উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগগবেষণায় হাতে খড়ি

গবেষণাপত্র রিজেকশনের কারণ ও করণীয়

Share
Share

অতিথি লেখক- আজিজুল হক
সহকারী অধ্যাপক, ইয়েংনাম বিশ্ববিদ্যালয়।

গবেষণাপত্র প্রকাশের পথে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হলো জার্নাল থেকে ডেস্ক রিজেকশন। কোনো প্রকার রিভিউর সুযোগ না পেয়েই মাসের পর মাসের কঠোর পরিশ্রম ফিরিয়ে দেওয়া হলে তা গবেষকের জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক ও নিরুৎসাহজনক হয়ে ওঠে। তবে সম্পাদকদের দৃষ্টিকোণ থেকেও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সময়সাশ্রয়ী প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে তারা সিদ্ধান্ত নেন কোন লেখা পরবর্তী রিভিউয়ে পাঠানো হবে। “How to develop a quality research article and avoid a journal desk rejection” শিরোনামের এই সম্পাদকীয় আর্টিকেলে নয়জন স্বনামধন্য জার্নাল সম্পাদকের অভিজ্ঞতা ও মতামত তুলে ধরা হয়েছে। তারা ব্যাখ্যা করেছেন গবেষণাপত্র প্রাথমিক পর্যায়ে বাদ পড়ার পেছনে কোন কোন বিষয়গুলো কাজ করে এবং গবেষকরা কীভাবে সেগুলো এড়াতে পারেন।

ডেস্ক রিজেকশন এড়াতে প্রথমেই জার্নালের স্কোপ ও উদ্দেশ্য ভালোভাবে বোঝা জরুরি। অনেক সময় গবেষণাটি যথেষ্ট মানসম্মত হলেও তা জার্নালের কাঙ্ক্ষিত বিষয়ের সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ না হওয়ায় রিজেক্ট হয়। দ্বিতীয়ত, লেখার গুণগত মান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যেমন ভাষার যথার্থতা, যুক্তির গাঁথুনি, ধারাবাহিকতা ও পরিষ্কার উপস্থাপন। গবেষণার মৌলিক অবদান যদি স্পষ্ট না হয় বা পাঠক বুঝতেই না পারেন গবেষণাটি নতুন কী বলছে, তাহলে সম্পাদকদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলার আশঙ্কা থাকে। তৃতীয়ত, গবেষণাপত্রের শিরোনাম ও সারাংশে গবেষণার মূল বিষয়বস্তু, গুরুত্ব এবং অবদান স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হওয়া উচিত, কারণ অনেক সময় সম্পাদকরা এগুলো দেখেই প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।

এছাড়া, গবেষণার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক এবং সাম্প্রতিক রেফারেন্স যুক্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় রেফারেন্স তালিকা পুরনো, সীমিত বা অসংলগ্ন হলে সম্পাদক ধরে নেন লেখাটি যথেষ্ট আপডেট নয়। আরেকটি বড় কারণ হলো লেখকরা অনেক সময় জার্নালের নির্দিষ্ট লেখার নিয়ম বা author guidelines ঠিকমতো অনুসরণ করেন না, যার ফলে সম্পাদকীয় দলে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। তাই গবেষকদের উচিত প্রতিটি জার্নালের নির্দেশনা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মেনে চলা।

এই সম্পাদকীয় আর্টিকেলটি গবেষকদের জন্য একটি বাস্তবভিত্তিক ও সময়োপযোগী দিকনির্দেশনা তুলে ধরেছে। কেবল গবেষণার মান নয়, বরং লেখার কৌশল, উপস্থাপনার ধরণ, জার্নালের উপযোগিতা মূল্যায়ন এবং সম্পাদকের মানদণ্ড বোঝার মতো বিষয়গুলো একত্রে বিবেচনায় নিয়ে একটি গবেষণাপত্রকে ডেস্ক রিজেকশন থেকে রক্ষা করা সম্ভব। যারা আন্তর্জাতিক জার্নালে মানসম্মত প্রকাশনা করতে আগ্রহী, তাদের জন্য এই লেখাটি নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ এবং শিক্ষণীয়।


বিদ্র: ফেসবুক থেকে সংগ্রহীত:

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ফ্রি ইমেইল নিউজলেটারে সাবক্রাইব করে নিন। আমাদের নতুন লেখাগুলি পৌছে যাবে আপনার ইমেইল বক্সে।

বিভাগসমুহ

Related Articles
গবেষণায় হাতে খড়িবিজ্ঞান বিষয়ক খবর

আপনার ভাষা কি আপনার চিন্তাভাবনার ধরন বদলায়? 

আপনার ভাষার গঠন কীভাবে আপনার চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারে তা আবিষ্কার করুন।...

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগগবেষণায় হাতে খড়ি

কিভাবে একটি ভালো থিসিস লিখবেন

এই বইটির একটি সম্পূর্ণ বাংলা পর্যালোচনা - মাস্টার্স এবং পিএইচডি শিক্ষার্থীদের জন্য...

কলামগবেষণায় হাতে খড়ি

কলাম: google scholar citation — গবেষণায় জালিয়াতির নতুন পথ!

গবেষকরা কীভাবে ভুয়া প্রোফাইল এবং উদ্ধৃতি বিক্রির পরিকল্পনার মাধ্যমে গুগল স্কলারের উদ্ধৃতি...

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগগবেষণায় হাতে খড়ি

গবেষণাপত্রের গুণগত মান যাচাইয়ের AI টুল

একজন পেশাদার পর্যালোচকের মতো আপনার গবেষণাপত্র মূল্যায়ন করার জন্য একটি AI-চালিত টুল...

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগগবেষণায় হাতে খড়ি

গবেষণা পদ্ধতির হ্যান্ডবুক

নতুনদের জন্য গবেষণা পদ্ধতির একটি বিস্তৃত বাংলা নির্দেশিকা আবিষ্কার করুন। এই হ্যান্ডবুকটিতে...

Three Columns Layout

গবেষণার তথ্য ও বিজ্ঞানীদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে, বিজ্ঞানী.অর্গ নবীন প্রজন্মকে গবেষণার প্রতি অনুপ্রাণিত করে।

Contact

biggani.org❤️gmail.com

Biggani.org connects young audiences with researchers' stories and insights, cultivating a deep interest in scientific exploration.

বিজ্ঞানী অর্গ (biggani.org) বাংলাদেশি বিজ্ঞানীদের একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে গবেষণা ও বিজ্ঞান নিয়ে বাংলা ভাষায় তথ্য ও সাক্ষাৎকার প্রচার করে – নবীনদের গবেষণা ও উচ্চশিক্ষায় প্রেরণা দেয়া হয়।

যোগাযোগ:

biggani.org@জিমেইল.com

biggani.org, a community of Bangladeshi scientists, shares interviews and information about researchers and scientists in Bengali to inspire young people in research and higher education.