সিজানুররহমান
বায়োটেকনোলোজিএন্ডজেনেটিকইঞ্জিনিয়ারিংবিভাগ
ইসলামীবিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
যদি হঠাৎকেউ আমাকে প্রশ্ন করে,’আচ্ছা বায়োটেকনোলোজি কি?’ তাহলে আমি কোন কিছু চিন্তা না করেই উত্তর দিই, “বায়োটেকনোলোজি হচ্ছে জৈব–প্রযুক্তি!” ব্যাপারটা হাস্যকর মনে হলেও এর বাইরে আমার মাথায় বায়োটেকনোলোজির কোন সংজ্ঞা আসেনা।অথচ বায়োটেকনোলোজির সংজ্ঞা দেবার জন্য শতাধিক রেফারেন্স হাজির করা যায়।আর যদি প্রশ্নটা হয়, “বায়োটেকনোলোজি কোন কোন ক্ষেত্রে কাজ করে?” তাহলে এর উত্তরে কয়েক মিনিট বলার পরে চিন্তা করে দেখতে হয়; কিছু বাদ গেল না তো!
আসলে বর্তমানে বায়োটেকনোলোজি এতটা বিস্তৃত হয়ে পড়েছে যে, এর ক্ষেত্রগুলো কি কি তাই নিয়ে কয়েকখন্ডে একটা বইলিখলেও কম হবে; কারণ প্রতিনিয়ত বায়োটেকনোলোজির ক্ষেত্র বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯১৯ সালে Karl Ereaky যখন প্রথম বায়োটেকনোলোজি শব্দটি ব্যাবহার করেন তখন এই শব্দটি শুধুমাত্র জীবিত কোন কিছুর সাহায্যে কোন পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়াকেই বোঝাত। কিন্তু এখন খুব সাধারনভাবে বায়োটেকনোলোজির সংজ্ঞা দিতে গেলে বলতে হয়, ‘বায়োটেকনোলোজি বা জৈব–প্রযুক্তি এমন একটা প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে জীবের (উদ্ভিদ, প্রাণী কিংবা অণুজীব) দ্বারা কোন বিশেষ বস্তু বা প্রক্রিয়াকে (প্রাণীদেহেরকোনপ্রক্রিয়া) সাধারন অবস্থা থেকে মানবকল্যানের জন্য উন্নত করা হয়।’ আরো বিস্তারিত ভাবে বলতে গেলে নিম্নোক্ত সংজ্ঞাটি বলতেই হয়,“All applications of natural science & engineering in the direct or indirect use of living organisms or part of organisms in natural or modified forms in an innovative manner in the production of goods & services and/or to improve existing industrial process. The market application of output is typically in the generals’ areas of human health, food production, industrial bio-processing & other public good & environmental settings.” _ (source_Ernst & Young)
