ধরুন, অনেকদিন পর এক পুরনো বন্ধুর ফোন পেয়েছেন। কিন্তু মোবাইলে তখন
একফোঁটাও চার্জ নেই। কিংবা ধরুন, দীর্ঘ ভ্রমনে হঠাৎ করে আপনার আইপডের
চার্জ ফুরিয়ে গেলো। আশেপাশে মোবাইল ফোন বা আইপডে চার্জ দেয়ার মতো তেমন
কোন সুযোগ নেই।এখন কি করবেন? চুপচাপ বসে থাকবেন। নাহ…একটু দাড়িঁয়ে
হাঁটাহাঁটি করে আসুন…এতেই আপনার পোষাকেই উৎপন্ন হবে বিদ্যূত। আর এতেই
চার্জ দেয়া যাবে আপনার মোবাইল ফোন কিংবা আইপডে। প্রিয় পাঠক, আপনারা
নিশ্চয়ই ভাবছেন আমি রসিকতা করছি? মোটেও না। ন্যানোপ্রযুক্তিকে কাজে
লাগিয়ে এই অসম্ভব ব্যাপারটিকে সম্ভব করে তুলেছেন বিজ্ঞানীরা। আসুন জেনে
নেই কিভাবে তা সম্ভব করেছেন বিজ্ঞানীরা…
শক্তির সংকট এখন বিশ্বজুড়ে। আর তাই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের
বিজ্ঞানীরাও চেষ্টা করছেন বিভিন্নভাবে শক্তি উৎপাদনের। আর এরই
ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব
টেকনোলজি’র একদল গবেষক জানালেন কাপড় থেকে শক্তি উৎপাদনের কথা। বিজ্ঞান
সাময়িকী ‘নেচার’ সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে। ন্যানোপ্রযুক্তিকে কাজে
লাগিয়ে তৈরি করা এসব পোষাক শরীরের নড়াচড়া থেকেই বিদ্যুত উৎপাদন করতে
পারবে। এই পোষাকের নাম দেয়া হয়েছে ‘পাওয়ার শার্ট’।
ছবিঃ অধ্যাপক Zhong Lin Wang এর হাতে ন্যানো জেনারেটর [সূত্রঃ বিবিসি থেকে]
এই গবেষনাদলের সদস্য জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি’র অধ্যাপক Zhong
Lin Wang পোষাক থেকে বিদ্যূত উৎপাদনের এই সমগ্র ব্যবস্থার নাম দিয়েছেন
তন্তু ভিত্তিক ন্যানোজেনারেটর (fiber-based nanogenerator)। তিনি
জানিয়েছেন, এই বিদ্যূত উৎপাদনের প্রক্রিয়াটি বেশ সহজ এবং অর্থনৈতিকভাবেও
লাভজনক হবে। পাওয়ার শার্টের মাধ্যমে বিদ্যূত উৎপাদনের জন্য কাপড়ের
তন্তুর সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে অতি সুক্ষ জিঙ্ক অক্সাইডের ন্যানোতার।
এসব ন্যানোতারের মাধ্যমে বিদ্যূত উৎপাদনের প্রক্রিয়াটি পিজোইলেকট্রিক
ইফেক্ট (piezoelectric effect) হিসেবে পরিচিত। চাপ (Stress) প্রয়োগের
মাধ্যমে বিদ্যুত উৎপাদন করার প্রক্রিয়া পিজোইলেকট্রিক ইফেক্ট নামে
পরিচিত। উল্লেখ্য, এক্ষেত্রে জিঙ্ক অক্সাইডের ন্যানোতার বেছে নেয়ার
পেছনেও প্রধান কারন ছিলো এই পিজোইলেকট্রিক ধর্ম। জিঙ্ক অক্সাইড
পিজোইলেকট্রিক ধর্ম প্রদর্শন করে এবং তা অর্ধপরিবাহী। পরীক্ষাগারে যেসব
ন্যানোজেনারেটর তৈরি করা হয়েছে এসব থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমান অনেক
কম। বিজ্ঞানীরা চিন্তাভাবনা করছেন একে আরোও কিভাবে কার্যকর করা যায় বা
কিভাবে একের অধিক ন্যানোজেনারেটর ব্যবহার করে উৎপাদিত বিদ্যূতের পরিমান
বাড়ানো যায়।
ছবিঃ কাপড়ের তন্তুর সাথে মিশিয়ে দেয়া হচ্ছে ন্যানো তার [সূত্রঃ সায়েন্স ডেইলি থেকে]
বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এই অভিনব প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত বিদ্যূত বিভিন্ন
মোবাইল, আইপডের মতো বহনযোগ্য ইলেকট্রনিক্স পন্যের পাশাপাশি যুদ্ধক্ষেত্রে
সৈনিকদের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করবে।
২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হওয়া জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি’র এই
গবেষনায় প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান দিয়েছে ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন,
ইউ এস ডিপার্টমেন্ট অব এনার্জি সহ আরোও বেশ কয়েকটি সংস্থা।
এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই, পাওয়ার শার্টের এই উদ্ভাবনটি বানিজ্যিকভাবে
আলোর মুখ দেখলে তা বহনযোগ্য ডিভাইস সমূহে বিদ্যূত চাহিদা মেটাতে একটি
কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে। এবং সেদিন হয়তো বেশি দূরে নয়…যেদিন আপনার
পছন্দের ফ্যাশন হাউজে ঝুলবে সময়ের শ্রেষ্ঠ পোষাক ‘পাওয়ার শার্ট’!
বিপ্র,
Well crafted….
Thanks,
🙂
শফিউল
দারুন হয়াছে
thats good
ম্মিজার ব্যাপার।
I think it is Update Duniyar result.
It’s magic.
বাহঃ আজব তো………………।