উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগগবেষণায় হাতে খড়ি

ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর (Impact factor) এবং সাইট স্কোর (CiteScore):

Share
Share

লেখক- আজিজুল হক
সহকারী অধ্যাপক, ইয়েংনাম বিশ্ববিদ্যালয়।

ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর এবং সাইটস্কোর হল জনপ্রিয় দুটি উপায় যা একাডেমিক জার্নালের গুরুত্ব এবং মান পরিমাপ করতে ব্যবহৃত হয়। এই পরিমাপগুলো গবেষক, প্রতিষ্ঠান এবং পাঠকদের বুঝতে সাহায্য করে যে একটি জার্নালে প্রকাশিত রিসার্চ পেপারগুলো কতবার অন্যদের দ্বারা সাইটেশন (Citation) হয়েছে।

ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর (Impact Factor):

ড. ইউজিন গারফিল্ড (Dr. Eugene Garfield) গবেষণার মান এবং গুরুত্ব পরিমাপ করার জন্য ১৯৬০ দশকের দিকে সর্বপ্রথম ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর ধারণার প্রবর্তন করেন। এজন্য তিনি ইনস্টিটিউট ফর সাইন্টিফিক ইনফরমেশন (ISI) প্রতিষ্ঠা করেন যা পরবর্তীতে ক্লারিভেট (Clarivate) হিসেবে গড়ে ওঠে। এই পরিমাপটি বর্তমানে ক্লারিভেট অ্যানালিটিক্স দ্বারা প্রদান করা হয় যা জার্নাল সাইটেশন রিপোর্টস (JCR) এর মাধ্যমে পাওয়া যায়।

কোন জার্নালের ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর নির্ণয় করা হয় গত দুই বছরে প্রকাশিত রিসার্চ পেপারের মোট সাইটেশন সংখ্যা এবং উক্ত জার্নালে সেই দুই বছরের মধ্যে প্রকাশিত মোট রিসার্চ পেপারের সংখ্যার অনুপাত দ্বারা। এখানে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ধরনের রিসার্চ পেপার যেমন গবেষণাপত্র এবং পর্যালোচনা প্রবন্ধ বিবেচনা করা হয়।

যেমন ধরুন একটি জার্নালে ২০২১ এবং ২০২২ সালে সর্বমোট প্রকাশিত রিসার্চ পেপারের সাইটেশন সংখ্যা ৮৫০ এবং উক্ত জার্নালে ওই দুই বছরে প্রকাশিত মোট রিসার্চ পেপারের সংখ্যা ১১৫।

তাহলে ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর = (২০২১ এবং 2022 সালে প্রকাশিত রিসার্চ পেপারের মোট সাইটেশন সংখ্যা) / (২০২১ এবং ২০২২ সালে প্রকাশিত মোট রিসার্চ পেপারের সংখ্যা)

= ৮৫০/১১৫ = ৭.৩৯

সাইটস্কোর (CiteScore):

ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টরের তুলনায় সাইটস্কোর তুলনামূলকভাবে নতুন একটি গাণিতিক পরিমাপ, যা ২০১৬ সালে এলসেভিয়ার (Elsevier) কর্তৃক চালু করা হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল আরো বিস্তৃত এবং স্বচ্ছ একটি মেট্রিক প্রদান করা যা গবেষণার দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাব মূল্যায়ন করতে পারে।

এই পরিমাপটি এলসেভিয়ারের স্কোপাস ডাটাবেজ দ্বারা প্রদান করা হয়। সাইটস্কোর নির্ণয় করা হয় মূলত কোন জার্নালে তিন বছরে প্রকাশিত রিসার্চ পেপারের ভিত্তিতে। ধরুন কোন জার্নালে ২০২০, ২০২১ এবং ২০২২ সালে প্রকাশিত রিসার্চ পেপারের মোট সাইটেশন সংখ্যা ১০৭০ এবং সেই তিন বছরে উক্ত জার্নালে প্রকাশিত মোট রিসার্চ পেপারের সংখ্যা ১৫৫।

তাহলে সাইটস্কোর = ১০৭০/১৫৫ = ৬.৯০

ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টরের তুলনায় সাইটস্কোরে আরো বেশি ধরনের ডকুমেন্ট বিবেচনা করা হয় যেমন গবেষণাপত্র, পর্যালোচনা প্রবন্ধ, কনফারেন্স পেপার, বইয়ের অধ্যায় এবং ডাটা পেপার।

কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?

ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর এবং সাইটস্কোর উভয়ই জার্নালের গুণগত মান এবং গুরুত্ব নির্ণয়ে মূল্যবান তথ্য প্রদান করে। ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর মূলত কোন জার্নালের স্বল্পমেয়াদী মান বুঝার জন্য উপযোগী, কিন্তু সাইটস্কোর আরো বিস্তৃত তথ্য প্রদান করে, কারণ এতে দীর্ঘ সময়কাল এবং বেশি ধরনের ডকুমেন্ট বিবেচিত হয়।


বিদ্র: ফেসবুক থেকে সংগ্রহীত:——–
https://www.facebook.com/share/p/1PJMzziHgF/

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ফ্রি ইমেইল নিউজলেটারে সাবক্রাইব করে নিন। আমাদের নতুন লেখাগুলি পৌছে যাবে আপনার ইমেইল বক্সে।

বিভাগসমুহ

Related Articles
গবেষণায় হাতে খড়ি

AI দিয়ে লেখা কি বৈজ্ঞানিক চুরি?

একাডেমিক লেখালেখিতে AI ব্যবহার কি চুরি? নীতিশাস্ত্র, বাস্তবতা এবং একাডেমিক অসদাচরণের শিকার...

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগগবেষকদের যন্ত্রপাতি

জাপানে বাংলাদেশি গবেষকদের সম্মেলন: জ্ঞান ও সহযোগিতার সেতুবন্ধন

জাপানের বাংলাদেশী গবেষকদের নেটওয়ার্ক কর্তৃক আয়োজিত চতুর্থ আন্তর্জাতিক জাপান-বাংলাদেশ গবেষণা ও অনুশীলন...

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগগবেষণায় হাতে খড়ি

রিসার্চ আর্টিকেল প্রকাশের জন্য উপযুক্ত জার্নাল কীভাবে নির্বাচন করবেন?

আপনার গবেষণা প্রবন্ধের জন্য সঠিক জার্নাল কীভাবে নির্বাচন করবেন তা শিখুন। এই...

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগকলাম

কলাম: তোমার বিশ্ববিদ্যালয় নয়, তোমার প্রস্তুতিই মুখ্য!

বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কীভাবে সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে...

উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগগবেষণায় হাতে খড়ি

কীভাবে হাই কোয়ালিটি জার্নালে গবেষণাপত্র পাবলিশ করবেন?

বিশ্বখ্যাত জার্নাল সম্পাদকদের কাছ থেকে বিশেষজ্ঞ টিপস এবং বিনামূল্যে অনলাইন কোর্সগুলি আবিষ্কার...

গবেষণার তথ্য ও বিজ্ঞানীদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে, বিজ্ঞানী.অর্গ নবীন প্রজন্মকে গবেষণার প্রতি অনুপ্রাণিত করে।

Contact:

biggani.org@জিমেইল.com

সম্পাদক: ড. মশিউর রহমান

Biggani.org connects young audiences with researchers' stories and insights, cultivating a deep interest in scientific exploration.

Copyright 2024 biggani.org