আধুনিক বিশ্বে প্রযুক্তির উন্মেষ ঘটিয়ে দ্রুত এগিয়ে চলেছে বিশ্ব। তারই ধারাবাহিকতায় নব নব পেশার সম্মিলন ঘটে চলেছে আমাদের চারপাশে। মানুষ স্বাভাবিকভাবেই আধুনিক প্রবন। ফলে আধুনিকতা সমৃদ্ধ পেশার চাহিদা সবসময়ই বৃদ্ধির পথে। সারাবিশ্বে আধুনিকতার উন্নয়নের সাথে সাথে এমন অনেক পেশা রয়েছে যাদের চাহিদা বিন্দুমাত্র হ্রাস পায়নি। হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার তার মধ্যে অন্যতম। হোমিওপ্যাথিক শিক্ষা অর্জন করেই হতে হয় হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার।
বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক উন্নতদেশেই হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার যথেষ্ট কদর রয়েছে। হোমিও প্যাথিক চিকিৎসার অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে হোমিওপ্যাথিক ঔষধে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। ফলে এ সংক্রান্ত চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে আমাদের দেশে প্রচুর মানুষ রয়েছে। চিকিৎসা শাস্ত্রের অন্যতম একটি ক্ষেত্র হোমিও চিকিৎসা। এই চিকিৎসা যারা প্রদান করেন তাদেরকেই মূলত হোমিও প্যাথিক ডাক্তার হিসেবে বিবেচিত করা হয়।
বাংলাদেশে হোমিও চিকিৎসার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে স্বল্প খরচে চিকিৎসা সেবা প্রদানের কারণে এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াবিহীন চিকিৎসার কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষ হোমিও চিকিৎসার উপর নিভর্রশীল। ফলে হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলে আজীবন উপার্জন করা সম্ভব। বরং এই পেশার সবচেয়ে ভাল দিক হচ্ছে এই পেশাতে নিয়োজিত ডাক্তারদের যত অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পাবে ততই আয় বৃদ্ধি পেতে থাকে। এমনকি হোমিও চিকিৎসকরা আজীবন চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে যেতে সক্ষম।
সুবিধাঃ
হোমিও চিকিৎসক হিসেবে ডিএইচএমএস কোর্স (ডিপ্লোমা) এবং বিএইচএমএস কোর্স (বাচেলর) সম্পন্নকারীরা হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার হিসেবে সরকার কতৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হবার মাধ্যমে সারাদেশে হোমিও চিকিৎসা প্রদান করতে পারেন। এছাড়াও শিক্ষাসম্পন্নকারীরা সরকার কর্তৃক পরিচালিত বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়োগ পেতে সক্ষম।হোমিওপ্যাথি ডাক্তারদের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে সারাদেশ ব্যাপী।
বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সংক্রান্ত পড়ালেখা সম্পন্ন করার পর হোমিও ডাক্তার হিসেবে প্রত্যেকেই একটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর অর্জন করে। যার ফলে সরকারি চাকরির উপর নিভর্রশীল না হয়ে বেশিরভাগই স্ব উদ্যোগে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত হয়ে থাকেন। এই পেশাতে উল্লেখযোগ্য সুবিধা হচ্ছে, একজন হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার বাংলাদেশের যে কোন প্রান্তে নিজ সুবিধাজনক স্থানে চিকিৎসা সেবা শুরু করতে সক্ষম। এই পেশাতে সদ্য পাশ করা একজন ডাক্তার প্রাথমিকভাবে প্রতিমাসে ৩০-৫০ হাজার টাকা উপার্জন করেত সক্ষম হয়ে থাকে। তবে এই পেশাতে যোগ্যতার দাম অনেক বেশি। একজন রোগীকে ডাক্তার হিসেবে কত দ্রুত সুস্থ করতে পারেন অর্থাৎ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় একজন চিকিৎসকের হাতের যশের উপর নিভর্র করে উপার্জনের পরিমাণ। অভিজ্ঞতার সাথে সাথে বৃদ্ধি পেতে পারে একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের প্রতিমাসের উপার্জনের পরিমাণও। অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণের মাধ্যমে চিকিৎসায় সফল একজন চিকিৎসকের প্রতিমাসের বেতন ৭০-৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। ফলে ক্যারিয়ার হিসেবে যে কেউ এই পেশাকে গ্রহণ করতে পারেন। সেই সাথে দেশের চিকিৎসা সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করনের মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতের উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারেন।
আমাদের দেশে চাকরির পদের তুলনায় চাকরিপ্রার্থীর সংখ্যা দিন দিনই বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। ফলে প্রতিবছরই ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠীর সংখ্যা। বাস্তবতার নিরীক্ষে বাংলাদেশে প্রয়োজন বিশেষায়িত শিক্ষার। যার মাধ্যমে শিক্ষা সম্পন্ন করার পরপর কেউ যেন চাকরির পিছনে না ছুটে স্বনিভর্রতার সাথে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়ে উঠে। এরই ধারাবাহিকতায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ডিগ্রী অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে দক্ষ হোমিও চিকিৎসক রূপে ক্যারিয়ার শুরু করা সম্ভব। হোমিও চিকিৎসায় নিয়োজিত হলে এবং সফলভাবে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম হলে আপনার ক্যারিয়ার আজীবন সচল থাকবে কোন বিরতি ছাড়াই।
বাংলাদেশে অগনিত মানুষ রয়েছে যারা কেবলমাত্র হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে থাকে। বিশেষ করে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা স্বল্পমূল্যে করা সম্ভব হবার কারণে এবং হোমিও ঔষধের মূল্যে অনেক কম হবার কারণে বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠী হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সেবার উপর নিভর্রশীল। যার ফলশ্রুতিতে এই পেশাতে নিয়োজিত চিকিৎসকদের ক্যারিয়ারে প্রতিষ্ঠা পেতে বেশি দিন প্রয়োজন হয় না।
হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজে শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে স্বল্প ব্যয়ে এবং স্বল্পসময়ে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক
রূপে জনগণের চিকিৎসা প্রদান করা সম্ভব। সেই সাথে দেশের স্বাস্থ্যখাতে সরাসরি অবদান রাখার পাশাপাশি নিজের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা আনয়ন সম্ভব। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি ক্যারিয়ারে সফল হতে অনেকেই এখন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করছে। আপনি যদি এই পেশাতে ভব্যিষতে কাজ করতে চান তবে অবশ্যই দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।
আমাদের দেশে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক তৈরিতে ২টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। তার মধ্যে ১টি সরকারি হোমিও প্যাথিক মেডিকেল কলেজ এবং ১টি বেসরকারি
হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ । এছাড়াও সারা বাংলাদেশে হোমিও প্যাথিক চিকিৎসক তৈরিতে ৩৭টি ইনস্টিটিউট রয়েছে।
হোমিও চিকিৎসক হিসেবে বাংলাদেশে যথেষ্ট সম্মান এবং স্বচ্ছলতার সাথে জীবনযাপন করা সম্ভব। সাফল্যজনক ভাবে শিক্ষা অর্জনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে প্রায় সকলেই স্বউদ্যোগে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হিসেবে সাফল্য অর্জন করতে সচেষ্ট হয়েছে।
Leave a comment