আজ হতে প্রায় ২ বছর আগে Daimler Chysler কম্পানি প্রথম বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিল এমন এক গাড়ী দিয়ে যে গাড়ী দিয়ে কোন ধোঁয়া বাহির হবে না, তার পরিবর্তে শুধু পানি বাহির হয়ে আসবে৷ তারা নাম দিয়েছিল Necar, New Electric Car এর সংক্ষীপ্ত নাম, যা ৯০ মাইল গতিতে চলতে পেরেছিল৷
ফুয়েল সেল বর্তমানে বেশ আলোচিত একটি বিষয়৷ বিশেষ করে অটোমোবাইল ক্ষেত্রে এটি ভিষণ ভুমিকা রাখবে বলে গবেষকরা প্রতিদিনই এটির সুলোভ ব্যবহারের জন্য এগিয়ে যাচ্ছে৷ আমাদের বর্তমান সভ্যতাতে জ্বলানী কিংবা শক্তির প্রয়োজনীয়তার
অসীম৷ আমরা যতই বিজ্ঞান বা টেকনলজির উনড়বয়ন ঘটাচ্ছি তত করেই আমরা বিদ্যুত শক্তির উপর আরো বেশী নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি৷ বর্তমানে আমরা বিদ্যুত শক্তি তৈরী করতে সবথেকে বেশী ব্যবহার করছি প্রেট্রোলিয়াম জাতীয় জ্বালানী তেল৷ এছাড়া পরিবহন ক্ষেত্রে এই পেট্রোলিয়াম জ্বালানী ছাড়া আর আমাদের কোন উপায় নেই৷ আর আমরা যে প্রেট্রোলিয়াম জ্বালানী ব্যবহার করছি তার ভান্ডার অদূর ভবিষ্যতে শেষ হয়ে যাবে৷ অদূর ভবিষ্যত বললাম এই কারণে যে ঠিক কবে শেষ হবে তা স্পষ্ট করে কেউ বলতে পারেনা৷ সেইজন্য বর্তমানে বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন শক্তির সন্ধানে গবেষনা করে যাচ্ছেন৷ এই রকম নতুন শক্তির উত্স হিসাবে পরিচিত হয়েছে, সৌরকোষ, সমুদ্র স্রোতের শক্তি, বাতাস শক্তি ইত্যাদি৷ এই ধরনের শক্তিগুলি সবই প্রকৃতির অফুরন্ত শক্তিকে বিদু্যতে রুপান্তরিত করা৷ কিন্তু আজ আমরা যে নতুন পদ্ধতির কথা জানবো তা হল, ফুয়েল সেল৷ একটা নতুন শক্তির উত্স হিসাবে ফুয়েল সেল বিজ্ঞানীদের দৃষ্টি আকর্ষন করেছে৷
ফুয়েল সেল কিভাবে কাজ করেঃ
আমরা স্কুল জীবনে রসায়ন ক্লাসে নিচের এই রাসয়নিক বিক্রিয়ার সাথে পরিচিত৷ এই বিক্রিয়াতে বুঝা যায় যে, হাইড্রোজেন অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে পানি তৈরী করে৷
2 H2 + O2 = 2 H2O
ফুয়েল সেলেও একই সাধারণ বিক্রিয়া ঘটিত হয়৷ ফুয়েল সেল মূলত অক্সিজেন ও হাইড্রোজেনের ইলেক্ট্রো রাসয়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে বিদ্যুত উত্পাদন করে৷ ফুয়েল
সেল এ হাইড্রোজেন জ্বালানী হিসাবে ব্যবহৃত হয়৷ তা পরবর্তীতে চার্য ত্যাগ করে বিদ্যুত এ পরিনত করে এবং পরিশেষে অক্সিজেনের সাথে সংযুক্ত হয়ে পানিতে পরিণত হয়৷ আর প্রতিপাদ্য হিসাবে পাওয়া যায় খুবই সামান্য পরিমানের নাইট্রোজেন অক্সাইড ও সালফার ডাই অক্সাইড৷ যা আমরা কম্পন ও শব্দের মতই আমরা উহ্য করতে পারি৷ পরিবেশে এর তেমন বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবেনা বলেই মূলত পরিবেশবাদীদের
দৃষ্টি আকর্ষন করেছে৷ এছাড়া এর কর্মক্ষমতা প্রায় ৮০% যা অন্যান্য বিভিনড়ব ধরনের শক্তি কর্মদক্ষতার থেকে বেশী৷ উদাহরণ হিসাবে বলা যায় তাপবিদ্যুতের ক্ষেত্রে কর্মক্ষমতা প্রায় ৪০%৷ যার মানে হল তাপবিদু্যত কেন্দ্রে যে প্রেট্রোলিয়াম
