশ্লেষণ করা বেশি জরুরি। SETI@home পরিচালনা করা এবং জনসাধারণের অংশগ্রহণের ব্যবস্থাপনা করা বেশ সময় এবং সম্পদসাপেক্ষ ছিল। প্রকল্পটি থামিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে, তারা এই সম্পদগুলোকে গবেষণার অন্যান্য দিক যেমন—বুদ্ধিমান রেডিও সংকেতের খোঁজার উন্নত পদ্ধতি তৈরি করার জন্য ব্যবহার করতে চেয়েছিল। পরবর্তিতে ২০২০ সনে SETI@home প্রকল্পটি স্থগিত করার ঘোষনা দেয়া হয়।

SETI@home প্রকল্পটি “hibernate” অবস্থায় রয়েছে, অর্থাৎ, এটি পুরোপুরি বন্ধ হয়নি এবং ভবিষ্যতে আবারও সক্রিয় হতে পারে। যদি নতুন ডেটা সংগ্রহ বা পরবর্তী ধাপের গবেষণা প্রয়োজন হয়, তবে SETI@home আবার চালু হতে পারে।

কি আফসোস হচ্ছে এমন প্রকল্পতে অংশ না নিতে পেরে? আফসোস করো না, তোমাদের জন্য সুখবর নিয়ে আনছি নিম্নে।

বিজ্ঞানের কাজে আমাদের কম্পিউটারকে ব্যবহার

যদিও মূল SETI@home প্রকল্পটি বর্তমানে স্থগিত রয়েছে, সাধারণ মানুষ এখনও তাদের কম্পিউটারের প্রসেসিং ক্ষমতা বিজ্ঞান গবেষণায়, বিশেষ করে জ্যোতির্বিজ্ঞান ও মহাকাশ গবেষণায়, অবদান রাখতে পারে BOINC (Berkeley Open Infrastructure for Network Computing) প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে। BOINC প্ল্যাটফর্মটি SETI@home-এর ভিত্তি ছিল এবং এটি বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রকল্পে বিতরণকৃত কম্পিউটিং-এর জন্য সমর্থন প্রদান করে। যদিও SETI@home প্রকল্পটি বর্তমানে কাজ বন্ধ রেখেছে, BOINC প্ল্যাটফর্মে এখনও বেশ কিছু প্রকল্প রয়েছে যা জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত ডেটা বিশ্লেষণ বা মহাকাশ গবেষণা সংক্রান্ত সিমুলেশন নিয়ে কাজ করে। এখানে কিছু বিকল্প প্রকল্প রয়েছে যেখানে তোমরা তোমাদের কম্পিউটারের প্রসেসিং ক্ষমতা অবদান রাখতে পারো:

AstroPulse

এটি SETI@home-এর সাথে সম্পর্কিত একটি প্রকল্প, যা রেডিও সিগন্যাল এবং পালস বিশ্লেষণ করে। এটি রেডিও পালস খোঁজার চেষ্টা করে (যেমন, দ্রুত ঘূর্ণনশীল নিউট্রন তারকা বা অন্যান্য উৎস থেকে আসা)। এর বর্তমান কার্যক্রম বিভিন্ন হতে পারে, তবে তুমি BOINC প্রকল্প তালিকার মাধ্যমে এর আপডেট পেতে পার।

Einstein@Home

এই প্রকল্পটি ঘূর্ণায়মান নিউট্রন তারকা (পালসার) থেকে আসা মহাকর্ষীয় তরঙ্গ খোঁজার চেষ্টা করে এবং রেডিও ও গামা রে ডেটাতে পালসার খুঁজে বের করে। এটি BOINC প্ল্যাটফর্মের অন্যতম সক্রিয় জ্যোতির্বিদ্যা প্রকল্প এবং এতে স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের কম্পিউটারের ক্ষমতা দিয়ে এই মহাজাগতিক ঘটনার সন্ধানে সাহায্য করতে পারে। ওয়েবসাইট: einsteinathome.org

MilkyWay@Home

এই প্রকল্পটি আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির একটি খুব সঠিক ৩ডি মডেল তৈরি করার জন্য কাজ করে, যেখানে Sloan Digital Sky Survey থেকে প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহার করা হয়। এটি গ্যালাক্সির তারকাদের গতিবিধি সিমুলেট করে, যা মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির গঠন ও গঠনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে। ওয়েবসাইট: milkyway.cs.rpi.edu