কিন্তু বায়োটেকনোলোজির সংজ্ঞা যেভাবেই দেয়া হোকনা কেন বায়োটেকনোলোজি আমার কাছে একটা সুন্দর স্বপ্নের স্রষ্ঠা।বায়োটেকনোলোজি বসবাস যোগ্য এক সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন দেখায়আর।শুধু স্বপ্নই দেখায় না তার সাথে আমাদের এই বিশ্বাসেরও জন্মদেয় যে; হ্যাঁ আসলেই তা সম্ভব।যারা পৃথিবীর বর্তমান অবস্থা দেখে ভয় পায়, ভবিষ্যৎপৃথিবীর কথা ভেবে শিউরে উঠে; তাদেরকে বলতে চাই, ‘হ্যাঁ শুধু আমরা বায়োটেকনোলোজিস্টরাই পারি ভবিষ্যৎ পৃথিবীকে আমাদের মত করে সাজাতে।আমরা পৃথিবী কে নিয়ে যেতে পারি উন্নয়নের চরম শিখরে। আমাদের সে ক্ষমতা আছে; আমাদের সে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।’
২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে OECD (The Organization for Economic Co-operation and Development) এর সদস্য দেশগুলো মানব স্বাস্থ্য-সুরক্ষায় জেনেটিক আবিষ্কারকে অণুমোদন করেছে।তার পূর্বেও কিন্তু বায়োটেকনোলোজি থেমেছিল না। তখনও বিভিন্ন কারণে হাইব্রিডাইজেশন বা সংকরায়ন করা হয়েছে।প্রাকৃতিকভাবে সংকরায়ন প্রায়ই ঘটে থাকে,কিন্তু এটি খুব ধীর প্রক্রিয়া; যা আমরা খুব সহজেই করে থাকি রিকম্বিনেন্ট DNA টেকনোলোজির মাধ্যমে।এই কারণে কিছু কিছু পরিবেশবাদী বায়োটেকনোলোজির বিপক্ষে থাকবেন।তাদের ধারণা এর ফলে পরিবেশের স্বকীয়তা নষ্ট হবে এবং পরিবেশ বিপর্যয় ঘটতে পারে। কিন্তু আসলেই কি তাই? পৃথিবী যেভাবে চলছে এভাবে চলতে থাকলে, রেডিয়েশনে এক সময় কিছু প্রজাতি বিলুপ্ত হবে, কিছু তাদের স্বকীয়তা হারাবে আর অল্প কিছু প্রজাতিটি থেকে যাবে। ফলাফল; খাদ্যসৃঙ্খলেভাঙ্গন এবং আবারও কিছু প্রজাতির বিলুপ্তি। এভাবে পৃথিবী আবারও একটি মহাগণ (Genus) বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাবে।
পৃথিবীর পূর্ববতী পাঁচটি মহাগণ বিলুপ্তির সময়কালকে পরিসংখ্যানের আলোয় ফেললে দেখা যায় পৃথিবীর আরও একটি মহাগণ বিলুপ্তির সময় হয়ে আসছে। প্রায় ১০০ মিলিয়ন বছর পরপর মহাগণ বিলুপ্তি ঘটেছে।আরসর্বশেষমহাগণবিলুপ্তিহয়েছেআজথেকেপ্রায়৬৫মিলিয়নবছরপূর্বে।
নাম ও মহাগণ বিলুপ্তির সময় – প্রজাতি বিলুপ্তির পরিমাণ– কারন
১. প্রিকম্বিয়ান (৫৪৪ মিলিয়ন বছর) – ৭৯% (অধিকাংশ সামুদ্রিক অণুজীব)
২. অরডোভিসিয়ান (৪৪০ মিলিয়ন বছর) – প্রায় ১০০ টি পরিবার (সিস্টেমেটিক ক্লাসিফিকেশন)
৩. ডেভোনিয়ান (৩৬০ মিলিয়ন বছর) – ৭০% প্রজাতি (অধিকাংশ সামুদ্রিক)
৪. পারমিয়ানট্রায়াসিক (২৪৮ মিলিয়ন বছর) – ৯০–৯৫% প্রজাতি
৫. ক্রিট্যাসিয়াসটার্সিয়ারি (৬৫ মিলিয়ন বছর) – ৮৫% প্রজাতি
যদি ষষ্ঠ মহাগণ বিলুপ্তি হয়, তার জন্য সম্পূর্ণ রূপে দায়ী থাকবে মানুষ।তবে এর কারন হিসাবে যে সমস্ত সমস্যা আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায় তা হল – খাদ্যসংকট, জ্বালানীসংকট,সংক্রামক রোগ এবং দূষণ ও পরিবেশ বিপর্যয়।
