[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””] বিজ্ঞানী.অর্গঃ বিজ্ঞানী.অর্গ এর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। প্রথমেই আপনার সমন্ধে আমাদের একটু বলুন।
ড. শরীফ মঈনুল হাসানঃ ধন্যবাদ। আমি শরীফ মঈনুল হাসান একজন বাংলাদেশী নাগরিক ।আমি বর্তমানে জাপানের কিয়োটো শহরে অবস্থিত স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি কোম্পানি তে একজন গবেষক হিসাবে কর্মরত আছি।আমার আদি বাড়ি নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার বাবরা গ্রামে। পিতার চাকরির সূত্রে আমি শৈশবে খুলনা তে অবস্থান করি। আমি খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এস এস সি, খুলনা সরকারি বি. এল কলেজ থেকে এইচ এস সি এবং খুলনা ইউনিভার্সিটি থেকে ২০০২ সালে ‘বায়োটেকনোলজি’ বিষয় এর উপর ব্যাচেলর ডিগ্রী অর্জন করি। অতঃপর আমি খুলনা ইউনিভার্সিটি থেকে এক বৎসর ‘ইনফরমেশন টেকনোলজি’ এর উপর ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করি এবং ঢাকা তে অবস্থিত ঔষুধ ও ডায়াগনসিস সম্পর্কিত কোম্পানিতে প্রায় দুই বৎসর চাকরি করি। শরীরে রোগের বিস্তার এবং রোগ প্রতিরোধ এর উপর আমার গবেষণা করার ইচ্ছা ছিলো। ২০০৭ সালে আমি জাপানের টোকিও ইউনিভার্সিটি তে মাস্টার ডিগ্রী কোর্সে এ ভর্তি হই। মাস্টার ডিগ্রী থিসিস বা গবেষণা পত্রে আমি দুই ধরণের ভাইরাস সম্পর্কিত ভ্যাকসিনের এন্টিবডির উপর গবেষণা করি। ‘জাপানিজ এনসেফালিটিস ভাইরাস’ যা এনসেফালিটিস জ্বরের জীবাণু এবং ‘রাবিস ভাইরাস’ জলাতঙ্ক রোগের জীবাণু নামে পরিচিত।এই রোগ গুলি প্রতিরোধে ইঞ্জেক্টবল ভ্যাকসিন পেশীতে প্রয়োগ করা হয়। নাকের মাধ্যমে এই ভ্যাকসিন গুলো কতটুকু কার্যকর তা ইঁদুর র উপর পরীক্ষা করা হয় আমার এই গবেষণা পত্রে। যেহেতু এইসব রোগের ভ্যাকসিন মানুষের শরীরের পেশীতে প্রয়োগ বা ইনজেকশন দেয়া যা অনেক ব্যাথার এবং ভয়ের কারণ হয়ে যায় বিশেষতঃ শিশুদের ক্ষেত্রে। শুধুমাত্র নাকের ভিতর একরকম বিশেষ এন্টিবডি বা এক ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরী হয় যা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে এবং এই ভ্যাকসিন মানুষের নাকে ব্যাথাহীন ও অনেক নিরাপদ ভাবে প্রয়োগ করা যেতে পারে।পরিশেষে এই গবেষণার ফলাফল এই রূপ যে একাধিক বার নাকের ভিতর নিৰ্দিষ্ট ভ্যাকসিন নিৰ্দিষ্ট পরিমাণ নিৰ্দিষ্ট রোগের জন্য প্রয়োগ করলে এটির ও কার্যকারিতা মানসম্পন্নমতভাবে নিরূপিত হতে পারে যা শুধুমাত্র এনিম্যাল মডেল হিসাবে নিৰ্দিষ্ট ধরণের ইঁদুর এর উপর গবেষণা করে প্রমাণিত। ২০০৯ সালে আমি জাপান এ টোকিও ইউনিভার্সিটি তে পিএইচডি কোর্সে ভর্তি হই এবং ২০১৩ সালে আমি পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করি । । অতঃপর আমি জাপানে ২ বৎসর একাডেমিক পোস্ট-ডক গবেষণা সম্পন্ন করি এবং পরে ৩ বৎসরের উপর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পোস্ট-ডক গবেষক হিসাবে কর্মরত আছি। [/box]
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]বিজ্ঞানী.অর্গঃ বর্তমানে আপনি কি নিয়ে গবেষনা করছেন?
