আজ আমরা সাক্ষাৎকার নিয়েছি এক উদীয়মান গবেষক মোঃ সাইফুর রহমানের, যিনি টেক্সাস এ অ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পিএইচডি প্রার্থী হিসেবে গবেষণা করছেন। তিনি প্রতিস্থাপনযোগ্য এবং পরিধানযোগ্য ডিভাইস উদ্ভাবনে মনোনিবেশ করেছেন, যা রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা এবং পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। তিনি বায়ো-মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে অনুপ্রেরণাদায়ক কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। তার মতে, এই গবেষণাক্ষেত্রটি শুধুমাত্র জীববিজ্ঞানের ছাত্রদের জন্য সীমাবদ্ধ নয়; বরং পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ডাটা সায়েন্স এমনকি চিকিৎসা শাস্ত্রের লোকজনও এই ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারেন। তিনি বলেন, গণিত, জীববিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা ও রসায়নের মৌলিক ধারণা থাকলে এবং বায়ো-মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আগ্রহ থাকলে, যে কেউই এই বিষয়ে পড়াশোনা করতে পারেন।
গবেষক হিসেবে সফল হতে হলে কী গুণাবলী থাকা উচিত,
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গবেষণায় নিজের আগ্রহের ক্ষেত্রটি খুঁজে বের করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণার পথে ধৈর্য রাখা, উদ্দীপনা ধরে রাখা এবং লক্ষ্যের প্রতি অটুট থাকা খুবই প্রয়োজন।” কোন গবেষণা ক্ষেত্র তাদের উদ্দীপ্ত করে এবং কোন বিষয় নিয়ে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, সেটি খুঁজে নিতে হবে। এছাড়াও, ধৈর্য, উদ্দীপনা, ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, শৃঙ্খলা এবং লক্ষ্য স্থির রাখার মনোভাব থাকা আবশ্যক।
তিনি আরও জানান,
তার আগ্রহের বিষয়টি তিনি খুঁজে পান যখন তিনি দক্ষিণ কোরিয়াতে মাস্টার্স করছিলেন। বিভিন্ন দেশের গবেষকদের সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে বৈশ্বিক সমস্যাগুলোর সমাধান খুঁজে পাওয়ার সুযোগ তাকে উদ্দীপ্ত করে। যদিও তিনি বাংলাদেশে চাকরি করতেন, তবুও তার গবেষণার প্রতি আগ্রহ তাকে কোরিয়াতে নিয়ে যায় এবং বর্তমানে তিনি আমেরিকাতে পিএইচডি করছেন।
তাকে জিজ্ঞেস করা হয়,
গবেষণার জন্য বিদেশে পড়াশোনায় কী ধরনের প্রতিবন্ধকতা তিনি মোকাবেলা করেছেন। তিনি বলেন, নতুন দেশে সংস্কৃতির পরিবর্তন একটি বড় প্রভাব ফেলে। বিশেষত, এমন দেশে গেলে যেখানে ইংরেজি প্রথম ভাষা নয়, তখন ভাষা শেখা, নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হওয়া এবং যোগাযোগ গড়ে ভোলা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। বিদেশে পড়াশোনার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, নতুন দেশে মানিয়ে নিতে গিয়ে ভাষা ও সংস্কৃতির বিভিন্নতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো চ্যালেঞ্জিং হলেও, এসব অভিজ্ঞতা তাকে ব্যক্তিগত এবং পেশাগতভাবে সমৃদ্ধ করেছে। ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক পার্থক্য নতুন সম্পর্ক তৈরিতে সহায়ক ছিল এবং তার জন্য এগুলো ইতিবাচক ও উপভোগ্য ছিল।
বর্তমানে তিনি ট্রান্সলেশনাল রিসার্চ করছেন,
যার লক্ষ্য হলো ল্যাবে আবিষ্কৃত কৌশলগুলো রোগীর শুশ্রুষায় কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা। বিশেষ করে, তিনি মানুষের শরীরে প্রতিস্থাপনযোগ্য এবং পরিধানযোগ্য ডিভাইস উদ্ভাবনে কাজ করছেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে তার গবেষণা ভবিষ্যতে নিউরোলজিক্যাল এবং কার্ডিওভাসকুলার জনিত রোগের নির্ণয়, পর্যবেক্ষণ এবং চিকিৎসায় উন্নতি আনবে।
বাংলাদেশের গবেষকদের জন্য তার পরামর্শ,