বর্তমান পৃথিবীর খাদ্য উৎপাদন ও চাহিদা হিসাব করলে এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায়, ভবিষ্যৎ পৃথিবীর প্রধান সমস্যা হবে খাদ্য সংকট। কারণ যেভাবে পৃথিবীর জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে ঠিক একইভাবে কমে যাচ্ছে আবাদিজমির পরিমান।এখন যদি মানুষের খাদ্যের চাহিদাও উৎপাদনের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয় তবে দেখা যাবে খাদ্যসংকট প্রতিনিয়ত বাড়ছে। খাতা-কলমে খাদ্যসংকটের যে চিত্রই আসুকনা কেন, বাস্তবে তা খুবই কম। তার একমাত্র কারণ বায়োটেকনোলোজি।হাইব্রিডাইজেশন, প্লান্টব্রিডিং,পোলেনকালচার কিংবা এগ্রিকালচার যাই বলিনা কেন তা বর্তমানে প্লান্ট বায়োটেকনোলোজির শাখা মাত্র। আবার এনি ম্যালহাজবেন্ড্রি, পোল্ট্রিফার্মিং এগুলোও বিজ্ঞানের কোন মৌলিক শাখা নয়। এগুলোকে অতীতে বায়োলোজির ফলিত শাখা হিসাবে গননা করলেও বর্তমানে বায়োটেকনোলোজির বাইরে এদের ভাবাই যায়না।
বর্তমানে বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় বায়োটেকনোলোজি ছড়িয়ে পড়েছে ভবিষ্যৎ পৃথিবীর খাদ্যসংকট নিয়ে যত কথাই বলা হোকনা কেন; তা প্রকট হবেনা কখনও। এর আভাস এখনই পাওয়া যায়।খাদ্যসংকট নিরসনে বায়োটেকনোলোজি কী করতে পারে তার উদাহরণে অনেকগুলো গল্প বলে দেয়া যায়।আর যদি এভাবে বাড়িয়ে বলি যে গ্রামীণী (Graminae) ফ্যামিলি এক সময় তিনবার ফসল দেবে! মানে কৃষক একবার ধান চাষ করে তিনবার ফসল ঘরে তুলবে তবে ব্যাপারটা এখন হাস্যকর মনে হতে পারে; কিন্তু ভবিষ্যতে যে এমনটা ঘটবেনা তা কেউই বলতে পারেনা। কারণ আমরা যে বায়োটেকনোলোজিস্ট।
বাংলাদেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের যে মজুদ আছে তাতে একটা প্রজন্মই ঠিকমত চলবেনা। এই একই চিত্র পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশে। খুব দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক গ্যাসও তেলের মজুদ। তাহলে চাহিদা মেটানোর জন্য কি এর পর বৃক্ষনিধন করে জ্বালানীর ব্যবস্থা করা হবে?তাই যদি হয় তবে পৃথিবী মঙ্গলের মত লালনা হলেও বিরাণ হয়ে যাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।