ড. শরীফ মঈনুল হাসানঃ বর্তমানে আমি একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক কোম্পানির R & D তে একজন গবেষক হিসাবে কর্মরত। আমরা জানি ঔষুধের কম বা বেশি বিভিন্ন ধরণের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে। শরীর এর কোন কোন অঙ্গের উপর কি ধরণের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে, একটি ঔষুধ বা ড্রাগ একাধিক রোগের উপর প্রয়োগ করা যেতে পারা যায় কিনা, তার উপর অনলাইন ভিত্তিক শরীরের ২৪ টি বিভিন্ন অঙ্গের RNA/Ribonucleic acid এর transcriptome ডেটাসেট তৈরি করতে সাহায্য করছি যা ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল অবস্থা, স্নায়ুতন্ত্রের রোগ, হাড়ের রোগ ইত্যাদি গবেষণার জন্য প্রযোজ্য এবং এটি পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার প্রতিনিধিত্বকারী সামগ্রিক transcriptome ডেটাসেট যা D-iOrgans Atlas নামে পরিচিত বিগ ডেটাসেট । বিজ্ঞানী ও শিক্ষার্থীদের জন্য এই বিগ ডাটা বা এনালাইসিস র এটি একটি তথ্যসূত্র এবং যাকে বলা যেতে পারে নির্দিষ্ট রোগের ঔষুধের প্রভাব এর Artificial Intelligence or AI বিশ্লেষণ এর Atlas বা তথ্যসূত্র।এটি ওষুধের গবেষণা এবং প্রাথমিক ডায়াগনসিস বা রোগ সনাক্ত করার বায়োমার্কারদের আবিষ্কার করার জন্য ও একটি অত্যন্ত কার্যকরী তথ্যসূত্র। কয়েক মাস আগে এই বিষযের উপর এই ল্যাব থেকে একটি ওপেন এক্সেস জার্নাল পেপার CELL PRESS থেকে প্রকাশিত হয়েছে। [/box]
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]বিজ্ঞানী.অর্গঃ পিসিআর কি? এটি নিয়ে আপনি পিএইচডি করেছেন। এটি সমন্ধে আমাদের একটু বলুন।
ড. শরীফ মঈনুল হাসানঃ পিসিআর PCR বা POLYMERASE CHAIN REACTION একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি যা একটি ডিএনএ/DNA/Deoxyribonucleic acid থেকে অনেক ডিএনএ তৈরি করা হয় এর মাধ্যমে এবং এটি ডিএনএ সংশ্লেষণের জন্য ও ব্যবহৃত হয়।কোনো রোগের জীবাণুর ডিএনএ ও ক্যান্সার নির্ণয় করার জন্য ও এটি ব্যবহৃত হয়। আবার পিসিআর ছাড়া ও অন্য ভাবে জীবাণু ,হরমোন , টক্সিক বা বিষাক্ত পদার্থ নির্ণয় করা যায় যেমন, IMMUNO -ASSAY/ রোগের নির্ণয় পরীক্ষা পদ্ধতি। দুই পদ্ধতির কিছু ভালো এবং খারাপ গুনাগুন আছে। আবার এই পদ্ধিত গুলি অনেক সময় খুব ক্ষুদ্র বা অনেক অল্প পরিমান জীবাণু , হরমোন, টক্সিক বা বিষাক্ত পদার্থ সঠিক ভাবে