অতিথি লেখক- আজিজুল হক
সহকারী অধ্যাপক, ইয়েংনাম বিশ্ববিদ্যালয়।
বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য আসার পর অনেক কিছু একসাথে সামলাতে হয়। নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া, পড়াশোনা, গবেষণা, দৈনন্দিন কাজ, একাকীত্ব সবই একেকটা চ্যালেঞ্জ। দেশের বাইরে কেউ আপনার রক্তের আত্মীয় নয়। এখানে সবকিছুই চলে give and take ভিত্তিতে। আবেগ বা মানবতার জায়গায় বেশি গুরুত্ব পায় আপনার মেধা, পরিশ্রম এবং কাজের ফলাফল। দিনশেষে সবাই হিসাব করে আপনি কী আউটপুট দিতে পারলেন। অনেক প্রফেসরের ভাষায় ল্যাব কোনো চ্যারিটি অর্গানাইজেশন না, আউটপুট নেই মানে আপনিও নেই।
উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে এলে একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি নিচের বিষয়গুলোতেও অভ্যস্ত হওয়া জরুরি।
১. না বলতে শিখুন।
২. নিজের পরিবার, ল্যাব ও গবেষণাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিন।
৩. একাডেমিক ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখুন।
৪. সবসময় সময় মেনে চলার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৫. নিয়মিত ক্লাস, মিটিং ও ল্যাবে সময়মতো উপস্থিত থাকুন।
৬. অফিস বা ল্যাব সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার অভ্যাস করুন।
৭. বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসোর্স ব্যবহার শিখে নিন।
৮. সুপারভাইজারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন।
৯. কিছু না বুঝলে নির্ভয়ে প্রশ্ন করুন।
১০. ল্যাবমেটদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ ও পেশাদার সম্পর্ক বজায় রাখুন।
১১. ইমেইল ও অফিসিয়াল যোগাযোগে শিষ্টাচার মেনে চলুন।
১২. গ্রুপ অ্যাসাইনমেন্ট ও টিমওয়ার্কে সক্রিয়ভাবে অংশ নিন।
১৩. গবেষণায় ধৈর্য ধরুন, ফল পেতে সময় লাগে।
১৪. ডেডলাইনের আগেই কাজ শেষ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
১৫. প্রতিদিন অল্প হলেও নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করুন।
১৬. প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য কনফারেন্স, সেমিনারে অংশ নিন।
১৭. গবেষণার অগ্রগতি নিয়মিত পর্যালোচনা করুন।
১৮. নিজের কাজের জন্য নিজেকে পুরস্কৃত করুন।
১৯. রিসার্চের পাশাপাশি যোগাযোগ দক্ষতা বাড়ান।
২০. কাজের সময় অফিসের নিয়ম-কানুন মেনে চলুন।
২১. নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন থাকুন।
২২. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সময়মতো নবায়ন করুন।
২৩. স্কলারশিপ ও ফান্ডিং–সংক্রান্ত নিয়মিত তথ্য রাখুন।
২৪. বিদেশি আইন ও নিয়মনীতি সম্পর্কে সচেতন থাকুন।
২৫. ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত নিয়ম-কানুন ভালোভাবে মেনে চলুন।
২৬. সংশ্লিষ্ট দেশের ভাষা শেখার চেষ্টা করুন।
২৭. স্থানীয় সাংস্কৃতিক পার্থক্য গ্রহণ করার মানসিকতা গড়ে তুলুন।
২৮. বাস/ট্রেন কার্ড, আইডি, ইনস্যুরেন্সসহ প্রয়োজনীয় কাজগুলো শুরুতেই সেরে ফেলুন।
২৯. অবসরে একাকীত্ব কাটাতে শখের কিছু কাজে নিজেকে যুক্ত করুন।
৩০. মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিন, প্রয়োজনে প্রকৃতিতে সময় কাটান।
৩১. নিজের আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জীবনযাপন করতে শিখুন।
৩২. ধর্মীয় বিধিনিষেধ মেনে স্থানীয় খাবারের সঙ্গে অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টা করুন।
৩৩. বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতিকে সম্মান করুন।
৩৪. নিজের দেশের সংস্কৃতিকে গর্বের সঙ্গে ধারণ করুন।
৩৫. প্রফেসর চাপ দিচ্ছেন মানে কাজ ঠিকমতো করছেন না, এটা বুঝতে শিখুন।
৩৬. শারীরিক সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসা নিন।
৩৭. বিভিন্ন দেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন, দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত হবে।
৩৮. পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন।
৩৯. হতাশাগ্রস্ত ও নেতিবাচক মানুষদের এড়িয়ে চলুন।
৪০. নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা না করে নিজের অগ্রগতির দিকে নজর দিন।
৪১. নিজের ভুলের দায়িত্ব নিজেই নিন, অন্যকে দোষারোপ করবেন না।
৪২. অন্যের কথায় কাউকে বিচার না করে নিজে যাচাই করুন।
৪৩. সবার সঙ্গে মিশুন, তবে নিজের বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নিন।
৪৪. কারও ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হওয়া বন্ধ করুন।
৪৫. অন্যকে সন্তুষ্ট করতে বা লোক দেখানোর জন্য কাজ করার অভ্যাস ত্যাগ করুন।
৪৬. নিজের বুদ্ধিতে চলার অভ্যাস গড়ুন।
৪৭. অপ্রয়োজনীয়ভাবে নিজেকে বড় করে দেখানোর অভ্যাস ত্যাগ করুন।
৪৮. ব্যক্তিগত বা পারিবারিক সমস্যা সবাইকে বলা থেকে বিরত থাকুন।
৪৯. আমি তো অনেক পরিশ্রম করি, আর সবাই শুধু আরামে থাকে, এই মনোভাব বদলান।
৫০. সামাজিকতা রক্ষা করতে গিয়ে নিজের ক্ষতি করবেন না।
৫১. লোক কী ভাববে বা বলবে, এই ভয়কে নিজের সিদ্ধান্তের পথে বাধা হতে দেবেন না।
৫২. কাউকে নিজের ব্যক্তিগত সীমানা অতিক্রম করতে দেবেন না।
৫৩. নিজের চিন্তা ও আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে শিখুন।
Leave a comment