সৌর বিদ্যুৎ ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জ্বালানী চাহিদা পুরোপুরি মেটাতে পারবেনা; আর যদি ইউরোনিয়ামকে জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করা হয় তবে আরও কিছুদিন পর তেজস্ক্রিয় বর্জ্যের পরিমাণ এতটাই বৃদ্ধি পাবে যে; এক গ্লাস বিশুদ্ধ পানির দাম একগ্রাম ইউরোনিয়ামের চেয়ে বেশি হয়ে যাবে! কিন্তু জ্বালানী সমস্যাকেও বুড়ো আঙ্গুল দেখাতে এগিয়ে আসছে বায়োটেকনোলোজি।ইতিমধ্যেজৈবজ্বালানীনিয়েগবেষনায়ব্যাপকসফলতাএসেছে।উদাহরনেবলাযায়জার্মানবিজ্ঞানীম্যাথিয়ামহোমস্–এরনারিকেলতেলথেকেডিজেলআবিষ্কার, যুক্তরাষ্ট্রেরবিজ্ঞানীমাইকেলহাস–এরভোজ্যতেলথেকেবায়োডিজেলতৈরিরপ্রক্রিয়া।এমনকিপয়ঃবর্জ্যথেকেবায়োডিজেলআবিষ্কারকরেদেখিয়েছেননিউজিল্যান্ডেরবিজ্ঞানীরা।নিলশনমেটাবোলিকইঞ্জিনিয়ারিং (যামূলতজেনেটিকমডিফিকেশন) এরমাধ্যমেজ্বালানীতেলওপ্রয়োজনীয়রাসায়নিকপদার্থনিঃসরনেরপ্রক্রিয়াআবিষ্কারকরেন।মজারব্যাপারহচ্ছেতিনিএরকাঁচামালহিসাবেগ্লুকোজব্যবহারকরেন।সুতরাংবোঝাইযায়বিভিন্নদেশেজৈবজ্বালানীওবায়োডিজেলনিয়েব্যাপকগবেষনাহচ্ছে। আমরা জানি, সেইদিন খুব বেশি দূরেনেইযখনবাণিজ্যিকভাবেজৈবজ্বালানীরউৎপাদনহবে।
বর্তমানেপৃথিবীতে AIDS , বার্ডফ্লু, সোয়াইনফ্লুইত্যাদিনতুননতুনঅসুখদেখাদিচ্ছে।এরজন্যদায়ীবলাযেতেপারেদূষণ, ঘনবসতিসর্বোপরিপরিবেশবিপর্যয়।কিন্তুএইসমস্তঅসুখআবির্ভাবেরসাথেসাথেইমিউনোজেনেটিক্সওফার্মাসিউটিক্যালবায়োটেকনোলোজিতাপ্রতিরোধকরতেউঠেপড়েলেগেছে।বায়োটেকনোলোজিওরিকম্বিনেন্ট DNA টেকনোলোজিরজন্যচিকিৎসাক্ষেত্রেব্যাপকউন্নতিসাধনসম্ভবহয়েছে।রিকম্বিনেন্ট DNA টেকনোলোজিরপ্রথমবাণিজ্যিকপ্রডাক্টইনসুলিনহচ্ছেডায়াবেটিকনিয়ন্ত্রণেরপ্রধানহাতিয়ার।এরপরথেকেচিকিৎসাক্ষেত্রেবায়োটেকনোলোজিরআবিষ্কারবাড়তেইআছে।ত্বকেরক্যান্সারপ্রতিরোধে MIR-24 নামকপ্রোটিনছাড়াওস্টেমসেলগবেষণায়অগ্রগতিসম্ভবহয়েছেবায়োটেকনোলোজিরকারণে।ট্রিহিনওমির্কেল২০০৪সালেমাইক্রোইঞ্জেক্শন, ইলেকট্রোপোরেশন, ভাইরালবাননভাইরালভেক্টরচিকিৎসারপদ্ধতিআবিষ্কারকরেন; যা২০০৭সালেসাকুরাইআরওউন্নতিসাধনকরেনএবংআনওয়ানটেডইমিউনোরেসপন্সপ্রতিরোধকরারকথাবলেন।বিভিন্নহরমোনআবিষ্কারকরেবায়োটেকনোলোজিএখনমানুষকেচিরতরুণথাকারস্বপ্নদেখায়।বায়োমার্কারআবিষ্কারসম্ভবহলেরোগনির্ণয়যেমনঅব্যর্থহবেঠিকতেমনিবায়োমেডিসিনহবেচিকিৎসাবিজ্ঞানেরক্ষেত্রেযুগান্তকারীআবিষ্কার।ফার্মাকোজেনেটিক্সবর্তমানেগতানুগতিকচিকিৎসাবিজ্ঞানেরধারণাকেইপাল্টেদিতেচলেছে।বর্তমানেপ্লান্টবায়োটেকনোলোজিরমাধ্যমেবিভিন্নফলেরমাঝেপ্রয়োজনীয়ভিটামিনওমিনারেলদেয়াহচ্ছেযাআমাদেররোগপ্রতিরোধক্ষমতাকেবাড়িয়েদেবে।এমনওহতেপারেকোনএকটাফলএকটানির্দিষ্টরোগেরঔষধহিসাবেকাজকরবে!
