তথ্যপ্রযুক্তি

বায়োনিক প্রযুক্তি: মস্তিস্ক নিয়ন্ত্রিত কৃত্তিম হাত

Share
Share

তথ্যপ্রযুক্তি উৎকর্ষ সাধণ হচ্ছে প্রতিনিয়তই। প্রযুক্তির ছোয়া পরেনি এমন ক্ষেত্র খুঁজেই পাওয়া যাবে না। চিকিৎসা ক্ষেত্রেও এর অবদান অনিস্বীকার্য| আর বায়োনিক প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরীকৃত বায়োনিক হাত চিকিৎসাশাস্ত্রে এনেছে নতুন দিগস্ত আর বিকলাঙ্গ মানুষকে দিয়েছে নতুন জীবন।

unicode_bionic-hand.jpg

বায়োনিক কি: বায়োনিক শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ βίον এবং ic থেকে। βίον এর উচ্চারণ Bion যার অর্থ জীবনে অংশ বা পূর্ণ জীবন এবং ic এর অর্থ মতো। অতএব বায়োনিক শব্দের পূর্ণ অর্থ দাড়ায় জীবনের মত। অনেক অভিধানে বায়োনিক শব্দকে biology এর bio এবং electronics এর nics যুক্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে। বায়োনিকের সাথে প্রযুক্তিগত দিক থেকে বায়োমিম্যাট্রিক্স, বায়োগনোসিস, বায়োমিনিক্রাই বা বায়োনিক্যাল ক্রিয়েটিভিটি এর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। বায়োনিক প্রযুক্তি হচ্ছে এমন যাতে রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তির ছোয়া, প্রকৌশলীদের দ্বারা উন্নতভাবে নকশাকৃত এবং যা চলবে প্রাকৃতিক উপায়ে (মস্তিস্ক বা অন্যভাবে)।
স্কটিস জাতীয় স্বাস্থসেবা (এনএইচএস) এর এক স্বাস্থকর্মীর দ্বারা বায়োনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয় এবং সংস্থাটির বর্তমান পরিচালক ডেভিড গোও এই বায়োনিক হাতের উদ্ভাবক। লিভিংস্টোনের টাচ্ বায়োনিকস তাকে এই হাতের নকশা এবং নির্মাণে যাবতীয় সাহায্য করেছে। এই হাতের ফলে একজন হস্তহীন মানুষ যে কিনা সুস্থ মানুষের হাতের মতই ইচ্ছামত নাড়াতে পারবে এমনকি আঙ্গুলের সাহায্যে কোন বন্তু ধরতে পারবে সাবলীল ভাবে। যা দেখতে আসল হাতের মতো এবং মস্তিস্ক সাহায্যে নিয়ন্ত্রিত হবে। পরীক্ষামূলক ভাবে এই প্রযুক্তি বিভিন্ন শ্রেণীর ও পেশার মানুষের উপরে প্রয়োগ করা হয়েছে, যার মধ্যে ইরাক যুদ্ধে তাদের অঙ্গ হারানো যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরা রয়েছে। সমপ্রতি বিবিসিতে প্রচারিত গুড মনিং স্কটল্যান্ড অনুষ্ঠানে ডেভিড গোও বলেছেন, এটিই বাজারে আসা প্রথম বায়োনিক হাত যা আপনার সুস্থ হাতের মতোই ব্যবহার করতে পারবেন এবং আঙ্গুলগুলো নাড়াতে পারবেন।