জ্বালানী ব্যবহার করা হয় তার মাত্র ৪০% বিদু্যত হিসাবে পাওয়া যায়৷ আর বাকী ৬০% তাপ সহ অন্যান্য শক্তিতে রুপান্তরীত হয়ে যায়৷ ফুয়েল সেলের ক্ষেত্রে ঊত্পাদ হিসাবে তাপ পাওয়া যায় যা পরবতীতে পানি গরম করতে কিংবা এয়ারকুলারে ব্যবহার করা যেতে পারে৷ ফুয়েল সেলে জ্বালানী হিসাবে ব্যবহৃত হয়, প্রাকৃতিক গ্যাস, মিথন গ্যাস কিংবা এলজিপি৷ প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে প্রথমে এই হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন বাহির করা হয়, তারপর তা দিয়ে ফুয়ের সেলের মাধ্যমে বিদ্যুতে রুপান্তরিত করা হয়৷ ফুয়েল সেলের জ্বালানী হিসাবে মিথানলের ব্যবহার এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে৷ মিথানলের সবথেকে বড় সুবিধা হল যে সাধারন তাপমাত্রাতে মিথানল তরল অবস্থায় থাকে এবং এতে হাইড্রোজেনের পরিমান অনেক বেশী৷ সুতরাং জ্বালানী হিসাবে হাইড্রোজেন রাখবার জন্য ভারী সিলিন্ডার রাখার প্রয়োজন নেই৷ ফলে বাসে কিংবা সাধারণ গাড়ীতে ফুয়েল সেল ব্যাবহার হচ্ছে৷ এছাড়া মিথানল খুবই বিশুদ্ধ ভাবে (৯৯.৮৫%) তৈরী করা সম্ভব৷ এবং সবথেকে বড় সুবিধা হল, এটি যদি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় তবে মিথানলের খরচ সাধারন জ্বালানীর থেকে অনেক কম হবে৷
পরিবেশ সচেতনাতাঃ
বর্তমান বিশ্বে গ্রিণ হাউজ ইফেক্ট নিয়ে তুমুল আলোচনা হচ্ছে৷ এর প্রধান কারণ হিসাবে কার্বণ ডাই অক্সাইডকে দায়ী করা হয়৷ এই কার্বন ডাই অক্সাইড সবথেকে বেশী নির্গত হয় গাড়ীতে, জ্বালানী পুড়িয়ে এটি বেরিয়ে আসে৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, গাড়ীতে যদি এই ফুয়েল সেল ব্যবহৃত হয় তবে ৪২% গ্রিণ হাউস ইফেক্ট মোকাবেলা করা যাবে৷ ফুয়েল সেলে পরিবেশে কোন প্রভাব বিস্তার করেনা৷ কেননা এতে বর্জ হিসাবে বাহির হয়ে আসে পানি ৷ যার ফলে পরিবেশ সমন্ধে সচেতন যায়গা যেমন, হাসপাতাল বাসস্থানে এটা ব্যবহার করা যেতে পারে৷ ফুয়েল সেলকে বলা হচ্ছে এমন একটি ব্যাটারি যাতে গ্যাসের সিলিন্ডার আছে৷ অন্যান্য ব্যাটারির মত একে চার্য করার প্রয়োজন নেই৷ শুধু গ্যাস ভরে নিলে হল৷ ব্যবহারিক ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম ফুয়েল সেল ব্যবহৃত হয়েছিল নাসাতে (আমেরিকার মহাকাশ গবেষনা কেন্দ্র) ৷ তারা এপেলো ও জেমিনি তে বিদু্যতিক ব্যাটারি হিসাবে ফুয়েল সেল ব্যবহৃত করেছিল৷
বাংলাদেশে ফুয়েল সেল:
বাংলাদেশ এখন প্রচন্ড পরিবেশ দুষণের শিকার৷ ঢাকাকে এখন বলা হয়ে থাকে পৃথিবীর সবথেকে দূষিত শহর৷ ঢাকাতে ইদানিং মাস্ক পড়া লোকদের পরিমান দিন দিন বেড়ে চলছে৷ আমরা যদি ফুয়েল সেলের মত নতুন টেকনলজিকে প্রয়োগ করতে পারি তবে আমরা আমাদের পরিবেশ দূষণ কিছুটা হলেও সামলাতে পারবো৷
ধন্যবাদ…আপনার লেখাটি ভালো লেগেছে।
তবে ফুয়েল সেলের সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধাগুলো আসলে মনে হয় আরোও ভালো হতো। যেমনঃ ফুয়েল সেল তৈরি করার খরচ অনেক বেশি…
lekha gulo sab primary school er rachanar moto! sudhu technical side discuss korle
“ki bhabe kaj kare” catagory er upojukto hoto.