বর্তমানেযেপরিবেশনিয়েএতোউদ্বেগআরহাহাকারবায়োটেকনোলোজিরসঠিকব্যবহারেরমাধ্যমেতাহয়েউঠতেপারেআরওনিরাপদআরনির্মল।আমাদেরপরিবেশসবচেয়েবেশিদূষিতহয়রাসায়নিকপদার্থদ্বারা।এসবপদার্থেরপরিবেশবান্ধববিকল্পবায়োটেকনোলোজিরমাধ্যমেবিশেষভাবেউৎপন্নকরাযায়।যেমনব্লিচিংপাউডারবাফসফেটডিটারজেন্টেরবিকল্পহতেপারেবায়োব্লিচিংবাএনজাইমযুক্তডিটারজেন্ট।কিছুকিছুউন্নতদেশেএরব্যবহারইতিমধ্যেশুরুহয়েগেছে।বর্তমানবিশ্বেবেশিরভাগশিল্পকারখানাইতাদেরবর্জ্যপদার্থনিষ্কাশনেরাসায়নিকপদ্ধতিব্যবহারকরেঅথবাপরিবেশেসরাসরিফেলেদেয়।এরপুরোব্যাবস্থাটিইঝুঁকিপূর্ণএবংপৃথিবীরজন্যক্ষতিকর।বায়োটেকনোলোজিস্টরানিরাপদএবংলাভজনকউপায়েএসববর্জ্যপদার্থনিষ্কাশনেরপদ্ধতিআবিষ্কারকরেছেন।বর্তমানেবায়োটেকনোলোজিরমাধ্যমেআধুনিকসারকারখানাগুলোতাদেরবর্জ্যপদার্থমাত্রকয়েকদিনেরমধ্যেমাটিতেপরিণতকরছে।ক্ষতিকরভারীধাতু, এসিড, পেট্রোলিয়ামবর্জ্যএবংক্লোরিনযুক্তযৌগদ্বারাদূষিতএলাকাকেদূষনমুক্তকরাসম্ভব।আরপুরোব্যাপারটিসম্ভবব্যাক্টেরিয়াআরকিছুবিশেষধরনেরছত্রাকব্যবহারেরমাধ্যমে।কিছুউদ্ভিদআছেযারামাটিথেকেবিষাক্তপদার্থযেমনমার্কারি, সীসা, আর্সেনিকইত্যাদিশোষণকরে।বিজ্ঞানিরাআশাবাদীযে, এইসমস্তউদ্ভিদব্যবহারকরেরাসায়নিকবর্জ্যপদার্থওনিষ্কাশনসম্ভব।বায়োটেকনোলোজিরমাধ্যমেউৎপন্নউদ্ভিদবিভিন্নপরিবেশেনিজেদেরটিকিয়েরাখতেসম্ভবহবে।ফলেলবণাক্তবামরুপরিবেশেওবনায়নসম্ভবহবে, যাপরিবেশরক্ষাকরবে।
এখনযদিকল্পনারজগৎছেড়েবাস্তবতায়ফিরেআসিতাহলেমানবকল্যাণেপরিবেশপরিবর্তনকরারযেক্ষমতাবায়োটেকনোলোজিরআছেতাআন্তর্জাতিকবাজারেব্যাপকপ্রভাবফেলবে।তাই OECD (The Organization for Economic Cooperation and Development) সদস্যদেশগুলোভবিষ্যৎপরিবর্তনেরএকটাচাবিহিসেবেবায়োটেকনোলোজিকেগণনাকরছে।বায়োড্রাগভবিষ্যৎঔষধশিল্পেএকটাগুরুত্বপূর্ণপরিবর্তনআনতেযাচ্ছে, তাএখনইঅনুমানকরাযায়। OECD এরধারণা২০১৫সালনাগাদপৃথিবীরঅর্ধেকঔষধএবংবীজবায়োটেনোলোজিরমাধ্যমেউৎপন্নহবে।২০৩০সালনাগাদ OECD সদস্যদেশগুলোতেবায়োটেকনোলোজিভিত্তিক GDP ২.৭% এউন্নীতহবেযাবর্তমানে১% এরওকম।এরফলে OECD সদস্যদেশগুলোছাড়াওঅন্যদেশগুলোলাভবানহবে।বর্তমানে OECD সদস্যদেশগুলোতেমাত্র৬% ব্যবসা–বানিজ্যহয়বায়োটেকনোলোজিকেন্দ্রিকযামূলতকৃষিসামগ্রী। OECD এর The International Future Programme (IFP) ২০৩০সালপর্যন্তবায়ো–অর্থনীতিপ্রণয়নকরেছে।এইনয়টিপরিচ্ছদেঅর্থনীতিরওপরবায়োটেকনোলোজিরফলাফলএবংবায়োটেকনোলোজিরমাধ্যমেঅর্থনৈতিকউন্নয়নসাধনকিভাবেসম্ভবতানিয়েআলোচনাকরাহয়েছে; এবংসেইসাথেবিভিন্নখাতেসম্ভাব্যপরিসংখ্যানদেয়াহয়েছে।যেমন _
ü পৃথিবীরজনসংখ্যাহবে৮.৩বিলিয়ন!