বায়োনিক হাত ব্যবহারকারীরা: প্রথম বায়োনিক হাতের ব্যবহারকারী ডোনাল্ড ম্যাককিলপ ২০০৬ সাল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে সফলতার সাথে ব্যবহার করছেন। ডোনাল্ড ম্যাককিলপ একজন অবসরপ্রাপ্ত ওয়েল্ডার শ্রমিক যিনি তিরিশ বছর আগে এক ভয়াবহ দূর্ঘটনায় তার ডান হাত হারিয়েছেন। এরপর তিনি বিভিন্ন যায়গায়তে গিয়েছেন তার হাতের জন্য, কিন্তু কেউই তার মনের আশা মেটাতে পারেনি যা পেরেছে বায়োনিক হাত। তার ভাষ্যমতে এই বায়োনিক হাতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে এর সাহায্যে তিনি পরিপূর্ণভাবে সবগুলো আঙ্গুল আগের মতই ব্যবহার করতে পারছেন যা অনান্য কৃত্তিম হাতের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। টেক্সাসের জুয়ান এরেডোনডো বায়োনিক হাত ব্যবহারকারী, যিনি ২০০৪ সালে ইরাক যুদ্ধে তার একটি হাত হারিয়েছে। এই বায়োনিক হাত ব্যবহারকারী বলেছেন, এটা সত্যিই চমৎকার বিষয় যে, সবসময়ই আমার সাথে হাত আছে যার সাহায্যে আমি বড় কাপ বা মগ অনায়াসে তুলতে পারি। আর আমার পুরো মনোযোগ দিয়ে দুই হাতের সাহায্যে যে কোন ধরণের ছোট/বড় কাজ করতে পারছি। এবং আমার বায়োনিক হাত ও অন্য সাধারণ হাতের শক্তি তুলনামূলক ভাবে অনুধাবন করতে পারি, যা আমার বুদ্ধি এবং মনোযোগ দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। বায়োনিক হাতের আরেক জন ব্যবহারকারী বলেছেন অনান্য কৃত্তিম হাতের চেয়ে বায়োনিক হাত প্রতিদিনের জীবনযাত্রাকে করেছে অনেক সহজ, সাবলীল ও আরামদায়ক।
কিভাবে কাজ করে:
নিয়ন্ত্রন যন্ত্র: সমপ্রতি গবেষক দল অতি উন্নত এবং ক্ষুদ্র ও সংবদেনশীল যন্ত্র আবিস্কার করেছে যা তারহীনভাবে মাংসপেশীর মাধ্যমে অত্যান্ত দক্ষতার সাথে ক্ষতিগ্রস্থ বাহুকে সাহায্য করে। একটি বড় ইলেক্টোড দন্ড শক্তভাবে বুকের সাথে স্থাপন করা হয়। এবং একটি কয়েল (পেচানো তার) কাধের উপর দিয়ে আনা হয় যাতে তারহীন বিদ্যুৎ পূনরায় ব্যবহার করা যায়। পরবর্তীতে সংকেত কম্পিউটারের মাধ্যমে মস্তিস্কে প্রেরণ করা হয়। মস্তিস্ক তখন হাতকে ব্যবহার (নাড়াতে) করতে বলে। এই পদ্ধতিতে ইলেক্ট্রোডগুলো সুবিধামত সরাসরি মস্তিস্ক এবং স্থায়ুতে স্থাপন করা যায়।
শক্তির উৎস: সামপ্রতিক এই গবেষণায় উদ্ভাবিত হয়েছে হাইড্রোজেন পারোক্সাইড পিনিমেটিক ব্যবস্থা যা তুলনামূলক দূর্বল, মোটা এবং ধীরগতির মটর এর পরিবর্তে ব্যবহৃত হবে। এই হাইড্রোজেন পারোক্সাইডের সাথে ইরিডিয়াম ক্যাটালিষ্টের বিপরীতমূখী প্রতিক্রিয়া হাতকে নড়াচড়া করতে সাহায্য করে।