নির্ণয় করতে পারে না। ধরা যাক, ক্যান্সার বা কোনো জীবাণু আক্রান্ত রোগের ক্ষেত্রে একটু আগে থেকে বা প্রাথমিকভাবে রোগ নির্ণয় করা যায় তাহলে ঐ রোগ সহজে চিকিৎসা করা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব যা অনেক জটিল অসুখের অবস্থা বা রোগীকে মারা যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে। সাধারণতঃ প্রাথমিক ভাবে যে কোনো রোগের জীবাণু বা বায়োমার্কার অনেক কম পরিমান থাকে মানুষের বা প্রাণীর শরীরে। আর এই কম পরিমান রোগের জীবাণু বা বায়োমার্কার নির্ণয় করার জন্য প্ৰয়োজন আলট্রা সংবেদনশীল/সেনসিটিভ বা হাইলি সফিস্টিকেটেড রোগ নির্ণয়ন পরীক্ষা পদ্ধতি। আমার পিএইচডি গবেষণা পত্রে সেনসিটিভ ‘রিয়েল টাইম pcr’ এবং সেনসিটিভ ‘OPEN স্যান্ডউইচ IMMUNO –ASSAY’ দুইটি রোগ নির্ণয়ন পদ্ধতির সংযোগ করে হাইলি সেনসিটিভ রোগ নির্ণয়ন পরীক্ষা পদ্ধতি যা ‘OPEN স্যান্ডউইচ IMMUNO-pcr’ নামে পরিচিত রোগ নির্ণয়ন পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে সক্ষম হই । রোগ দুইটির বায়োমার্কার, একটি হইতেছে ‘এস্ট্রাডিওল’ হরমোন যা মেয়েদের সেক্স হরমোন যা কিনা প্রেগন্যান্সির এবং আর একটি হইতেছে ‘Bone Gla protein’/(BGP,osteocalcin) হাড়ের ক্যান্সার বায়োমার্কার যা বয়স্ক লোকদের ব্যাক BONE/হাড়ের ক্যান্সার এর জন্য গুরুত্ব্পূর্ণ। এই নির্ণয়ন পরীক্ষা পদ্ধতি, দুইটি ভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল এ প্রকাশিত হয়েছে, যার ভিতর একটি বেস্ট রিসার্চ আর্টিকেল হিসাবে বিবেচিত হয়েছে। এছাড়া ও আমার পিএইচডি গবেষণা পত্রে, ‘বার্ড ফ্লু’ নামক ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস নির্ণয় করার জন্য এক ধরনের ‘রিকম্বিট্যান্ট বা সন্নিবেশিত এন্টিবডি’ যা এক ধরনের সন্নিবেশিত প্রোটিন গবেষণার ফলাফল হিসাবে একটি অধ্যায়ে সন্নিবেশিত করা আছে যা কিনা আমি পিএইচডি গবেষণার সময় সম্পন্ন করি । আর এই সব গবেষণার জন্য PCR পদ্ধতি ও ব্যবহার করা হয়েছে।জাপান র ফুকুওকা শহরে অবস্থিত একটি জাপানিজ কোম্পানিতে আমার প্রথম ইন্ডাস্ট্রিয়াল পোস্ট-ডক গবেষণাতে আমি ‘হেমি-সেলুলাস’ নামক এক প্রকার জৈব অনুঘটক বা ‘এনজাইম’ উদ্ভাবনে ও এই পদ্ধতি ব্যবহার করি। [/box]
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]বিজ্ঞানী.অর্গঃ ঔষুধ আবিষ্কারে বায়োমার্কার বেশ ব্যবহৃত হয়। এটি কিভাবে কাজ করে?