ü প্রতিবছরGDP বৃদ্ধিপাবেউন্নতদেশগুলোতে৪.৬% এবং OECD সদস্যদেশগুলোতে২.৩%(প্রায়)
ü চীনএবংভারতবায়োপ্রোডাক্টরপ্তানিশুরুকরবেযাহবেমূলতকৃষি, বনায়নওমৎসসম্পর্কিত।
যদিওএখনবায়োটেকনোলোজিতারপ্রাথমিকঅবস্থাপারকরছেএবংএখনওবায়োটেকনোলোজিরব্যবসায়িকপণ্যগুলোকৃষিক্ষেত্রেইব্যবহারহচ্ছে।কিন্তুখুবশীগ্রইতাচিকিৎসাক্ষেত্রসহঅন্যান্যক্ষেত্রেবিস্তৃতিলাভকরবে।বায়োইনফরমেশনএবংDNA সিকোয়েন্সিংযতসমৃদ্ধহবেততফার্মাকোজেনেটিক্সএবংবায়োমেডিসিনআবিষ্কারসহজহবে।তাইবর্তমানেমানবজিনব্যাংকনির্মাণে OECD দেশগুলোবিনিয়োগকরছে। OECD এরমতে২০১৫সালনাগাদ Genetically Modified (GM) উদ্ভিদসহজলভ্যহবে।ফলেফার্মাকোজেনেটিক্সএরউন্নতিহবে।ফার্মাসিটিক্যালওবায়োকেমিকেলউৎপাদনবৃদ্ধিপাবে১২–২০% এবংঅন্যান্যজৈবযৌগেরউৎপাদনবৃদ্ধিপাবে১.৮%।বায়োইথানলথেকেবায়োডিজেলউৎপাদন২০১৫সালেরমধ্যেসম্ভবহবেবলে OECD দেশগুলোধারণাকরছে।সমাজ, অর্থনীতিএবংপ্রযুক্তিবায়োটেকনোলোজিকেনিয়েনতুনধরনেরব্যবসারসূচনাকরেছে, যাসুদূরপ্রসারি।বায়োটেকনোলোজিরবর্তমানপণ্যএবংজিনপরিবর্তনেরক্ষমতাবায়োইকোনোমিকেখুবদ্রুতযৌথঅর্থনীতিতেরূপান্তরিতকরবে।২০৩০সালনাগাদবিশ্বঅর্থনীতিবায়োটেকনোলোজিকেভিত্তিকরেগড়েউঠবে; তারআভাসএখনইপাওয়াযায়।এছাড়াওবর্তমানে GM শস্যবায়ো–অর্থনীতিসম্পর্কেজনগণকেভাবতেবাধ্যকরেছে।ফলেবর্তমানেরাষ্ট্রীয়উদ্যোগছাড়াওব্যক্তিবাব্যবসায়িকপ্রতিষ্ঠানবায়োটেকনোলোজিনিয়েগবেষণাকরতেআগ্রহীহচ্ছে।এবংশুধুমাত্রবায়োটেকনোলোজিরসঠিকপ্রয়োগপৃথিবীকেকরতেপারেআমাদেরস্বপ্নেরমত।সঠিকবিনিয়োগেরমাধ্যমেপৃথিবীবায়োটেনোলোজিথেকেঅনেকউপকৃতহতেপারে।
একটুইতিহাসথেকেফিরেআসি, ১৯অক্টোবর১৯৮৭সালেঅ্যামেরিকারশেয়ারবাজারেবড়ধরনেরধসনামে; যাগড়ে৫০৮পয়েন্টেএসেদাড়ায়।অনেকবড়বড়কম্পানিকেপুরো–পুরিবন্ধকরেদিতেহয়, এমন পরিস্থিতিতেবায়োটেকরিলেটেডকোম্পানিগুলোশেয়ারবাজারেরহালধরে।পরবর্তিতে১৯৯১এরজানুয়ারীথেকেমেপর্যন্তএসমস্তবায়োটেকরিলেটেডকোম্পানিগুলোশেয়ারবাজারে১৮বিলিয়ন US ডলারযোগকরে, ফলেঐসময়বায়োটেককম্পানিগুলোকেস্টকবোমবলাহয়। সাম্প্রতিকসময়েঅর্থনীতিতেবায়োটেকনোলোজিরপ্রভাববর্ণনাকরারজন্যকিছুপরিসংখ্যানইযথেষ্ট।
