প্রথমবারের মতো এইবারের ২০২৩ এর একুশে বই মেলায় আসছে বাংলাদেশ ও বিশ্ব বিজ্ঞান একাডেমির ফেলো কৃষি বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মো. তোফাজ্জল ইসলামের আধুনিক জ্ঞান এবং বিজ্ঞানের আলোকে রচিত সম্পূর্ণ নতুন বই ‘জিনোম এডিটিং’। ইংরেজীতে ভাষায় এই ধরনের বইগুলো অনেক পাওয়া গেলেও আমাদের দেশের বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জন্য অনায়াসে বুঝতে পারা কিছুটা দুরূহ ও দুঃসাধ্য। জীবকোষে কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্য বা পরিবর্তন আনতে কোষের ডিএনএকে পরিবর্তন করার প্রযুক্তি হলো জিনোম এডিটিং। প্রতিটি জীবের স্বাতন্ত্র এবং বৈশিষ্ট্যাবলি কোষের নিউক্লিক এসিডে (DNA/RNA) কোড আকারে লিখিত থাকে। এসব কোডকে পরিবর্তন করলে জীবের বৈশিষ্ট পরিবর্তিত হয়। জীবনের কোডকে কম্পিউটার সফটওয়্যার-এর মতো নিখুঁতভাবে পরিচালনার প্রযুক্তিই হলো জিনোম এডিটিং। জীব প্রযুক্তির এই কঠিন ও জটিল বিষয়গুলোকে সহজ এবং বোধগম্য করে তুলতে এবারই প্রথম বাংলা ভাষায় প্রকাশিত হলো “জিনোম এডিটিং” নামক বইটি। একুশে বই মেলার ‘মাতৃভাষা প্রকাশ’ এর ১৩৪-১৩৬ নম্বর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে বইটি ।
লেখক পরিচিতি:
তোফাজ্জল ইসলাম ১৯৬৬ সালের ২০ ডিসেম্বর ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার শশই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মো. বজলুর রহমান এবং মা খালেদা খানম।
তোফাজ্জল ইসলাম বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসিএজি (অনার্স) এবং এমএসসি (এজি) উভয় পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। তিনি জাপানের হোক্কাইডো বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত জীববিজ্ঞানে পিএইচডি করেছেন। জেএসপিএস, হুমবোড, কমনওয়েলথ এবং ফুলব্রাইট ফেলোশিপ নিয়ে তিনি জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও জার্মানির খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক পোষ্ট–ডক এবং ভিজিটং প্রফেসর হিসেবে কাজ করেছেন।
অধ্যাপক তোফাজ্জল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনিস্টিটিউট অভ বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (আইবিজিই)-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী এবং পুস্তকে তার ৩০০টির অধিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
প্রফেসর তোফাজ্জল বাংলাদেশে গমের ব্লাস্ট রোগের মহামারি প্রাদুর্ভাবের উৎপত্তি নির্ণয় এবং জাতীয় ফল কাঁঠালের জিনোম রহস্য উন্মোচন করার জন্য খ্যাতি লাভ করেন। রসায়নে নোবেল প্রাইজ ২০২০ জয়ী বিপ্লব সৃষ্টিকারী ক্রিসপার–কাস জিনোম এডিটিং প্রযুক্তি বাংলাদেশের কৃষিতে তিনি সফল ব্যবহার করে চলেছেন। তাঁর দল জিনোম–নির্দিষ্ট প্রাইমার এবং ক্রিসপার প্রযুক্তি ব্যবহার করে গমের ব্লাস্ট রোগের ছত্রাক দ্রুত সনাক্ত করার জন্য একটি নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। জীবপ্রযুক্তি গবেষণায় অসামান্য অবদানের জন্য ড. ইসলাম বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন।
প্রফেসর তোফাজ্জল বাংলাদেশ একাডেমি অফ সায়েন্সেস, বাংলাদেশ একাডেমি অফ অ্যাগ্রিকালচারাল সায়েন্সেস, দ্য ওয়ার্ল্ড একাডেমি অফ সায়েন্সেস, আমেরিকান ফাইটোপ্যাথোলজিক্যাল সোসাইটির নির্বাচিত ফেলো।
তিনি স্প্রিঞ্জার নেচার প্রকাশিত দুটি সিরিজ বই, CRISPR-Cas Methods এবং Bacilli and Agrobiotechnology-এর প্রধান সম্পাদক । তিনি সায়েন্টিফিক রিপোর্টস, ফ্রন্টিয়ার্স ইন প্ল্যান্ট সায়েন্স, প্লস–ওয়ান সহ অনেক জার্নালের সম্পাদক।
তাঁর স্ত্রী ড. হাসনা হেনা বেগম একটি বেসরকারি সংস্থার উর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ এবং পুত্র তাহসিন ইসলাম সাকিফ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সে পড়াশুনা করছেন।
তথ্যসূত্র: এম আব্দুল মান্নান,জুমবাংলা এর প্রকাশিত খবর থেকে সংগ্রীহিত
Leave a comment