আমাদের স্থানীয় সমস্যাগুলো খুঁজে বের করে গবেষণায় সেই সমস্যাগুলোর সমাধান খুঁজতে মনোযোগী হতে হবে। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশে গবেষণা ক্ষেত্র আরো প্রসারিত করার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে এবং একটি নতুন আঙ্গিকে ভাবার প্রয়োজন রয়েছে।
নতুন গবেষকদের জন্য তার আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপসও রয়েছে,
তিনি বলেন, যোগাযোগ দক্ষতা তৈরি করা এবং প্রয়োজনীয় টুলস ব্যবহারে পারদর্শিতা অর্জন করা খুব জরুরি। ব্যাচেলর পর্যায়ের ছাত্রদের জন্য তিনি পরামর্শ দেন, কোনো প্রজেক্টে কাজ করে তার ফলাফল প্রকাশনা করার চেষ্টা করা উচিত, যাতে তাদের কাজের দক্ষতা প্রমাণিত হয়।
তাছাড়া, যারা উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাদের রেকমেন্ডেশন লেটারে শুধুমাত্র ‘ভালো ছাত্র’ হিসেবে উল্লেখ করাই যথেষ্ট নয়। সেখানে প্রার্থীর দক্ষতা এবং ক্ষমতা প্রমাণ করার জন্য সুনির্দিষ্ট উদাহরণ এবং বাস্তবপ্রমাণ থাকা উচিত। রেকমেন্ডেশন লেটারে এমন কোনো প্রফেসর বা লেকচারারের ইতিবাচক ও সঠিক মন্তব্য থাকা উচিত, যিনি ছাত্রটির সম্পর্কে গভীরভাবে জানেন এবং সত্যিকার অর্থেই তার সামর্থ্য ও অর্জন সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দিতে পারেন।
SOP বা স্টেটমেন্ট অব পারপাস লেখার ক্ষেত্রে তার পরামর্শ,
এটি যেন একটি সত্যিকারের গল্পের মতো শোনায়। SOP তে সহজ একটি বাস্তব গল্প থাকা উচিত, যা সত্য এবং প্রার্থীর ব্যক্তিত্ব ও শিক্ষার প্রতি তার আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। এতে প্রার্থীর পছন্দের বিষয়টির প্রতি যে আগ্রহ এবং অনুপ্রেরণা, তা যেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রকাশ পায়।
কখনো গবেষণায় অনুপ্রেরণা হারিয়ে ফেললে, মেন্টর বা সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। তার মতে, তার গবেষণা শুধুমাত্র গবেষণাগারে সীমাবদ্ধ না থেকে মানুষের জীবনে সরাসরি প্রভাব ফেলবে। তার কাজের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হবে এবং তাদের দেখানো সম্ভব হবে যে বিজ্ঞান কেবল গবেষণায় নয় বরং বাস্তব জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
অনেক সময় গবেষকরা কি নিয়ে কাজ করবেন তা নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন। তার মতে, সিমুলেশন বা পয়েন্ট অফ কেয়ার-এর সাশ্রয়ী সেন্সরগুলোর ব্যবহার করেও প্রচুর গবেষণা সম্ভব। উচ্চশিক্ষার সময় সিভিতে ফাঁকা থাকার প্রসঙ্গেও তিনি দারুণ পরামর্শ দেন; যদি সে সময়ে কোন প্রতিষ্ঠান বা গবেষণাগারে কাজ না থাকে, তবে নিজস্ব গবেষণার কাজ বা যা করেছেন, সেটি সিভিতে যুক্ত করা উচিত এবং তার বিশদ বিবরণ দেওয়া উচিত। তিনি নবীন গবেষকদের উৎসাহ দেন নিজেদের পছন্দের ক্ষেত্রটি খুঁজে নিয়ে গবেষণায় মনোযোগী হতে, এবং বলেন যে বাংলাদেশে গবেষণার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। উচ্চশিক্ষার জন্য আগ্রহী বাংলাদেশীদের তিনি গবেষণায় সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেন।
বিস্তারিত জানতে আমদের ইউটিউবে দেখুন——-https://youtu.be/Tn9FpMJU2oc
বিজ্ঞানী অর্গ এর পক্ষ থেকে আমরা মোঃ সাইফুর রহমানকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই। তার সঙ্গে এই সাক্ষাৎকার আমাদের জন্য সত্যিই এক আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা। তিনি নবীন গবেষকদের জন্য একটি দৃষ্টান্তস্বরূপ ব্যক্তিত্ব, যারা তার পথ অনুসরণ করে নিজেদের গবেষণায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারবে।
Emerging researcher Md. Saifur Rahman: Research experience and advice in biomedical engineering!