২৬জানুয়ারী২০১২তারিখেররিপোর্টঅনুযায়ী NPS Pharmaceuticals, Halozyme Therapeutics, Regeneron Pharmaceuticals এবং EXACT Sciences Corporation এইচারটিঅ্যামেরিকানকোম্পানিরগ্রস্প্রফিটছিল৯৯% এরউপরে, এছাড়াওএতালিকারপ্রথম১৬টিকোম্পানিরগ্রস্প্রফিটছিল৯০% এরউপরেপরবর্তী১২টিকোম্পানিরপ্রফিট৮০% এরউপরে! অর্থনীতিতেসাধারনতগ্রস্প্রফিটেরমার্জিননির্ধারণকরাহয়নিম্নোক্তভাবেফার্মাসিউটিক্যালকোম্পানিগুলোরপ্রফিটহবে৫০% এরউপরের্গামেন্টসকোম্পানিরক্ষেত্রে৪০–৪৫% এবংযেকোনলাভজনকপ্রতিষ্ঠানেরজন্য২০–৩০%।কিন্তুদেখাযাচ্ছেবায়োটেককোম্পানিগুলোএইপ্রথাগতধারনাভেঙ্গেফেলেছে, অধিকাংশবায়োটেককোম্পানিরগ্রস্প্রফিট৭০% এরবেশী! তাইউন্নতদেশগুলোএখনএইখাতেসর্বাধিকবিনিয়োগেনজরদিচ্ছে।অ্যামেরিকারকথাবাদদিয়েযদিআমাদেরপ্রতিবেশীরাষ্ট্রেরকথাচিন্তাকরিতাহলেওবুঝতেপারববায়োটেকনোলোজিসম্পর্কিতঅর্থনীতিকোনপথেঅগসরহচ্ছে! ঔষধশিল্পেপৃথিবীতেভারতেরঅবস্থানহচ্ছেচতুর্থ।ভারতেসর্বমোট১৭০টিবায়োটেককোম্পানিআছেযারমাঝেসরকারেরমালিকানাধীনকম্পানিরসংখ্যাহচ্ছে৫টিএবংমডার্ণবায়োটেকনোলোজিনিয়েকাজকরে৬০টিকোম্পানি।১৯৬০সালেরপ্রথমদিকেভারতেঔষধশিল্পগড়েউঠতেশুরুকরে, এবং১৯৭০সালেএধরনেরপ্রতিষ্ঠানকেআইনগতভাবেউৎসাহপ্রদানেরজন্যপেটেন্টআইনেপরিবর্তনআনেভারতসরকার।২০০৯–১০অর্থবছরেবায়োটেকনোলোজিওবায়োফার্মাসিউটিক্যালকোম্পানিগুলো১৭% রেভিনিউআয়করেযা৩বিলিয়নইউ.এসমার্কিনডলারএরসমতূল্য! ২০১১সালেভারতেরপ্রধানবায়োফার্মাসিউটিক্যালওবায়োটেকনোলোজিকোম্পানিগুলোরআয়ের পরিসংখ্যাননিম্নোক্তদাড়ায়।
Rank |
Company |
Revenue (crore) |
1 |
Biocon |
1483 |
2 |
Serum Institute of India |
1041 |
3 |
Panacea Biotec |
928.41 |
4 |
Nuziveedu Seeds Private Limited |
610 |
5 |
Reliance Life Sciences |
490 |
6 |
Quintiles |
476.25 |
7 |
Novo Nordisk |
462 |
8 |
Rasi Seeds |
371.88 |
9 |