BOINC সাধারণ অংশগ্রহণ

এই প্রকল্পগুলিতে অংশগ্রহণ করবার জন্য তোমার BOINC সফটওয়্যারটি তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড এবং ইনস্টল করে নিতে হবে। এরপরে Einstein@Home, MilkyWay@Home এর মতো তোমার আগ্রহের প্রকল্প নির্বাচন করে সেটির জন্য তোমার কম্পিউটারের অব্যবহৃত অংশটি ব্যবহার করতে দিতে পারো। BOINC সফটওয়্যারটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজের ইউনিট ডাউনলোড করবে এবং তোমার কম্পিউটার যখন অব্যবহৃত থাকবে তখন গণনা চালাবে। তুমি কতটুকু প্রসেসিং ক্ষমতা ব্যবহার করতে চাও সেটিও নির্ধারণ করতে পারেন।

পরিশেষ


বর্তমানে প্রতিবছরই কম্পিউটারের দাম কমছে৷ আমরা খুব অল্প সময়ের জন্য আমাদের কম্পিউটার ব্যবহার করি, কিন্তু যখন কম্পিউটারটি ব্যবহার করিনা, তখন এই প্রজেক্ট এ অংশ নিয়ে আমাদের কম্পিউটারের একটি সুন্দর ব্যবহার করতে পারি৷ ফলে যখন কম্পিউটারের দাম কমে যাবে তখন অন্তত এই বলে সান্ত্বনা পেতে পারি যে আমাদের কম্পিউটারটি বিজ্ঞান এর জন্য কিছু কাজ করছে৷

অবশ্য এর বিপরীতে অনেকই এই Seti কে অর্থ ও সময়ের অপচয় বলে মনে করেন৷ কেননা আজ পর্যন্ত এই প্রজেক্টের ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট কোন আশার আলো দেখা যায়নি৷ আজ পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে তাতে শুধু মাত্র কিছু Noise পাওয়া গেছে৷ অন্য কোন গ্রহের কোন পাঠান তথ্য পাওয়া যায়নি৷ কিন্তু আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি যে, যদিও তাতে কারো পাঠান কোন তথ্য নাও পাই তবুও এটা তো অন্তত আমরা সুষ্পষ্ট ভাবে বলতে পারবো যে সেখানে কারো পাঠান কোন তথ্য নেই৷ যদি তা না দেখতাম তবে তা অজানাই থেকে যেত৷ ব্যাপারটা অনেক অন্ধকার ঘরের মত৷ যদি আপনার পাশে কোন অন্ধকার ঘর থাকে আর যদি তা আলো জ্বেলে দেখেন যে, সেই ঘরে কিছুই নেই৷ তবে সেই আলো জ্বেলে দেখার হয়তো কোন মূল্য নেই৷ কিন্তু যদি সেই অন্ধকার ঘরটি না দেখতেন, তবে জানতে পারতেননা যে তাতে কি আছে৷ আলো জ্বেলে পরখ করে দেখলে, এইটুকু অন্তত সন্দেহাতিত ভাবে বলতে পারেন যে, ওই ঘরে কিছু নেই৷ Seti প্রোজেক্টটিও সেরকম।

SETI@home প্রকল্পের মাধ্যমে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক অর্জন এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, যা ভবিষ্যতের গবেষণায় কাজে লাগতে পারে। SETI@home প্রকল্পটি জনসাধারণের অংশগ্রহণে গণনার কাজ সম্পন্ন করেছে এবং এভাবে বিজ্ঞানের জন্য একটি নতুন ধারা তৈরি করেছে, যেখানে বিশ্বজুড়ে সাধারণ মানুষ তাদের কম্পিউটারের অব্যবহৃত শক্তি গবেষণার কাজে ব্যবহার করতে পেরেছে। তোমাদের কম্পিউটারের অব্যবহৃত অংশটুকু বিজ্ঞানীদের কাজে উৎসর্গ করার মাধ্যমে তোমরাও বিজ্ঞানের কাজে অবদান রাখতে পারবে এবং একদিন তোমরাও বড় বিজ্ঞানী হয়ে গড়ে উঠবে।

