বাংলাদেশে তৈরীকৃত সর্বপ্রথম রুটি মেশিন।

বাংলাদেশে  তৈরীকৃত সর্বপ্রথম রুটি মেশিন। এই মেশিন ঘন্টায় ৯০০ আটা বা ময়দার রুটি তৈরী করতে পারে।mach-set.102

মেশিন ব্যাবহারের সুবিধা সমূহ
১) স্বাস্থ্য সম্মত ও সুস্বাদু রুটি তৈরী করা যায়। তাই খেতে মজা।
২) অল্প পরিশ্রমে বেশী রুটি তৈরী করা যায়। তাই সময় ও শ্রম বাঁচে।
৩) সকল রুটি একই মাপের, একই রকম ফোলা ও ভাজা হয়।
৪) অনেক বেশী গ্যাস সাশ্রয় হয়।
৫) অল্প জায়গায় সুবিধামত ভাবে বসিয়ে ব্যবহার করা যায়।
৬) দুইজন লোক অনায়াসে সকল মেশিন চালাতে পারে।

ডেমো রুটি মেশিনটি ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের এস, টি ব্যাটিলিয়নের ২ নং মেস এ ব্যাবহারিক পরিক্ষা করার জন্য দেওয়া হয়, যাহাতে মেশিনের ডিজাইন এর ত্রুটি ও বিভিন্ন ইলেক্ট্রিক্যাল যন্ত্রাংশের মান যাচাই করে পরবর্তীতে সংশধনি আনা যায়। সেই সাথে আর্মি বাবুর্চিরা যাতে মেশিন ব্যাহারের সুবিধা বুঝতে পারে এবং উন্নত প্রযুক্তির সাথে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারে । এতে সমগ্র বাংলাদেশের আর্মি সেক্টরে প্রযুক্তি ব্যাবহার করে বিপুল অর্থ সাশ্রয় হবে এবং বাংলাদেশের বন্যা দূর্গতদের সাহায্যের সময় রুটি বানানোর কাজে বিশেষ সুবিধা হবে।

তিনটি ধাপে মেশিনে রুটি তৈরী করা হয়।
মিক্সিং ও খামি তৈরী
১০০০ গ্রাম আটা, ৫১০ গ্রাম পানি, ১০ গ্রাম ভেজিটেবল অয়েল ও ১০ গ্রাম লবন হারে ২৫ কেজি পরিমান আটা ১৫ মিনিটে মিক্সিং করা যায়।
ডো-কাটিং বা ডো-বল তৈরী
একটি লম্বা খামি হোপারে পজিশন করে বসিয়ে দিতে হয়। তারপর সুইচ অন করে দিলে মেশিন সয়ংক্রিয় ভাবে ডো-বল কেটে দেয়। সেন্সরের পজিশন চেন্জ করে সাইজ ছোট বড় করা যায়।
রুটি মেশিনে রুটি তৈরী

হালকা ভাবে আটার গুড়ো মাখিয়ে মাখিয়ে প্রেসের গেট খোলা মাত্র একটি করে ডো-বল দিয়ে দিতে হয়। ডো একটি হিটার প্রেস দ্বারা প্রেস হয়ে রুটির আকৃতি হয়ে ওভেনের উপরের তাওয়ায় যায়। প্রতি ১২ সেকেন্ডে রুটি উল্টে নিচের তাওয়ায় পরে। এভাবে তিনবার রুটি উল্টে চারটি তাওয়া পার হয়ে ভাজা হয়ে ফুলে বের হয়। যেহেতু প্রতি চার সেকেন্ড অন্তর অন্তর ডো দেয়া হয় সেহেতু ঘন্টায় ৯০০ রুটি ভাজা হয়।

কী ভাবে তৈরী হল রুটি মেশিন?
ক্যাথওয়েল্ড কন্সট্রাকশন কোঃ ২০১৩ সনের ডিসেম্বরে আর্মি সেক্টর থেকে একটি রুটি তৈরী মেশিন সাপ্লাই করার অর্ডার পায়। ২০১৪ এর জানুয়ারী মাসে ইন্ডিয়া থেকে মেশিনটি চলে আসে এবং ফেব্রুয়ারীতে ইন্ডিয়ান টেকনিশিয়ান আসতে দেরী করায় আমি মেশিনটি কমিশনিং করতে যাই।20140213_162856

মেশিনটি দেখে আমার খুব একটা পছন্দ হয় নাই। তাই ওখান থেকে এসেই আমি একটা অত্যাধুনিক মেশিন ডিজাইনের কথা ভাবতে শুরু করি। ইন্টারনেট থেকে একটি জার্মানী কোম্পানীর ইউটিউব ভিডিও দেখি এবং সেখান থেকে আইডিয়া টা মাথায় আসে। আমার ডিজাইন দেখে আমাদের এমডি মিঃ এজাবুল খালিদ সাহেব আমাকে বলেন মেশিনটি লোকালি তৈরী করার ব্যবস্থা নিতে । ব্যাস হয়ে গেল…… ২০১৪ সেপ্টেম্বরে তৈরী হয়ে গেল ডেমো মেশিনটি।

বর্তমানে ডিজাইন এ কিছু পরিবর্তন এনে নতুন ডিজাইনের মেশিন তৈরী হচ্ছে। আগামী মাসে নতুন ডিজাইন এর মেশিন এর কাজ শেষ হবে এবং এটি চিটাগং বসানো হবে।
এখন আমি ঘন্টায় ৪৫০টি রুটি তৈরী করতে পারে এমন এটি মেশিন ডিজাইন করছি।

৪৫০

ধন্যবাদ
জেমস্ মার্টিন অধিকারী

 

jmadhikary

About jmadhikary

Give me some metal, I'll give you a productive machine.

Check Also

চিকুনগুনিয়া এর উপর গবেষনা প্রবন্ধ প্রকাশিত হল

চিকুনগুনিয়া অসুখটি বাংলাদেশের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে একটি বড় মহামারি এর মতন এসেছিল। কিন্তু ব্যাপারটির উপর বৈজ্ঞানীক ভাবে …

ফেসবুক কমেন্ট


  1. মেশিন ক্রয় করার ইচ্ছে আছে । দাম এবং সার্ভিস টাইম সেবা কিভাবে পাবো জানাবেন

  2. বাংলাদেশের নিজস্ব আবিষ্কার তাই একটু বেশিই ভালো লাগা কাজ করছে। ধন্যবাদ পোস্টটি করার জন্য এবং আবিষ্কারকের জন্য অবিরাম শ্রদ্ধা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।