Normal
0
MicrosoftInternetExplorer4
/* Style Definitions */
table.MsoNormalTable
{mso-style-name:”Table Normal”;
mso-tstyle-rowband-size:0;
mso-tstyle-colband-size:0;
mso-style-noshow:yes;
mso-style-parent:””;
mso-padding-alt:0in 5.4pt 0in 5.4pt;
mso-para-margin:0in;
mso-para-margin-bottom:.0001pt;
mso-pagination:widow-orphan;
font-size:10.0pt;
font-family:”Times New Roman”;}
আগামী দিনে প্রযুক্তিতে কি ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে ইতিমধ্যে তার সূচনা হয়েছে। ডেস্কটপ
কম্পিউটারের চাহিদা কমে আসছে। এর পরিবর্তে নোটবুক, ল্যাপটপ এবং স্মার্টফোনে কম্পিউটিং
জনপ্রিয় হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ওয়েবে ক্লাউড নির্ভর কম্পিউটিং চালু হয়েছে। সামনের
দিনে ক্লাউড কম্পিউটিং এর ব্যাপকভাবে প্রসার ঘটতে যাচ্ছে। বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানসমূহ
এ ব্যাপারে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের জয় জয়াকার ঘটবে
১৯৬০ সালে ক্লাউডনির্ভর কম্পিউটিংয়ের একটা ধারণা পাওয়া যায়। সে সময় জন
ম্যাক ক্যার্থি এ সম্পর্কে মতামত দেন এভাবে— ‘কম্পিউটেশন একদিন সংগঠিত হবে
পাবলিক ইউটিলিটি হিসেবে।’ তবে প্রকৃতপক্ষে এর ধারণায় ভিত্তি লাভ করেছে ১৯৯০
সালের দিকে। অ্যামাজন তাদের ওয়েব সার্ভিসের মাধ্যমে ইউটিলিটি কম্পিউটিংয়ের
ভিত্তিতে ২০০৫ সালে সার্ভিস শুরু করে। ২০০৭ সালে গুগল এবং আইবিএম যৌথভাবে
কিছুসংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়কে সঙ্গে নিয়ে ক্লাউড কম্পিউটিং বিষয়ে গবেষণাধর্মী
প্রজেক্ট শুরু করে এবং ২০০৮ সালের মাঝামাঝি এটি একটা পর্যায়ে চলে আসে।
ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্পন্ন হয় ২০০৯ সালের দিকে। এই সময়
থেকে বিশ্বের বড় বড় আইটি প্রতিষ্ঠানে ক্লাউড কম্পিউটিং নিয়ে তাদের
কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে থাকে। এক সমীক্ষায় লক্ষ্য করা গেছে, যে কোনো
প্রতিষ্ঠান তাদের আইটি বাজেটে প্রায় ১৮ শতাংশ ব্যয় কমিয়ে আনতে পারে এই
প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে। তাছাড়া ডাটা সেন্টারগুলো তাদের ব্যয়ের ১৬
শতাংশ কমিয়ে আনতে সক্ষম হয় এই প্রযুক্তির প্রসারে। কাজেই ক্লাউড
কম্পিউটিংয়ের যথেষ্ট সুবিধা রয়েছে। এই প্রযু্ক্তি স্টোরেজ, মেমোরি,
প্রসেসিং এবং ব্যান্ডউইথ কেন্দ্রীয়করণ দ্বারা অনেক বেশি কার্যক্ষমতা
সম্পন্ন। এতে চাহিদা মোতাবেক সফটওয়্যার, রিসোর্স ও তথ্যগুলো শেয়ার বা
বিনিময় করা যাবে। তাই বলা যায়, আগামীতে ক্লাউডনির্ভর কম্পিউটিংয়ের জয় জয়কার
হবে।
ক্লাউড কম্পিউটিং কি?