Share
Written by
ড. মশিউর রহমান -

ড. মশিউর রহমান বিজ্ঞানী.অর্গ এর cofounder যার যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০৬ সনে। পেশাগত জীবনে কাজ করেছেন প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী ও শিক্ষক হিসাবে আমেরিকা, জাপান, বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরে। বর্তমানে তিনি কাজ করছেন ডিজিটাল হেল্থকেয়ারে যেখানে তার টিম তথ্যকে ব্যবহার করছেন বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবার জন্য। বিস্তারিত এর জন্য দেখুন: DrMashiur.com

3 Comments

  • আমার এই লিখাটি পড়ে খুব ভালো লাগলো এবং আমি তাতে অংশ নিতে আগ্রহী। কিন্তু আমি যদি কোন কারণে ১৫ দিন বা ১ মাস করার পর আর না করি তাহলে কিভাবে তা বন্ধ করবো? জানাবেন।

  • SETI কাজ করবার সময় একটি ব্লক করে করে কাজ করে। মানে হল, সার্ভার থেকে একটি ব্লক কাজ ডাউনলোক করে, তারপর তা আপনার কম্পিউটারে এনালাইসিস করে। সেই ব্লকের কাজটি শেষ হলে পুনরায় তা সার্ভারে পাঠিয়ে দেয়। একটি ব্লক কাজ বা এনালাইসিস শেষ করতে সাধারণত কয়েক ঘন্টা এর প্রয়োজন হয়। সুতরাং আপনার যখন ইচ্ছে তখন SETI রান করে কাজ করাতে পারেন আবার যখন কম্পিউটারে জরুরী কাজ করবেন তখন SETI বন্ধ করে রাখতে পারেন। আমরা বর্তমানে যে ক্লাউড ও গ্রীড কম্পিউটার বলি, তার সূচনাটি হয়েছি এ্‌ই সেটি এর মাধ্যমে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ফ্রি ইমেইল নিউজলেটারে সাবক্রাইব করে নিন। আমাদের নতুন লেখাগুলি পৌছে যাবে আপনার ইমেইল বক্সে।

বিভাগসমুহ

Related Articles
কিভাবে কাজ করে?পরিবেশ ও পৃথিবী

সোলার সেল বা সৌরকোষ কীভাবে কাজ করে?

পরিচিতি সোলার সেল বা সৌরকোষের এর অপর একটি নাম হল, ফটোভোলটাইক সেল।...

কলামকিভাবে কাজ করে?

অগ্নি নির্বপক যন্ত্র সমন্ধে কিছু তথ্য

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে আরো নতুন নতুন সংবাদ জানতে সাবস্ক্রাইব করুন। [mc4wp_form...

কিভাবে কাজ করে?

নতুন পদ্ধতির ট্রাকিং : ইনডোর বেসড পজিশনিং সিস্টেম

ইংরেজিতে এটি Indoor Based Positioning System অথবা Location Based Service নামে পরিচিত।...

কম্পিউটার টিপসকিভাবে কাজ করে?

ই-মেইল সার্ভার সিস্টেম যেভাবে কাজ করে

লেখাটি অনলাইন থেকে সংগ্রীহিত। মূল লেখক মিলন মনি ইমেইল কি? ইলেকট্রনিক মেইলের...

কিভাবে কাজ করে?

সৌরশক্তির বিমান – Solar-Powered Aircraft

  Dedicated to: Prof. Khalilur Rahman, Department of Mathematics, Habibullah Bahar College,...

Three Columns Layout

গবেষণার তথ্য ও বিজ্ঞানীদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে, বিজ্ঞানী.অর্গ নবীন প্রজন্মকে গবেষণার প্রতি অনুপ্রাণিত করে।

Contact

biggani.org❤️gmail.com

Biggani.org connects young audiences with researchers' stories and insights, cultivating a deep interest in scientific exploration.

বিজ্ঞানী অর্গ (biggani.org) বাংলাদেশি বিজ্ঞানীদের একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে গবেষণা ও বিজ্ঞান নিয়ে বাংলা ভাষায় তথ্য ও সাক্ষাৎকার প্রচার করে – নবীনদের গবেষণা ও উচ্চশিক্ষায় প্রেরণা দেয়া হয়।

যোগাযোগ:

biggani.org@জিমেইল.com

biggani.org, a community of Bangladeshi scientists, shares interviews and information about researchers and scientists in Bengali to inspire young people in research and higher education.