কোয়ান্টাম বলবিদ্যা বা কোয়ান্টাম মেকানিক্স হলো আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের একটি শাখা যা পরমাণু এবং অতি পারমাণবিক কণার / তরঙ্গের মাপনীতে পদার্থের আচরণ বর্ণনা করে।
এটি ক্ষুদ্র কণার জগৎ (যেমন: ইলেকট্রন, প্রোটন,ফোটন )
বোঝার জন্য তৈরি। নিউটনের তত্ত্ব এখানে কাজ করে না।
মূল বৈশিষ্ট:
- ইলেকট্রন কখনো কণা, কখনো বা তরঙ্গের মতো আচরণ করে (wave-particle duality )।
উদাহরণ:আপনি যদি একটি ইলেকট্রনকে ছিদ্রের দিকে ছুঁরেন, এটি একসাথে একাধিক ছিদ্র দিয়ে যেতে পারে। – যতক্ষণ না সেটা আপনি দেখছেন।
- আপনি কখনোই একসাথে কণার অবস্থান ও গতি নির্ভুলভাবে জানতে পারবেন না।
- কণাগুলো সম্ভাব্য অবস্থানে থাকে, নিশ্চিত কোনো অবস্থানে নয়।
- একটি কণা একসাথে একাধিক অবস্থানে থাকতে পারে – যতক্ষণ না আপনি পরিমাপ করেছেন।
- দুটো কণা এমনভাবে সংযুক্ত থাকতে পারে যে, একটার ওপর যেকোনো পরিবর্তন আরেকটা কে তৎক্ষণাৎ প্রভাবিত করে – এমনকি তারা আলাদা গ্রহে থাকলেও।

কোয়ান্টাম মেকানিক্সের মূল ভিত্তি
পদার্থ বিজ্ঞানের তিনটি অপ্রতিরোদ্ধ তত্ত্বের উপর কোয়ান্টাম মেকানিক্স দাড়িয়ে আছে। এগুলো হলো –
- শক্তির কোন্টায়িত নীতি
- ডি -ব্রগলির কণা-তরঙ্গ দিত্বতা
- হাইজেনবার্গের ও অনিশ্চয়তা নীতি।
কোয়ান্টাম মেকানিক্স এর ইতিহাস
কোয়ান্টাম তত্ত্বের প্রবক্তা হিসেবে আমরা ম্যাক্স প্লান্কের নামই বলে থাকি। কিন্তু কোয়ান্টাম তত্ত্ব কে সম্প্রসারণ করেছেন বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন।
মূলত কোয়ান্টাম মেকানিক্সের গঠন শুরু হয় বোর পরমাণু মডেল থেকে। যখন বোরের পরমাণু মডেলের
কোনো কক্ষপথে ঘোরা ইলেকট্রনের কৌনিক ভরবেগ h/2π এর গুনিতক ধরা হলো তখন থেকেই কোয়ান্টাম মেকানিক্স এর শুরু। কিন্তু এই কোয়ান্টাম মেকানিক্স সম্পূর্ণ বিকশিত নয়।
সব পদার্থই ছোট ছোট অনু-পরমাণু নিয়ে বানানো। এগুলো এতই ছোট যে কোনো মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে এদের দেখা যায় না। আর এদের দেখা না গেলে এদের গতি-প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা করা যাবে কী করে ?
আর এসব সমস্যা সমধানের জন্য আলবার্ট আইনস্টাইন বলেছিলেন যে কোনো বস্তু যাদের গতি-প্রকৃতি নিয়ে আপাত পক্ষে এক্সপেরিমেন্ট সম্ভব নয়, সেখানে যদি সাধারণ বলবিদ্যার সব নীতি অনুসরণ করে ভাবনাতেই কোন এক্সপেরিমেন্ট করা যায় তাহলে সেটাকে thought experiment বলে মান্যতা দেওয়া হবে।
আবার যদি আমাদের এক্সপেরিমেন্ট আসি আর কোন ইলেকট্রন কে স্পেকট্রোস্কোপে দেখার চেষ্টা করি তাহলে কোন মুহূর্তে এর ভরবেগ নির্ণয় করতে করতে এর অবস্থান পরিবর্তন হয়ে যাবে। অর্থাৎ ইলেকট্রনের অবস্থান ও ভরবেগ একসাথে নির্ণয় করলে কিছু ভুল চলে আসবে।
বিজ্ঞানের ভাষায় কে uncertainty বলে। এর থেকেই ইলেকট্রন বা ছোট কণাগুলো কে নিউটনের সাধারণ বলবিদ্যার আওতা থেকে বের করে বলবিদ্যার নতুন শাখায় এদের নিয়ে অধ্যয়ন শুরু হয় যার পরে নাম দেওয়া হয় কোয়ান্টাম মেকানিক্স।
Reference

Leave a comment