ইন্টারনেটনির্ভর কম্পিউটিং হচ্ছে ক্লাউড কম্পিউটিং। ইন্টারনেটভিত্তিক
অ্যাপ্লিকেশন দ্বারা যে কোনো একটি কম্পিউটার থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করে
অ্যাপ্লিকেশনগুলো ইনস্টলেশন ছাড়া নিজস্ব ফাইলগুলো অ্যাক্সেস করা যায়
অনায়াসে। এতে ওয়েবে সব ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হবে। এ ক্ষেত্রে
প্রতিটি ব্যবহারকারীকে ক্লায়েন্ট হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের ভিত্তি অত্যন্ত জোরালো হয়।
ক্লাউড কম্পিউটিং একটি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি হওয়ায় এর চাহিদা ক্রমে বেড়ে
চলেছে।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর সাম্প্রতিক তত্পরতা
সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফটের মনোযোগ এবার ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের দিকে।
মাইক্রোসফটের শতকরা ৭০ ভাগ কর্মকর্তা ও কর্মচারী এই ক্লাউড সম্পর্কিত
প্রজেক্ট নিয়ে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন এবং এক বছরের মধ্যে তা শতকরা ৯০ ভাগে
দাঁড়াবে। উল্লেখ্য, মাইক্রোসফট মূলত কম্পিউটার সফটওয়্যার থেকে অধিক
উপার্জন করে থাকে। ইন্টারনেটের ব্যবহার দ্রুত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তি
প্রতিষ্ঠানগুলো এই ধরনের সফটওয়্যার ও সার্ভিসের দিকে অধিক হারে নজর দিচ্ছে।
যেমন জনপ্রিয় প্রোগ্রাম ওয়ার্ড, পাওয়ার পয়েন্ট প্রভৃতির অনলাইন সংস্করণ
তৈরি হয়েছে। মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী স্টিভ বলমারের মতে, ক্লাউড
প্রযুক্তি চাচ্ছে স্মার্ট ডিভাইগুলো। তিনি বলেন, নতুন উইন্ডোজ ৭ সিরিজের
মোবাইল অপারেটিং সিস্টেমের ডিজাইন করা হয়েছে এই ধারণার ওপর ভিত্তি করে।
সম্প্রতি ভারতে ক্লাউড কম্পিউটিংনির্ভর অপারেটিং সিস্টেম চালু হয়েছে। আর এর
উদ্যোগ গ্রহণ করেছে খোদ মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠান। এর ফলে কম্পিউটার
ব্যবহারকারীরা ওয়েবভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে তার কম্পিউটার
চালু করতে পারবেন। মাইক্রোসফট এই অপারেটিং সিস্টেমের নাম দিয়েছে ‘উইন্ডোজ
আজুর’। এ প্রসঙ্গে মাইক্রোসফট ইন্ডিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজন আনন্দ
বলেন, আমাদের জনপ্রিয় সব পণ্য ক্লাউড কম্পিউটিংনির্ভর করে তৈরি করছি। ফলে
কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা যে কোনো প্রান্ত থেকে সব ধরনের অ্যাপ্লিকেশন
চালাতে পারবেন।
মোবাইল কম্পিউটিং
কম্পিউটারের বিবর্তন কোন পথে? ডেস্কটপ কম্পিউটারে আমূল পরিবর্তন চলে এসেছে।
সিআরটি মনিটরের জায়গা দখল করেছে দৃষ্টিনন্দন এলসিডি মনিটর। কম্পিউটিং
ক্রমেই ডেস্কটপ কম্পিউটার থেকে সরে যাচ্ছে। নোটবুক কিংবা ল্যাপটপ পিসির
চাহিদা বেড়ে চলেছে। লক্ষ্য করা গেছে, অ্যাপল কর্পোরেশন ডেস্কটপ পিসি
অপেক্ষা ট্যাবলেট পিসি অধিক হারে বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছে। ব্যবহারকারীদের
দৃষ্টি এখন হালকা ও ক্ষুদ্রাকৃতির কম্পিউটিং ডিভাইসগুলোর দিকে। এইসব
আকর্ষণীয় ডিভাইসের প্রতি যেন তাদের আগ্রহ। তারা কাজের পরিবেশে স্বাচ্ছন্দ্য
অনুভব করছে।
স্মার্টফোন
স্মার্টফোনে ব্যবহারকারীরা কম্পিউটিং সুবিধা পাচ্ছে। এতে যুক্ত হচ্ছে নতুন
নতুন প্রযুক্তি। ইন্টেল গত ৪ মে, ২০১০ একটি ঘোষণায় জানায়, দীর্ঘ প্রতীক্ষার
পর তারা স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট কম্পিউটারের জন্য এটোম চিপ বাজারে ছাড়তে