নমনিয়তা: প্রটো-২ প্রযুক্তি কমপক্ষে ২৫টি জোড়াকে নাড়াতে সক্ষম। একইসাথে কাধ এবং কব্জি ঘোড়ানো, বাকাঁনো থেকে সবই করা যায়। কনুই গোটানো থেকে আঙ্গুল এবং আঙ্গুলের জোড়া আলাদা আলাদা করে নাড়ানো এবং বাকাঁনো যায়। প্রত্যেকটি আঙ্গুলের জোড়ার হাড় একসাথে ও খুব হাল্কা ওজনের এবং এই হাড় কার্বন ফাইবার ও এলুমিনিয়ামের মিশ্রন থেকে তৈরী হয়েছে।
নির্মাণ শৈলী: সুপার ডুপার এই যন্ত্রের নির্মাণ শৈলী বড়ই বিচিত্র, বিস্ময়কর এবং আধুনিক।
চুড়ান্ত পর্যায়ে বায়োনিক হাত হবে অনেক বেশী মানবিক বোধ সম্পন্ন। যেমন, হাতের তাপের তারতম্য বোধ, তাপমাত্রা বোঝার ক্ষমতা, কোন জিনিসের উপরে হাত রেখে তা অনুধাবন করা ইত্যাদি। পুরোপুরি গ্রন্থিবদ্ধ হাতের সাহায্যে লিখার কাজও করা যাবে।
টাচ্ বায়োনিকের প্রধান নির্বাহী স্টুয়ার্ট মেড বলেছেন যে, আমরা খুবই আনান্দিত এবং খুশি যে বায়োনিক হাতের মতো একটি আধুনিক এবং উন্নত প্রযুক্তি বাজারজাত করন, ব্যবসা ও গবেষনা করতে পারছি এবং এর উন্নতি কল্পে সকল ধরণের কাজ করতে পারছি। তিনি আরো বলেন, আমরা তখনই পুরোপুরিভাবে সফল হবো যখন এই বায়োনিক হাত সারা বিশ্বব্যাপি বিশেষত প্রকৃত দুঃস্থ ও পীড়িত লোকের কাছে পৌছাতে পারবো। আমরা সবসময় একটি ব্যাপারে সচেষ্ট, তা হচ্ছে প্রকৃত রোগী বা ভূক্তভোগীদের মাঝে সঠিক ও সময়পোযোগী সেবা বিতরণ, যার সাহায্যে একজন আঘাতপ্রাপ্ত বা বিকলঙ্গ ব্যাক্তি যেন পরিপূর্ণ ও সঠিক সেবা পায়। তিনি বলেন, বায়োনিক হাতের মাধ্যমে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌছানো সত্যিকার ভাবেই আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জিং কাজ।
ইতিমধ্যে বায়োনিক হাত পরীক্ষামূলকভাবে ইউনিভার্সিটি অব স্ট্রেথক্লাইডের পঙ্গু ও বিকলাঙ্গ রোগীদের মাঝে ব্যবহার করা হচ্ছে। বায়োনিক হাতের আবিস্কারক মি: ডেভিড গোও বর্তমানে ইডেনবার্গের এস্‌লে এনস্‌লে হাসপাতালে স্টেট-অফ-দি-আর্ট সেন্টারে নতুন ধরণের গবেষনামূলক কাজ করছেন। তিনি বায়োনিক হাত নিয়ে খুবই আশাবাদী। তিনি আশা করছেন আগামী দুই থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে সারা বিশ্ববাপী বায়োনিক হাত ছড়িয়ে পড়বে, যার ফল স্বরুপ দেহের অনান্য অঙ্গও তৈরী করা সম্ভব হবে। ফলে স্বাস্থ ও সেবা খাতে যাদুর ছোয়ার মত কাজ করবে এই বায়োনিক হাত। সর্বপরি বায়োনিক হাতের চুড়ান্ত সাফল্যের উপরে নির্ভর করছে অনান্য অঙ্গের এমনকি বায়োনিক চোখের ভবিষ্যৎ।