Today, we interviewed an emerging researcher, Md. Saifur Rahman is a Ph.D. candidate in the
Biomedical Engineering department at Texas A&M University. He is focused on developing
implantable and wearable devices that can be used for diagnosis, treatment, and monitoring. He
shared inspiring insights on the future potential of biomedical engineering. According to him,
this field is not restricted to biology students; rather, people from physics, chemistry, materials
science, mechanical engineering, data science, and even medical backgrounds can also
contribute. He said anyone interested in biomedical engineering, with a foundational
understanding of mathematics, biology, physics, and chemistry, can pursue studies in this field.
When asked about the qualities needed to be a successful researcher, he said, “The most
important thing in research is finding your area of interest. It’s crucial to have patience, maintain
enthusiasm, and stay focused on your goals.” He added that researchers should discover what
excites them and find the subjects they feel comfortable working on. Additionally, patience,
enthusiasm, consistent effort, discipline, and a focused mindset are essential qualities.
He further mentioned that he discovered his area of interest while doing his master’s in South
Korea. Working with researchers from different countries and finding solutions to global
problems motivated him. Although he was working in Bangladesh, his passion for research led
him to Korea, and he is now pursuing his Ph.D. in the United States.
When asked about the challenges he faced while studying abroad for research, he noted that
adapting to a new culture has a significant impact. Especially when going to a country where
English is not the first language, learning the language, meeting new people, and building
connections can be major challenges. Reflecting on his experience studying abroad, he said that
adapting to language and cultural differences was challenging but enriched him personally and
professionally. These differences helped him build new relationships, which he found to be
positive and enjoyable.
Currently, he is engaged in translational research to apply lab-discovered techniques in patient
care effectively. Specifically, he is working on developing implantable and wearable devices. He
believes that his research will contribute to advancements in diagnosing, monitoring, and treating
neurological and cardiovascular diseases in the future.
His advice for researchers in Bangladesh is to identify local problems and focus on finding
solutions to those issues through research. He believes there is tremendous potential to expand
the field of research in Bangladesh and that new perspectives are needed.
He also shared some essential tips for new researchers. He emphasized the importance of
developing communication skills and using essential tools proficiently. For undergraduate
students, he recommends working on projects and trying to publish the results to demonstrate
their skills.
Additionally, for those preparing for higher studies, he advised that recommendation letters
should do more than label the applicant as a ‘good student.’ They should include specific
examples and concrete evidence to showcase the applicant’s skills and abilities. A
recommendation letter should also include positive and accurate remarks from a professor or
lecturer who knows the student well and can provide detailed insights about their abilities and
achievements.
Regarding writing an SOP (Statement of Purpose), he suggests making it sound like a genuine
story. The SOP should contain a simple, true story reflecting the candidate’s personality and
passion for education. It should naturally convey the candidate’s interest and motivation for their
chosen field of study.
He also advised speaking with mentors or colleagues whenever one feels a loss of motivation in
research. In his view, his research will not remain confined to the lab but will directly impact
people’s lives. Through his work, he hopes to inspire the younger generation and show them that
science plays a vital role not only in research but also in real life.
Researchers often feel uncertain about what to focus on. He believes substantial research is
possible even with affordable sensors for simulations or point-of-care applications. He also gave
valuable advice on addressing gaps in one’s CV during higher education. If there is no work
experience from an organization or lab, one should include independent research or any work
done during that time with detailed descriptions. He encourages new researchers to find their
field of interest and dedicate themselves to their research, adding that there is vast potential for
research in Bangladesh. He motivates aspiring Bangladeshi students to engage in research
On behalf of Biggani.Org, we extend our sincere congratulations and best wishes to Md. Saifur Rahman. This interview with him is truly a joyful experience for us. He is an exemplary figure for young researchers, who will be able to follow his path and open new horizons in their research.
Leave a comment