অতিথি লেখক- আজিজুল হক
সহকারী অধ্যাপক, ইয়েংনাম বিশ্ববিদ্যালয়।
বর্তমান জগতে গবেষণায় একজন গবেষকের গ্রহণযোগ্যতা কিংবা সাফল্য মাপার সবচেয়ে প্রচলিত উপায় হলো citation সংখ্যা (বিতর্কিত)। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ, পদোন্নতি, কিংবা গবেষণার অনুদান নির্ধারণে এই সংখ্যাটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে ভয়ঙ্কর এক বাস্তবতা, Google Scholar-এর মতো জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মেও সহজেই এই cite সংখ্যা জালিয়াতির মাধ্যমে বাড়ানো সম্ভব।
প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে Hazem Ibrahim, Fengyuan Liu, Yasir Zaki এবং Talal Rahwan নামের চার গবেষক প্রায় ১৬ লাখ Google Scholar প্রোফাইল বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য প্রকাশ করেন যা গবেষণাজগতে নাড়া দিয়েছে। তারা দেখিয়েছেন, Google Scholar-এ এমন এক ধরণের ‘citation boosting’ সিস্টেম সক্রিয় রয়েছে যার মাধ্যমে গবেষকেরা ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেদের প্রোফাইলে কোনো রকম বাধা ছাড়াই cite সংখ্যা বাড়িয়ে নিতে পারেন।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্য হলো, গবেষকরা যখন একটি ছদ্মনামে (ভুয়া লেখক সেজে) একটি citation বিক্রির প্রতিষ্ঠান এর সাথে যোগাযোগ করেন, তারা সহজেই সামান্য অর্থের বিনিময়ে ৫০টি cite কিনে নিতে সক্ষম হন। এভাবে তাঁরা প্রমাণ করেন Google Scholar-এ জালিয়াতির মাধ্যমে citation সংখ্যা বাড়ানো শুধু সম্ভবই নয়, বরং সেটি বেশ সহজ একটি প্রক্রিয়া।
আরও বিস্ময়কর তথ্য হলো, বিশ্বের বহু উচ্চমর্যাদাসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকেরা Google Scholar-এর এই citation সংখ্যা-ই গবেষকের মান নির্ধারণে প্রধান মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহার করেন। অথচ এই প্ল্যাটফর্মের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও যাচাই প্রক্রিয়া এতই দুর্বল যে, যেকোনো ব্যবহারকারী চাইলেই নিজের প্রোফাইলে অযাচিত cite যোগ করে নিজের অবস্থান বাড়িয়ে নিতে পারেন।
এই গবেষণা আমাদের সামনে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলে
“শুধুই কি cite সংখ্যা দেখে একজন গবেষকের মান যাচাই করা উচিত?”
বিদ্র: ফেসবুক থেকে সংগ্রহীত:——–
https://www.facebook.com/share/p/19wvhkJU6u/
Leave a comment