অতিথি লেখক:
আজিজুল হক
সহকারী অধ্যাপক, ইয়েংনাম বিশ্ববিদ্যালয়।
রিভিউ আর্টিকেল হলো একটি গবেষণাপত্র যা বিদ্যমান গবেষণার উপর সমালোচনামূলক এবং গঠনমূলক বিশ্লেষণ প্রদান করে। এতে পূর্বে প্রকাশিত গবেষণা, তাত্ত্বিক অবদান, এবং পদ্ধতিগত বিশ্লেষণ সম্বলিত থাকে। রিভিউ আর্টিকেল মূলত নতুন গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করে না, বরং ইতোমধ্যে সম্পন্ন হওয়া গবেষণাগুলোর ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বর্তমান অবস্থার একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র তুলে ধরে। মূল গবেষণা আর্টিকেলের বিপরীতে, রিভিউ আর্টিকেলগুলোকে সেকেন্ডারি সাহিত্য হিসেবে গণ্য করা হয়। এর মানে হলো, রিভিউ আর্টিকেল সাধারণত লেখকের নিজস্ব পরীক্ষামূলক কাজ থেকে নতুন তথ্য উপস্থাপন করে না, বরং একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর প্রাথমিক গবেষণার বিশ্লেষণ বা ব্যাখ্যা প্রদান করে।
১. সাহিত্য পর্যালোচনা (Literature Review)
সাহিত্য পর্যালোচনা একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর বিদ্যমান জ্ঞান উপস্থাপন করে, যেখানে তাৎপর্যপূর্ণ ফলাফল (substantive findings) এবং তাত্ত্বিক (theoretical) ও পদ্ধতিগত অবদানকে (methodological contributions) অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এটি সাধারণত বর্তমান পরিস্থিতি ও ধারাবাহিক গবেষণা নিয়ে আলোচনা করে এবং বিভিন্ন গবেষণার মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে। সাহিত্যের এই ধরনের পর্যালোচনায় মূলত বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে কভার করার জন্য প্রাসঙ্গিক গবেষণা, থিওরি, পদ্ধতি এবং বিশ্লেষণগুলি একত্রিত করা হয়। সাহিত্য পর্যালোচনার লক্ষ্য হলো কোনো নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে একত্রিত জ্ঞান প্রদান করা, যার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট গবেষকদের ভবিষ্যতে গবেষণার জন্য একটি ধারণা ও পটভূমি তৈরি করা যায়।
২. সিস্টেম্যাটিক রিভিউ (Systematic Review)
সিস্টেম্যাটিক রিভিউ একটি নির্দিষ্ট গবেষণা প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য একটি প্রাক-নির্ধারিত যোগ্যতা মাপকাঠি অনুযায়ী সমস্ত এম্পিরিক্যাল প্রমাণের মূল্যায়ন ও সংশ্লেষণ (synthesizes) করে। সিস্টেম্যাটিক রিভিউ গবেষণার পদ্ধতিগত, সুসংগঠিত এবং স্পষ্ট পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়, যাতে পক্ষপাতিত্ব (bias) কমানো হয় এবং আরও নির্ভরযোগ্য ফলাফল পাওয়া যায়। এই ধরনের রিভিউতে গবেষকরা সমস্ত প্রাসঙ্গিক গবেষণা সংগ্রহ করেন, সেগুলোর গুণগত মান যাচাই করেন, এবং তারপর একটি পরিস্কার ও নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর দিতে তাদের ফলাফল একত্রিত করেন। সিস্টেম্যাটিক রিভিউয়ের লক্ষ্য হলো যেকোনো অজ্ঞতা দূর করে একেবারে নির্ভরযোগ্য ও পুনঃপ্রমাণিত ফলাফল তৈরি করা, যা পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করতে পারে।
৩. মেটা-অ্যানালাইসিস (Meta-analysis)
মেটা-অ্যানালাইসিস একটি পরিমাণগত (quantitative), আনুষ্ঠানিক (formal) এবং এপিডেমিওলজিক্যাল স্টাডি ডিজাইন, যা পূর্ববর্তী গবেষণার ফলাফলগুলোকে সিস্টেম্যাটিকভাবে মূল্যায়ন করে এবং সেই গবেষণার উপর সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর চেষ্টা করে। মেটা-অ্যানালাইসিসে একাধিক গবেষণার তথ্য একত্রিত করা হয় এবং সেই তথ্যের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী, পরিমাণগত ভিত্তিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয়। সাধারণত, মেটা-অ্যানালাইসিস র্যান্ডমাইজড কন্ট্রোলড ট্রায়াল (RCT) বা অন্যান্য নির্দিষ্ট স্টাডি ডিজাইনগুলির উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়, যা সঠিক এবং নির্ভরযোগ্য ফলাফল প্রদান করে। মেটা-অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে কোনও নির্দিষ্ট বিষয়ে একাধিক গবেষণার ফলাফল একত্রিত হয়ে একটি শক্তিশালী সাধারণ সিদ্ধান্ত তৈরি করা যায়, যা অনেকটা প্রাথমিক গবেষণার চেয়ে আরও বিশ্বাসযোগ্য এবং ব্যাপক তথ্য দেয়।
বিদ্র: ফেসবুক থেকে সংগ্রহীত:——–
https://www.facebook.com/share/p/15fa7ccFbC
Leave a comment