নবীন প্রজন্মদের সাক্ষাৎকার সিরিজে এবার আমরা সাক্ষাৎকার নিয়েছি সাইফ আহমেদ এর। তিনি বর্তমানে নর্থ সাউথ ইউনিভারসিটি তে ই সি ই ডিপার্টমেন্টে লেকচারার এবং ইনভিসিবল টেকনোলজিস-এ, এ আই ট্রেনিং টীম এর স্কোয়াড লিড হিসেবে কাজ করছেন। তার সাক্ষাৎকারটি পড়ুন:
প্রথমেই আপনার সম্বন্ধে আমরা জানতে চাই
আমার প্রোগ্রামিং সবসময় ভালো লাগতো, আমি আমার বিএসসি ইলেকট্রনিক্স এন্ড টেলিকম্যুনিকেশনে শেষ করার পর আব্বে স্কুল অফ ফোটোনিক্স থেকে মাস্টার্স শেষ করি ফোটোনিক্স এর উপর। আমি কমিক্স পড়তে আর কম্পিউটার গেম্স্ খেলে সময় কাটাতে খুব পছন্দ করি ।
ভলান্টিয়ারিং এবং মেন্টরিং আমার খুবই পছন্দের একটা কাজ । আমি এই কারণে আমার ইউনিভার্সিটি এর আই ই ই ই স্টুডেন্ট ব্রাঞ্চ এর ব্রাঞ্চ কাউন্সেলর এবং আই ই ই ই বাংলাদেশ সেকশন-এর, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাপ্লিকেশনস সোসাইটি এর জেনারেল সেক্রেটারি এর দায়িত্ব পালন করছি। আমি মেন্টরিং এবং জ্ঞান ছড়িয়ে গবেষণা করার অনুপ্রেরণা পাই ।
আপনার গবেষনার বিষয় কি?
আমি ডিপ লার্নিং এবং মেশিন লার্নিং মডেল নিয়ে রিসার্চ করি। মূলত মেডিকেল ডেটা (এক্স রে, ইমেজ, থ্রী ডাইমেনশনাল স্ক্যান, ইত্যাদি) বিভিন্ন মডেল এর সাথে ব্যবহার করি।
গত দুই বছর যাবৎ আমি এইসব মডেলদেরকে মুখ ও দাতের জটিল রোগ নির্ণয় করার জন্য ব্যবহার করছি।
ইতিমধ্যে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে দাঁত, মুখ ও চোয়ালের রোগ নির্ণয়ের বিষয় নিয়ে আমি আমার ছাত্রদের নিয়ে ১৫টার অধিক জার্নাল লিখেছি । আমাদের কাজগুলো নেচার, স্প্রিঞ্জার এবং এমডিপিআই এর মতো স্বনামধন্য অনেক জার্নালে পাবলিশ হয়েছে।
আপনার গবেষনার কাজগুলি কিভাবে আমাদের উপকৃত করছে কিংবা করবে?
দাঁতের ও মুখের রোগ নির্ণয় নিয়ে পৃথিবীতে কাজ খুব বেশি হয়না, অথচ আমরা যারা কোনোদিন দাঁতের কোনো রোগে কোনোদিন আক্রান্ত হয়েছি, আমরা জানি এইটা কতটা কষ্টকর। আমরা এই মডেল গুলো ব্যবহার করে ডাক্তার এর কাছে যাওয়ার আগে প্রথম লেভেল এ কিছু সতর্কতা নিতে পারি। এটি বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোকেদের উপকৃত করবে যারা সহজে দাঁতের ডাক্তারের কাছে যেতে পারেনা।
গবেষনা কাজের বিশেষ কোন অভিজ্ঞতা কি আমাদের সাথে শেয়ার করবেন?
আমি যখন রিসার্চ শুরু করি দাঁত নিয়ে, প্রথমের দিকে এমন অনেক ছবি নিয়ে কাজ করেছি যেটা দেখলে খুব অস্বস্তিবোধ করতাম। এত রকমের দাঁতের ফাটল এবং দাঁতের গহ্বরের ছবি দেখার পর আমি আমার নিজের মুখের স্বাস্থ্য সম্পর্কে খুব সচেতন হয়ে যাই ।
একজন বিজ্ঞানীর কি কি গুণ থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন?
গবেষণা করার জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ একটি গুন হল শেখার ইচ্ছা। আমি গবেষণার সময় অনেক টেকনিক এবং এলগোরিদম প্রথমে ব্যবহার করতে জানতাম না, কিন্তু আমার শেখার ইচ্ছা থাকার কারণে অনেক কাজ থেকে হার মানিনি কোনদিন।
বাংলাদেশের তরুণ শিক্ষার্থী যারা বিজ্ঞানে কাজ করতে চায় – তাদের জন্য আপনার কোন ম্যাসেজ কিংবা বার্তা কি?
প্রচুর ধৈর্য্য ধরা শিখুন। আজকের ফাস্ট-পেইসড পরিবেশে বিজ্ঞান নিয়ে কাজে সবচাইতে বেশি দরকার ধৈর্য্য। অনেক সময় রিভিউ আসতে দেরি হবে, দেখবেন অনেক সময় আপনার পছন্দের কাজটা আপনার কাঙ্খিত জার্নালে রিজেক্ট হবে, রিভিউ বোর্ড অনেক সময় আপনার কাজ কে নিয়ে এমন অনেক নেগেটিভ কমেন্ট করবে যে আপনার কাজ করার সব অনুপ্রেরণা আপনি হারিয়ে ফেলবেন। তখন সেই নেগেটিভ কমেন্ট গুলা কে গঠনমূলক সমালোচনা ভেবে আপনার এগিয়ে যেতে হবে।
আপনার যোগাযোগের তথ্য:
আমার ওয়েবসাইট: aguynamedsaif.com এবং আমার গুগল স্কলার এ্যাকাউন্টে সাধারণত আমার কনট্যাক্ট এবং আমার রিসার্চের অনেক ইনফরমেশন দেয়া থাকে। এছাড়া আমি লিংকডইনে আমার কাজ শেয়ার করতে খুব পছন্দ করি।
আপনার লিংকডইন সাইটের ওয়েবএড্রেস
https://www.linkedin.com/in/aguynamedsaif
আপনার ওয়েবসাইট, গবেষনাকাজের লিংক ইত্যাদি
ওয়েবসাইটঃ https://aguynamedsaif.com/
Google Scholar: https://scholar.google.com/citations?user=vrwNr2gAAAAJ&hl=en
আমরা সাইফ আহমেদ এর উত্তোরত্তর সাফল্য কামনা করি।
Leave a comment