Mahyco |
364.9 |
10 |
Trans Asia |
350 |
11 |
Ankur Seeds |
325 |
12 |
Syngene International |
318 |
13 |
Bharat Biotech International |
298.34 |
14 |
Indian Immunologicals Limited |
283 |
15 |
Krishidhan Seeds |
276.13 |
16 |
Shantha Biotechnics |
272 |
17 |
Novozymes |
242 |
18 |
Bharat Serums |
226 |
19 |
Jubilant Lifesciences |
210 |
20 |
Eli Lilly and Company |
204 |
|
এসমস্তপরিসংখ্যানথেকেখুবসহজেইঅনুমানকরাযায়যে,আমরাএকটুচেষ্টাকরলেইবাংলাদেশেরশেয়ারবাজারেরহালধরতেপারি, এরজন্যদরকারসঠিকব্যবসানীতিএবংস্বচ্ছবিনিয়োগ।
বায়োটেকনোলোজিরফলেযেমনআসন্নমহাগণবিলুপ্তিপ্রতিরোধকরাসম্ভবহবেঠিকতেমনিপৃথিবীরঅর্থনীতিহবেসমৃদ্ধওশক্তিশালী।প্রকৃতঅর্থেবায়োটেকনোলোজিকতকগুলোক্ষুদ্রক্ষুদ্রস্বপ্নেরসমষ্টিযাবাস্তবতায়রুপনেয়।ভবিষ্যৎপৃথিবীরইতিহাসলেখাহবেবায়োটেকনোলোজিরওপরনির্ভরকরে।সুতরাংবায়োটেকনোলোজিরসঠিকব্যবহারনিশ্চিতকরাআমাদেরইদ্বায়িত্ব।
কৃতজ্ঞতাস্বীকার
ড. মো: আনোয়ারুলহক
সহযোগীঅধ্যাপক
বায়োটেকনোলোজিএন্ডজেনেটিকইঞ্জিনিয়ারিংবিভাগ
ইসলামীবিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
সূত্র:
1. http://www.cerna.ensmp.fr/Documents/AM-JR-MHZ-BiotechReport.pdf
2. http://dallasfed.org/research/swe/2002/swe0202b.html
3. http://irows.ucr.edu/research/biotech/isa04biotech.htm
4. http://whatmatters.mckinseydigital.com/biotechnology/how-biotech-will-reshape-the-global-economy
5. http://www.oecd.org/dataoecd/18/23/1855200.pdf
6. http://www.fas.org/ota/reports/9110.pdf
7. http://ycharts.com/rankings/industries/Biotechnology/gross_profit_margin
8. http://www.statista.com/statistics/197954/gross-profit-margin-of-united-states-biotech-companies/
9. http://www.worldcolleges.info/happenings_biotech.php
10. http://en.wikipedia.org/wiki/Pharmaceutical_industry_in_India
Leave a comment