ড. শরীফ মঈনুল হাসানঃ বায়োমার্কার একটি রোগের জৈবিক অবস্থা। এটি প্রাকৃতিকভাবে অণু, জিন বা চরিত্রগত যা দ্বারা একটি নির্দিষ্ট শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রোগ সনাক্ত করা যায়।অন্যভাবে বলা যায় একটি বায়োমার্কার কিছু রোগের অবস্থার তীব্রতা বা উপস্থিতির একটি পরিমাপযোগ্য সূচক।উদাহরণস্বরূপ, শরীরের তাপমাত্রা জ্বর এর জন্য একটি সুপরিচিত বায়োমার্কার, রক্তচাপ ও একটি সুপরিচিত বায়োমার্কার যা কিনা স্ট্রোকের ঝুঁকি নির্ধারণে ব্যবহৃত হয়, কোলেস্টেরল ক্রনিক ও ভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি সূচক একটি বায়োমার্কার এবং সি-রিঅ্যাক্টিভ প্রোটিন (সিআরপি) প্রদাহের জন্য একটি বায়োমার্কার ইত্যাদি । সাধারণত ডাক্তাররা রোগির অসুখের বায়োমার্কার যা পরিমাপযোগ্য সূচক দেখে নির্দিষ্ট রোগের জন্য নির্দিষ্ট ঔষধ ব্যবহার করেন। আবার বায়োমার্কার বেশ কয়েকটি উপায়ে ব্যবহারযোগ্য যেমন রোগের অগ্রগতি পরিমাপ সহ, একটি বিশেষ ক্যান্সার এর জন্য সবচেয়ে কার্যকর চিকিত্সাগত কার্যক্রম মূল্যায়ন এবং ক্যান্সার এর জন্য দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা বা এর পুনরাবৃত্তির মূল্যায়ন ইত্যাদি। ঔষুধ আবিস্কারের ক্ষেত্রে বায়োমার্কার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। একটি অসুখের নির্দিষ্ট বায়োমার্কার এর বিপরীতে নতুন ঔষুধ প্রযুক্তির নকশা তৈরি করা হয়।
আণবিক বায়োমার্কার প্রায়শই ঔষধ উন্নয়ন স্টাডিতে ব্যবহৃত হয়।উদাহরণস্বরূপ, প্রথম পর্যায় থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্লিনিকাল গবেষণার অধ্যায়গুলির জন্য নতুন ঔষুধের ডোজ স্থাপন করা এবং এর আনুপাতিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে (হ্রাস বা বৃদ্ধি) বায়োমার্কার ও ব্যবহৃত হয়। প্রাক মৌলিক এবং ক্লিনিকাল গবেষণা উভয় ক্ষেত্রেই অণু বায়োমার্কারগুলি ব্যবহার করা হয়।[/box]
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]বিজ্ঞানী.অর্গঃ Hay fever নিয়ে আপনি অনেক কাজ করেছেন। এর গবেষনা কেমন এগিয়েছে?
ড. শরীফ মঈনুল হাসানঃ প্রথম পোস্ট-ডক এর রিসার্চ প্রজেক্ট জাপানের টোকিওতে অবস্থিত juntendo university তে সম্পন্ন করি। এই রিসার্চ প্রজেক্ট এ আমি ‘Hay fever’ বা অ্যালার্জিক রাইনাইটিস রোগের এর উপর গবেষণা করি। জাপানের দুইটি গাছের একটির নাম ‘cedar’ এবং অন্যটির নাম Japanese cypress যা জাপানীজ ভাষায় ‘হিনোকি’ নামে পরিচিত। দুই ধরণের গাছ এর পরাগ দ্বারা সৃষ্ট ‘Hay fever’ বা অ্যালার্জিক রাইনাইটিস যা জাপানীজ ভাষায় ‘কাফুনসো’ নামে পরিচিত রোগ, এখানকার জাতীয় রোগ বলা যেতে পারে কারণ জাপানে অনেকই এই রোগে আক্রান্ত হয় । এই রোগটি, এই গাছগুলির পরাগ দ্বারা সৃষ্ট নাকের প্রদাহ যা ইমিউন সিস্টেম বা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার overreacts /অতিপ্রতিক্রিয়ার ফলাফল । উপসর্গগুলির মধ্যে নাক থেকে তরল পদার্থ ঝরা, খিঁচুনি এবং লাল চোখ, চোখের চারপাশ ফুলে যাওয়া ইত্যাদি অন্যতম। যেহেতু পরাগ নাকের মধ্যের কোষে ক্রিয়া করে সেহেতু কোষের কোন অংশে বা কোষের গাঠনিক প্রোটিন এর সাথে ক্রিয়া করে তা জানা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। আমি প্রথমবারের মত এক ধরণের প্রোটিন যার নাম ‘Filaggrin’ (filament aggregating protein) যা নাকের এপিথেলিয়াম কোষে গাঠনিক ইউনিট হিসাবে থাকে তা মলিকুলার বায়োলজি পদ্ধতিতে সনাক্ত করতে সক্ষম হই ।