যাচ্ছে। এটি এটোম জেড৬ প্রসেসর সিরিজের। ইন্টেল এটিকে বলছে স্মার্টফোনের
জন্য প্রসেসর। এটোম চিপ মূলত নোটবুক কম্পিউটারের জন্য নির্মিত হয়ে থাকে।
ইন্টেলের এ ঘোষণায় প্রযুক্তি বিশ্বে আরও পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
সেলফোন ব্যবহারকারীদের জন্য একটি সুখবর হচ্ছে, সাধারণত থ্রিডি সিনেমা,
থ্রিডি গেম দেখতে চোখে থ্রিডি গ্লাস পরতে হয়। কিন্তু এ ধারণায় নতুন মাত্রা
যোগ হতে যাচ্ছে। এবার এই প্রযুক্তিতে কোনো থ্রিডি গ্লাস বা চশমার প্রয়োজন
হবে না। সাদা-কালো টিভি যেভাবে পর্যায়ক্রমে রঙিন টিভিতে পরিণত হয়েছে,
সেভাবেই এলসিডি স্ক্রিনে পর্যায়ক্রমে থ্রিডি প্রযুক্তি সংযোজিত হবে। এই
ধারাবাহিকতায় মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে থ্রিডি টাচস্ক্রিন প্রযুক্তি যোগ হবে।
ফলে থ্রিডি সিনেমা ও থ্রিডি গেম দেখা যাবে সেলফোনে।
ট্যাবলেট পিসি
একটি ট্যাবলেট পিসি পরিপূর্ণভাবে ল্যাপটপ পিসির ফাংশন সাপোর্ট করছে। এতে
পাওয়া যাবে টাচস্ক্রিন সুবিধা এবং সেই সঙ্গে স্টাইলধর্মী। ট্যাবলেট পিসির
জন্য রয়েছে উইন্ডোজ এক্সপি এডিশন। এই ধরনের পিসিতে সামনে আরও প্রযুক্তি
সংযোজিত হবে।
মোবাইলে ভয়েস কমিউনিকেশনের যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। তবে মোবাইল ডিভাইসগুলোতে
ডাটা কমিউনিকেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে এই ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে
আরও প্রযুক্তিবান্ধব করার লক্ষ্যে জোর তত্পরতা চলছে। মোবাইল কম্পিউটিংয়ে
আরও পরিবর্তন আসছে, ডিভাইসগুলোতে এমনকি অ্যাপ্লিকেশনগুলোতে অভাবনীয়
পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে।
আগামী দিনের গাড়ি প্রযুক্তি
আগামী দিনের গাড়িতে আরও আধুনিক প্রযুক্তির সংযুক্তি ঘটবে। এই ধরনের
গাড়িগুলো হবে বুদ্ধিমান। এতে ফুয়েল সাশ্রয়ী প্রযুক্তির সমন্বয় থাকবে।
প্রতিটি গাড়ি একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হবে। গাড়িগুলো সেই সঙ্গে
রাস্তা এবং ট্রাফিক সিগন্যালের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলবে। সেনসরের
সহায়তায় আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য জানতে পারবে। এই ধরনের গাড়িতে কম্পিউটিং
সুবিধা একে আরও কার্যকর করতে সক্ষম হবে। এই গাড়িগুলো দুর্ঘটনার শিকার হবে
না, স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা একে দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করবে।
প্রযুক্তি মানুষের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি এনে দিয়েছে। তাই আগামী দিনে
প্রযুক্তিতে মানুষের চাহিদার কথা বিবেচনা করে পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। আসছে
নতুন নতুন প্রযুক্তি। এসব প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে চারপাশ। সব
পরিবেশে, সব ক্ষেত্রে আধুনিক জীবন ব্যবস্থার এক অনন্য সংযোজন। প্রযুক্তিতে
যে পরিবর্তন সূচিত হয়েছে, আগামী দিনে আরও পরিবর্তন আসছে। তারই আয়োজন চলছে
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে। কম্পিউটিংয়ে সংযোজিত হতে যাচ্ছে কৃত্রিম
বুদ্ধিমত্তা এবং কম্পিউটার প্রসেসর স্পিড আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। মানুষের
লাইফ স্টাইলে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে।
তথ্যসূত্র-দৈনিক আমারদেশ
http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/05/18/32368
Leave a comment