ভাসমান সবজি চাষ

ভাসমান সবজি চাষ

বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ, কিন্তু দেশের বেশির ভাগ এলাকা নিন্মাঞ্চাল হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত থাকে। উত্তরাঞ্চালের হাওড় এলাকা শুকনো মৌসুমেও পানিতে ডুবে থাকে। সে কারণে দানাশষ্যসহ সবজি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আর এ কারণে কৃষি প্রধান বাংলাদেশে বর্ষা মৌসুমে কিছু কিছু অঞ্চলে সবজির আকাল দেখা যায়। এ দিকটা বিবেচনা করে গবেষণা শুরু করেন বাংলাদেশের কৃষি বিজ্ঞানীরা। তেমনি এক গবেষণায় ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন বরিশালের বাবুগঞ্জের রহমপুর আঞ্চলিক কৃষিগবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা।

বরিশালের বাবুগঞ্জের রহমতপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষামূলক ভাবে ভাসমান পদ্ধতিতে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন সেখানকার কৃষি গবেষকরা। পরীক্ষামূলক এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ শুরু করলেও বর্তমানে বানিজ্যিকভাবে এর চাষাবাদ শুরু করলে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখছেন রহমতপুর আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্রটি।

ভাসমান কৃষি বিষয়ক গবেষণা কর্মসূচির প্রধান গবেষক  ড. মো. আলীমুর রহমান জানান, ২০১৪ সালে এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ শুরু করেন এখানকার বিজ্ঞানীরা। ইতোমধ্যে গবেষণা মাঠে ‌‘ভাসমান বেড ও মাঁচা পদ্ধতিতে’ চাষকৃত লতাজাতীয় সবজি যেমন- শসা, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, চালকুমড়া, চিচিঙ্গা, বরবটি, করলা প্রভৃতি ফসলের আশাব্যাঞ্জক ফলন পাওয়া গেছে। তবে ভাসমান বেডে হাইব্রিড জাতের সবজির ফলন স্থানীয় জাতের তুলনায় অনেক বেশি।

রহমতপুর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আব্দুল ওহাব বলেন  ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, কল-কারখানা নির্মাণের ফলে প্রতিবছর চাষের জমি কমে যাচ্ছে। গত তিন দশকে দেশে প্রায় ৩০ লাখ হেক্টর কৃষি জমি কমে গেছে এবং এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পাশাপাশি শাক-সবজিকে তীব্র প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হচ্ছে। কৃষি জমি হ্রাসের ফলে বিকল্প উপায়ে সবজি চাষে সফলতা অর্জন করা সম্ভব।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল -এর তথ্য অনুযায়ী দেশে প্রায় ৩০ লাখ হেক্টর মধ্যম নিচু থেকে অতি নিচু জমি রয়েছে যা দেশের মোট ভূমির শতকরা প্রায় ২১ ভাগ। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, হঠাৎ উপকূলীয় বন্যার কারণে সারা দেশে ব্যাপক এলাকা জলমগ্ন থাকে। এর মধ্যে দেশের দক্ষিণাঞ্চল ও হাওড় অঞ্চল অন্যতম।

গবেষণার মাধ্যমে আধুনিক লাগসই ভাসমান কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে জলমগ্ন বা পতিত জমি ফসল আবাদের কাজে ব্যবহার করা যায়। এতে ফসলের সার্বিক উৎপাদন বাড়বে যা পরিবর্তিত জলবায়ুগত পরিস্থিতিতে দেশের জলমগ্ন এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

News & Picture Source: http://www.ittefaq.com.bd/wholecountry/2017/08/19/124481.html

 


বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে  আরো নতুন নতুন সংবাদ জানতে সাবস্ক্রাইব করুন।

About salmaAkter

Check Also

গবেষণাপত্র: Increasing homestead Production through Microfinance

ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রবলচাপের ফলে প্রতিবছর ১% করে কৃষি জমি কমছে। আবাসন ব্যবস্থাপনার জন্য উজাড় হচ্ছে …

ফেসবুক কমেন্ট


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।