যা একটি জার্নাল এ প্রকাশিত হয়েছে। প্রোটিন যদি mutation বা চেঞ্জ হয় তাহলে কোষের গাঠনিক কাঠামো পরিবর্ত হয় ফলে কোষের ভিতর পরাগ , জীবাণু ঢুকে যেতে পারে যা কিনা এলার্জি তৈরী করে নাকের ভিতর। ভবিষ্যতে আরও অন্য কোনো ধরণের প্রোটিন নাকের এপিথেলিয়াম কোষে গাঠনিক ইউনিট হিসাবে আছে কিনা, কিভাবে mutation এবং এলার্জি হয় এটা নিয়ে অনেক গবেষণা করা যেতে পারে, যা এই রোগের সঠিক ঔষুধ আবিষ্কারের ক্ষেত্রে ভাল অবদান রাখতে পারে বলে আমি মনে করি। এই রোগের আপাতত একটু ভালো হবার ঔষুধ থাকলেও, সঠিক ঔষুধ যা কিনা এই রোগে আক্রান্ত রোগিকে পুরাপুরি দ্রুত সময়ের মধ্যে সুস্থ করে দেয় তা এখন পর্যন্ত নাই। [/box]
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””] বিজ্ঞানী.অর্গঃ আপনার গবেষনায় এখন কোন বিষয়টি বেশ চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করেন?
ড. শরীফ মঈনুল হাসানঃ প্রযুক্তির চেঞ্জ হয় সময়ের সাথে সাথে। এই প্রযুক্তি গুলির সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে চলা বা তৈরি হওয়া একটা চ্যালেঞ্জ। নিজের মতো করে কাজের সুযোগ অনেক ক্ষেত্রে হয়ে উঠে না বিশেষত ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ এর ক্ষেত্রে। গবেষণার জব গুলি সাধারনত প্রজেক্ট ভিত্তিক খন্ডকালীন চাকুরী। বিদেশের মাটিতে এই বিষয় গুলির সাথে মানিয়ে চলা বেশ চ্যালেঞ্জিং। [/box]
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]বিজ্ঞানী.অর্গঃ আপনি অনেকদিন ধরে জাপানে গবেষনা করছেন। জাপানে গবেষনার পরিবেশ সমন্ধে বিস্তারিত বলুন।
ড. শরীফ মঈনুল হাসানঃ জাপানে সব কিছুই পরিকল্পনামাফিক হয়। ছাত্ররা ছোট বেলা থেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারে তারা সাধারাত কি করতে চায় বা কি হতে চায় এবং সে সুযোগ গুলি সাধারণত এখানে থাকে । এদের শিক্ষা ব্যাবস্তা অনেকটা ফোকাসিং থাকে নির্দিষ্ট বিষয় গুলির উপর ফলে একজন ছাত্রকে তার পছন্দ অনুযায়ি নিজেকে তৈরী করতে পারে। এদের সব কিছুতেই গবেষণা এবং ভালো মানের কর্মপরিকল্পনা আছে । এদের সরকার এবং সমাজ এই ব্যাপারে অনেক সহযোগিতা করে। এরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পছন্দ করে এবং এদের অর্থনৈতিক উন্নতি এই বিষয়ের উপর ভিত্তি করে টিকে আছে। জাপানিজরা নিজ ভাষায় সব কিছু জানতে ও পড়তে পারে যা একজন ছাত্রকে নিজেকে গবেষক হিসাবে তৈরি করতে অনেক সাহায্য করে কারণ এরা নিজ ভাষায় অনেক জটিল বিষয় সহজ ভাবে জানতে ও বুঝতে পারে। সর্বোপরি এরা জাতি হিসাবে সুশৃঙ্খল, পরিশ্রমী এবং দেশপ্রেমিক।ফলে জাপান দেশ হিসাবে গবেষণা করার জন্য একটি আদর্শ জায়গা। [/box]
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]বিজ্ঞানী.অর্গঃ ভবিষ্যতে কি নিয়ে কাজ করতে চান?
