একজন গবেষক কেমন তার একটি ইনডেক্স হলো সাইটেশন। কিন্তু সব সাইটেশনই কি কেবল একটি সংখ্যা? কে সাইট করলো, কিভাবে সাইট করলো, কোন জার্নালে সাইটেড হলো ইত্যাদিও মেটার করে। সাইটেশনের বাহিরে আরও ইনডেক্স আছে যেমন h-ইনডেক্স, i-ইনডেক্স ইত্যাদি। তাছাড়া কারো যদি একটা প্রস্তাবিত মডেল থাকে সেটার বিশেষ গুরুত্ব আছে। সেই মডেলে যদি অন্যরা কাজ করে তার গুরুত্ব আরও বাড়ে। কারো মডেলের উপর কাজ করলে এই সাইটেশনকে আমরা কিভাবে গুনবো? কারো আবার কোন একটি রিসার্চ ফিল্ডে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক কাজ আছে যার মাধ্যমে ওই ফিল্ডের ফ্রন্টকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়। এই সাইটেশনকে কিভাবে গুনবো? সব কিছুই কেবল সংখ্যা দিয়ে মাপা ঠিক না। যেখানে সংখ্যা গুরুত্ব পায় সেখানে গুণমান জানালা দিয়ে পালায়।
গণতন্ত্রের সমস্যা ঠিক এই জায়গাটিতে। সবার ভোট সমান। যেই দেশের মানুষের গড় মান যত খারাপ সেই দেশে গণতন্ত্র তত অকার্যকর। যেকোন তন্ত্রই ভালো কাজ করে যদি সেই দেশের মানুষের গড় মান ভালো থাকে। ইংল্যান্ডে আমি যেখানে পিএইচডি করেছি সেখানকার অফিস পরিষ্কার করার জন্য একজন বয়স্ক মানুষ প্রতিদিন ভোরবেলায় আসতো। প্রায়ই আমি ভোরবেলাতেই অফিসে চলে যেতাম এবং তার সাথে দেখা হতো। তার সাথে বিশ্বের যেকোন ইস্যু নিয়ে কথা বলা যেত। অর্থাৎ সার্টিফিকেট অনুসারে তার লেখাপড়া খুব কম কিন্তু আলাপ করলে বোঝা যায় তার জানাবোঝার লেভেল আমাদের দেশের অনেক উচ্চ শিক্ষিতের চেয়েও বেশি। এর কারণ হলো সমাজটাই একটা স্কুল। ইংল্যান্ডের সমাজে যেহেতু সত্যিকারের শিক্ষিত মানুষ বেশি। সেইদিক থেকে ইউরোপের যেকোন দেশের সমাজ একটা উন্নতমানের স্কুল। তাই সেখানে গণতন্ত্র ইফেক্টিভ। জাপানের সমাজও অত্যন্ত উঁচু মানের স্কুল। আমাদের সমাজে আজও গণপিটুনি হয়। একটা মা তার মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করাতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হয়ে মরে গিয়েছিল। কি করুন ভাবুনতো। তার সন্তানটি কি কষ্ট নিয়ে বড় হচ্ছে ভাবুনতো? সন্তানটি বড় হলে সব সময় ভাববে আমার জন্য আমার মা জীবন দিল।
সমাজকে উন্নত করার প্রধান উপায় হলো শিক্ষা। আমরা শিক্ষাকেই সবচেয়ে অবহেলা করে আসছি। শিক্ষায় বাজেটে বরাদ্দ দেই জিডিপির মাত্র ১.৬৯%! অথচ দেওয়ার কথা ন্যূনতম ৫.৫%! অশিক্ষা কুশিক্ষার লক্ষণ আমাদের সমাজের সর্বত্র।
Leave a comment