আমরা খালি চোখে নানা ধরনের জীব-জন্তু ও উদ্ভিদ দেখি। এই দৃশ্যমান জগতের নানা রূপ আমাদের মোহাচ্ছন্ন করে রাখে। কিন্তু এমন কিছু ক্ষুদ্র জীব রয়েছে যাদের আমরা খালি চোখে দেখি না। তবে এদের প্রভাব আমরা মানুষসহ অন্যান্য প্রাণী ও উদ্ভিদের উপর অত্যন্ত শক্তিশালী। এই অণুজীবরা পৃথিবীতে জীবনের শুরু থেকে বিদ্যমান হলেও বিজ্ঞানীরা এদের সন্ধান পেয়েছেন মাত্র ২০০ বছর আগে। সম্ভবত দৃশ্যমান জগত থেকে অদৃশ্যের খোঁজ পাওয়া কঠিন বলে অণুজীবরা এতকাল আমাদের অগোচরে ছিল। কিন্তু বর্তমানে আমরা এসব অণুজীবদের সাথে পরিচিত। ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, আণুবীক্ষণিক ছত্রাক, প্রটোজোয়া এদের নাম শুনলে আমাদের মনে এখন এইডস, যক্ষ্মা, বার্ড ফ্লু নাম চলে আসে। তবে মজার বিষয় অধিকাংশ অণুজীব আমাদের উপকারে সার্বক্ষণিকভাবে লেগে আছে। এই লেখায় অণুজীবদের চমৎকার কিছু দিক তুলে ধরব।
মাটিতে অবস্থিত অণুজীবরা জৈব বর্জ্যকে পচিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। একই সাথে মাটি, বায়ু, পানি আর জীবনের মাঝে নানা রাসায়নিক পদার্থের ভারসাম্য রক্ষা করে। কিছু অণুজীব সালোকসংশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যা কি না জীবজগতে খাদ্য ও অক্সিজেন সরবরাহের উপর।
এমনকি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ফলাফল নির্ধারণেও অণুজীবের ভূমিকা ছিল। আপনি অবাক হতে পারেন তবে কথাটা সত্যি! অণুজীবের সাহায্যে উৎপন্ন এসিটোন দিয়ে কর্ডাইট (এক ধরনের ধোঁয়াবিহীন বারুদ) তৈরি করা হয়। যা যুদ্ধে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে।
আমরা খাবার খাওয়ার পরতা হজম হয়ে আমাদের শক্তি যোগায়। এই পুরো প্রক্রিয়াটি অণুজীব ছাড়া অসম্ভব! মানুষ ও অন্যান্য পশুর অন্ত্রে অবস্থিত অণুজীব খাদ্য হজমে সাহায্য করে। ভিটামিন-বি বিপাকে ও ভিটামিন-কে রক্তজমাট বাঁধতে সাহায্য করে। এই ভিটামিন সংশ্লেষণের জন্য অণুজীব প্রয়োজন।
একইভাবে ফুড ইন্ডাস্ট্রিতে ভিনেগার, আচার, মদ, এলকোহলিক বেভারেজ, সয়া সস, পনির, দই, পাউরুটি ইত্যাদি খাদ্য তৈরিতে অণুজীব ব্যবহার করা হয়। এমনকি আপনার পছন্দের জিন্স প্যান্টটি তৈরিতেও অণুজীবের ব্যবহার থাকতে পারে।
(Microbiology an introduction by Tortora, Funke, Case বইটির ‘Microbes in our life’ অনুচ্ছেদ অবলম্বনে লেখা)
*সামনের লেখায় থাকবে অণুজীবের আরও অনেক কথা।
অনেক কিছু জানতে পারলাম ।
অনুুুুজিব আমাদের ক্ষতি খেকে ও বেশী উপকার করে