লেখক- আজিজুল হক
সহকারী অধ্যাপক, ইয়েংনাম বিশ্ববিদ্যালয়।
উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ অর্জন করা ক্যারিয়ার গঠনের এক অসাধারণ সুযোগ। তবে অনেকেরই প্রশ্ন থাকে, কম CGPA নিয়ে কি স্কলারশিপ পাওয়া সম্ভব? সঠিক পরিকল্পনা, কৌশল এবং প্রস্তুতি থাকলে কম CGPA নিয়েও বিদেশে পড়াশোনার সুযোগ তৈরি করা সম্ভব। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ তুলে ধরা হলো, যা আপনাকে স্কলারশিপ জেতার পথে সহায়তা করবে।
যদি আপনার CGPA কম থাকে, তবে কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা আপনাকে এগিয়ে রাখতে পারে। বিভিন্ন স্কলারশিপ প্রোগ্রামে একাডেমিক সাফল্যের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাও মূল্যায়ন করা হয়। তাই বিষয় সংশ্লিষ্ট ইন্টার্নশিপ বা পেশাদার অভিজ্ঞতা অর্জনের চেষ্টা করুন। উদাহরণস্বরূপ, গবেষণার সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো প্রজেক্টে কাজ করলে সেটি আপনার প্রোফাইলকে আকর্ষণীয় করে তুলবে। কর্মজীবনের এই অর্জনগুলো আপনার একাডেমিক সীমাবদ্ধতা পুষিয়ে দিতে সাহায্য করবে।
স্কলারশিপ আবেদনের ক্ষেত্রে স্টেটমেন্ট অফ পারপাস (SOP) একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এটি আপনার একাডেমিক সীমাবদ্ধতাকে পেছনে ফেলে আপনার লক্ষ্য এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরার সুযোগ দেয়। SOP লিখতে গিয়ে CGPA কম হওয়ার কারণ উল্লেখ করুন, তবে সেটিকে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করুন। কীভাবে আপনি সেই সীমাবদ্ধতাকে কাটিয়ে উঠেছেন এবং স্কলারশিপ পেলে ভবিষ্যতে কীভাবে আপনার লক্ষ্য পূরণ করবেন, তা পরিষ্কারভাবে লিখুন। SOP এমনভাবে তৈরি করুন, যাতে স্কলারশিপ কমিটি আপনার অধ্যবসায় এবং সম্ভাবনা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়। প্রয়োজনে SOP তৈরি করার পর তা অভিজ্ঞ কারো কাছ থেকে পর্যালোচনা করান।
রেফারেন্স লেটার স্কলারশিপ প্রক্রিয়ায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার প্রফেসর বা কর্মক্ষেত্রের উর্ধ্বতন কেউ যদি আপনার পক্ষে ইতিবাচক সুপারিশ পত্র দেন, তবে এটি আপনার আবেদনকে শক্তিশালী করে তুলবে। রেফারেন্স লেটারে আপনার নেতৃত্বগুণ, কাজের দক্ষতা এবং সৃজনশীলতার উল্লেখ থাকতে হবে। সুপারিশ পত্রে প্রফেসরদের আপনার CGPA কম হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করার পাশাপাশি অন্যান্য অর্জনের কথা তুলে ধরার অনুরোধ করুন। এটি আপনার প্রোফাইলকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলবে।
বেশ কিছু স্কলারশিপ প্রোগ্রামে ইন্টারভিউ নেওয়া হয়। যদি ইন্টারভিউয়ের ডাক পান, তবে তা আপনার জন্য নিজেকে প্রমাণ করার একটি বড় সুযোগ। ইন্টারভিউতে আপনার CGPA কম হওয়ার কারণ স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করুন, তবে একইসঙ্গে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং লক্ষ্য সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলুন। ইন্টারভিউয়ের সময় ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। স্কলারশিপ কমিটি আপনার আগ্রহ, উদ্যম এবং সংকল্প দেখে সিদ্ধান্ত নেয়। তাই নিজেকে প্রস্তুত রাখুন এবং আপনার সামর্থ্য প্রমাণ করুন।
আন্তর্জাতিক স্কলারশিপের ক্ষেত্রে IELTS, TOEFL, GRE, অথবা GMAT পরীক্ষার স্কোর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চ স্কোর আপনাকে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রাখে এবং কম CGPA থাকা সত্ত্বেও আপনার দক্ষতা প্রমাণ করে। তাই সময়মতো এসব পরীক্ষার প্রস্তুতি নিন এবং ভালো স্কোর অর্জন করার চেষ্টা করুন। এটি আপনার আবেদনকে আরও শক্তিশালী করবে।
সবশেষে, আপনার মনোভাবই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। CGPA কম থাকলেও, আত্মবিশ্বাস এবং ইতিবাচক মনোভাব আপনাকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নিতে পারে। অনেক শিক্ষার্থী ২.৫ বা তার কম CGPA নিয়ে স্কলারশিপ পেয়ে বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়েছেন। তাদের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে যে সঠিক কৌশল ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে যে কেউ সফল হতে পারে।
বিদ্র: ফেসবুক থেকে সংগ্রহীত:——–https://www.facebook.com/azizul.haque5707/posts/pfbid033toniSftfjHQ2kEjwgJQ13NQNYtCPFNJq3ra8iQktbt9MBq1PmBy6wgxDr46HUeel
Leave a comment