বিশ্ব যখন নবায়নযোগ্য শক্তি ও কার্বন–নিরপেক্ষ ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন সেই যাত্রার অন্যতম অগ্রদূতদের একজন অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় গবেষণা সংস্থা CSIRO–এর প্রিন্সিপাল সায়েন্টিস্ট ড. নওশাদ হক। CSIRO বা Commonwealth Scientific and Industrial Research Organisation হল অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংস্থা, যা দেশটির বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও শিল্পখাতে উদ্ভাবনের প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্য, শক্তি, কৃষি ও খনিজসহ নানা ক্ষেত্রে গবেষণার মাধ্যমে CSIRO বিশ্বব্যাপী বাস্তব সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার, বিকেল ৫টা (বাংলাদেশ সময়) বিজ্ঞানী অর্গ আয়োজন করছে অনলাইনে তাঁর সঙ্গে একটি বিশেষ লাইভ সাক্ষাৎকার, যেখানে তরুণ শিক্ষার্থীরা জানতে পারবেন বৈশ্বিক গবেষণার ভেতরের গল্প, বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি, এবং ভবিষ্যতের শক্তি প্রযুক্তির দিকনির্দেশনা।
ড. নওশাদ হকের শিক্ষাজীবনের শুরু বাংলাদেশে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি বিভাগে। সেখান থেকে তিনি উচ্চশিক্ষার লক্ষ্যে যুক্তরাজ্যের Bangor University–তে ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজিতে এমএসসি সম্পন্ন করেন এবং পরবর্তী সময়ে অস্ট্রেলিয়ার University of Sydney থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং–এ পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। আজ তিনি CSIRO–এ প্রায় দুই দশকের অভিজ্ঞতায় একজন গবেষক, দলনেতা ও নীতি–পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন। তাঁর প্রধান গবেষণা ক্ষেত্র হাইড্রোজেন এনার্জি সিস্টেম, কম–নির্গমন জ্বালানি প্রযুক্তি, টেকনো–ইকোনমিক মডেলিং এবং লাইফ সাইকেল অ্যাসেসমেন্ট (LCA), যার মাধ্যমে একটি প্রযুক্তির অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও পরিবেশগত প্রভাব একসঙ্গে বিশ্লেষণ করা হয়।
গবেষণার পাশাপাশি তিনি শিল্পখাতে পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন খনিজ, ধাতু, ব্যাটারি, ই–ওয়েস্ট ও বনশিল্পে। তাঁর নেতৃত্বে কম খরচে এবং বেশি কার্যকর ইলেক্ট্রোলাইজার ও ফুয়েল–সেল প্রযুক্তি উন্নয়নের কাজ চলছে, যা ভবিষ্যতের হাইড্রোজেন অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে দেবে। বর্তমানে তিনি India–Australia Minerals Scholar Network–এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যার লক্ষ্য দুই দেশের মধ্যে ক্রিটিক্যাল মিনারেলস, গ্রীন স্টিল ও নবায়নযোগ্য প্রযুক্তিতে গবেষণা ও মানবসম্পদ গড়ে তোলা। এ ছাড়া তিনি Swinburne University of Technology–এর অ্যাডজাঙ্ক্ট অধ্যাপক, Springer প্রকাশিত Journal of Sustainable Metallurgy–এর সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এবং দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক সরকার ও শিল্পগোষ্ঠীর বিশ্বাসভাজন উপদেষ্টা।
এই সাক্ষাৎকারে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন করার সুযোগ পাবেন, বিদেশে পড়াশোনার পথচলা, স্কলারশিপ অর্জনের কৌশল, গবেষণায় বিষয় নির্বাচন, আন্তর্জাতিক ল্যাবে কাজের অভিজ্ঞতা, এবং বাংলাদেশের বাস্তবতায় বিজ্ঞানচর্চার ভবিষ্যৎ নিয়ে। বিশেষ করে যারা অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ বা অন্যান্য দেশে মাস্টার্স বা পিএইচডি করতে আগ্রহী, তাঁদের জন্য এটি হবে এক অনন্য শেখার সুযোগ, কারণ ড. নওশাদ হক বিগত বছরগুলোতে ২০ জন পিএইচডি গবেষককে সহ–তত্ত্বাবধান করেছেন এবং বহু তরুণ গবেষকের মেন্টর হিসেবে কাজ করেছেন।
বিজ্ঞানী অর্গ বিশ্বাস করে, এই সাক্ষাৎকার কেবল একটি অনুষ্ঠান নয়, এটি একটি প্রেরণার দরজা। যারা মনে করেন, “বাংলাদেশ থেকে শুরু করে বিশ্বজুড়ে গবেষণা করা কি সম্ভব?”, ড. নওশাদ হকের জীবনই তার জবাব। তাঁর মূল দর্শন, Science for Development, অর্থাৎ উন্নয়নের জন্য বিজ্ঞান, আর বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে সমাজ বদলানো।
সব শিক্ষার্থী, গবেষণাপ্রার্থী এবং আগ্রহীদের আমন্ত্রণ, ১০ ডিসেম্বর, বিকেল ৫টায় আমাদের সঙ্গে যুক্ত হন biggani.org–এর এই বিশেষ লাইভ সাক্ষাৎকারে। আপনার প্রশ্ন, আপনার কৌতূহল, আপনার স্বপ্ন, সবকিছু নিয়েই আসুন। ভবিষ্যতের বিজ্ঞানীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না।
তারিখ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, সন্ধ্যা ৫টা (বাংলাদেশ সময়)
রেজিস্ট্রেশন লিংক: https://forms.gle/ndW91tPciZvaj9L28
অনুষ্ঠানটি গুগল মিট এর মাধ্যমে অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে। ফ্রি রেজিস্ট্রেশন এবং শুধু মাত্র রেজিস্ট্রেশনকারিদেরকেই বিস্তারিত লিংক পাঠানো হবে।

Leave a comment