ড. শরীফ মঈনুল হাসানঃ সম্ভব হলে বাংলাদেশে একাডেমিক জব এবং গবেষণা করতে চাই। সেই ক্ষেত্রে পরিবেশব, স্বাস্থ্য এবং খাদ্য সম্পর্কিত বায়োটেক প্রজেক্ট এ কাজ করতে চাই। যেমন অল্প খরচে রোগ এবং বিষাক্ত পদার্থ নির্ণয়ন পদ্ধতি উদ্ভাবন, পরিবেশবান্ধব এনজাইম বা জৈব-অনুঘটক, এন্টিবডি তৈরী করা ইত্যাদি। এই বিষয়গুলি আমাদের দেশের জন্য অনেক গুরণত্বপূর্ণ গবেষণার ক্ষেত্র । সুযোগ হলে আমি এই ক্ষেত্রে অবদান রাখতে চাই। আমি মনে করি, আমাদের দেশে এগ্রিকালচার বা এগ্রিকালচার বায়োটেক গবেষণায় বেশ কিছু অগ্রগতি আছে। [/box]
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]বিজ্ঞানী.অর্গঃ তরুন শিক্ষার্থি যারা বিজ্ঞানে কাজ করতে চায় তাদের জন্য আপনার কোন উপদেশ বা বক্তব্য কি?
ড. শরীফ মঈনুল হাসানঃ আন্তরিকতা,উদ্দেশ্য, কঠোর পরিশ্রম, আত্মবিশ্বাস এবং সততা সব কিছু সঠিক থাকলে গবেষক হওয়া সম্বব। মুখস্থবিদ্যা তেমন কোনও কাজে দেয় না গবেষণার ক্ষেত্রে ।যে কোনও বিষয়টাকে সঠিক ভাবে বুঝতে পারাটাই আসল ব্যাপার।ঐ বিষয়ের উপর পুরাপুরি জানাটা, সঠিক পরিকল্পনা, সততা এবং আন্তরিকতার সাথে কার্য সম্পাদনা করাটাই গুরুত্বপূর্ণ। ইচ্ছুক বিষয়ের উপর বই, জার্নাল পড়া এবং এই বিষয় উপর কাজ করা ব্যাক্তির সাথে আলাপ বা যোগাযোগ রাখা দরকার। আজকাল ইন্টারনেট এর মাধ্যমে অনেক কিছু জানা যায়। অজানা বিষয় গুলি জানার জন্য রিসার্চগেট , linkedin এবং ইউটিউব এই টুলস গুলি অনেক সাহায্য করতে পারে।কমিউনিকেশন স্কিল বা ভাষার দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ভালো ভাবে ইংলিশ এবং সাথে অন্য ভাষা জানা থাকলে বিদেশে গবেষণা বা কাজ পেতে অনেক সাহায্য করে। সকলকে অনেক ধন্যবাদ। [/box]
[divider style=”solid” top=”20″ bottom=”20″]
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে আরো নতুন নতুন সংবাদ জানতে সাবস্ক্রাইব করুন।
[mc4wp_form id=”3448″]
Leave a comment