unicode_bionic-hand.jpg

বায়োনিক কি: বায়োনিক শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ βίον এবং ic থেকে। βίον এর উচ্চারণ Bion যার অর্থ জীবনে অংশ বা পূর্ণ জীবন এবং ic এর অর্থ মতো। অতএব বায়োনিক শব্দের পূর্ণ অর্থ দাড়ায় জীবনের মত। অনেক অভিধানে বায়োনিক শব্দকে biology এর bio এবং electronics এর nics যুক্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে। বায়োনিকের সাথে প্রযুক্তিগত দিক থেকে বায়োমিম্যাট্রিক্স, বায়োগনোসিস, বায়োমিনিক্রাই বা বায়োনিক্যাল ক্রিয়েটিভিটি এর মিল খুঁজে পাওয়া যায়। বায়োনিক প্রযুক্তি হচ্ছে এমন যাতে রয়েছে আধুনিক প্রযুক্তির ছোয়া, প্রকৌশলীদের দ্বারা উন্নতভাবে নকশাকৃত এবং যা চলবে প্রাকৃতিক উপায়ে (মস্তিস্ক বা অন্যভাবে)।
স্কটিস জাতীয় স্বাস্থসেবা (এনএইচএস) এর এক স্বাস্থকর্মীর দ্বারা বায়োনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয় এবং সংস্থাটির বর্তমান পরিচালক ডেভিড গোও এই বায়োনিক হাতের উদ্ভাবক। লিভিংস্টোনের টাচ্ বায়োনিকস তাকে এই হাতের নকশা এবং নির্মাণে যাবতীয় সাহায্য করেছে। এই হাতের ফলে একজন হস্তহীন মানুষ যে কিনা সুস্থ মানুষের হাতের মতই ইচ্ছামত নাড়াতে পারবে এমনকি আঙ্গুলের সাহায্যে কোন বন্তু ধরতে পারবে সাবলীল ভাবে। যা দেখতে আসল হাতের মতো এবং মস্তিস্ক সাহায্যে নিয়ন্ত্রিত হবে। পরীক্ষামূলক ভাবে এই প্রযুক্তি বিভিন্ন শ্রেণীর ও পেশার মানুষের উপরে প্রয়োগ করা হয়েছে, যার মধ্যে ইরাক যুদ্ধে তাদের অঙ্গ হারানো যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরা রয়েছে। সমপ্রতি বিবিসিতে প্রচারিত গুড মনিং স্কটল্যান্ড অনুষ্ঠানে ডেভিড গোও বলেছেন, এটিই বাজারে আসা প্রথম বায়োনিক হাত যা আপনার সুস্থ হাতের মতোই ব্যবহার করতে পারবেন এবং আঙ্গুলগুলো নাড়াতে পারবেন।
বায়োনিক হাত ব্যবহারকারীরা: প্রথম বায়োনিক হাতের ব্যবহারকারী ডোনাল্ড ম্যাককিলপ ২০০৬ সাল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে সফলতার সাথে ব্যবহার করছেন। ডোনাল্ড ম্যাককিলপ একজন অবসরপ্রাপ্ত ওয়েল্ডার শ্রমিক যিনি তিরিশ বছর আগে এক ভয়াবহ দূর্ঘটনায় তার ডান হাত হারিয়েছেন। এরপর তিনি বিভিন্ন যায়গায়তে গিয়েছেন তার হাতের জন্য, কিন্তু কেউই তার মনের আশা মেটাতে পারেনি যা পেরেছে বায়োনিক হাত। তার ভাষ্যমতে এই বায়োনিক হাতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে এর সাহায্যে তিনি পরিপূর্ণভাবে সবগুলো আঙ্গুল আগের মতই ব্যবহার করতে পারছেন যা অনান্য কৃত্তিম হাতের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। টেক্সাসের জুয়ান এরেডোনডো বায়োনিক হাত ব্যবহারকারী, যিনি ২০০৪ সালে ইরাক যুদ্ধে তার একটি হাত হারিয়েছে। এই বায়োনিক হাত ব্যবহারকারী বলেছেন, এটা সত্যিই চমৎকার বিষয় যে, সবসময়ই আমার সাথে হাত আছে যার সাহায্যে আমি বড় কাপ বা মগ অনায়াসে তুলতে পারি। আর আমার পুরো মনোযোগ দিয়ে দুই হাতের সাহায্যে যে কোন ধরণের ছোট/বড় কাজ করতে পারছি। এবং আমার বায়োনিক হাত ও অন্য সাধারণ হাতের শক্তি তুলনামূলক ভাবে অনুধাবন করতে পারি, যা আমার বুদ্ধি এবং মনোযোগ দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। বায়োনিক হাতের আরেক জন ব্যবহারকারী বলেছেন অনান্য কৃত্তিম হাতের চেয়ে বায়োনিক হাত প্রতিদিনের জীবনযাত্রাকে করেছে অনেক সহজ, সাবলীল ও আরামদায়ক।
কিভাবে কাজ করে:
নিয়ন্ত্রন যন্ত্র: সমপ্রতি গবেষক দল অতি উন্নত এবং ক্ষুদ্র ও সংবদেনশীল যন্ত্র আবিস্কার করেছে যা তারহীনভাবে মাংসপেশীর মাধ্যমে অত্যান্ত দক্ষতার সাথে ক্ষতিগ্রস্থ বাহুকে সাহায্য করে। একটি বড় ইলেক্টোড দন্ড শক্তভাবে বুকের সাথে স্থাপন করা হয়। এবং একটি কয়েল (পেচানো তার) কাধের উপর দিয়ে আনা হয় যাতে তারহীন বিদ্যুৎ পূনরায় ব্যবহার করা যায়। পরবর্তীতে সংকেত কম্পিউটারের মাধ্যমে মস্তিস্কে প্রেরণ করা হয়। মস্তিস্ক তখন হাতকে ব্যবহার (নাড়াতে) করতে বলে। এই পদ্ধতিতে ইলেক্ট্রোডগুলো সুবিধামত সরাসরি মস্তিস্ক এবং স্থায়ুতে স্থাপন করা যায়।
শক্তির উৎস: সামপ্রতিক এই গবেষণায় উদ্ভাবিত হয়েছে হাইড্রোজেন পারোক্সাইড পিনিমেটিক ব্যবস্থা যা তুলনামূলক দূর্বল, মোটা এবং ধীরগতির মটর এর পরিবর্তে ব্যবহৃত হবে। এই হাইড্রোজেন পারোক্সাইডের সাথে ইরিডিয়াম ক্যাটালিষ্টের বিপরীতমূখী প্রতিক্রিয়া হাতকে নড়াচড়া করতে সাহায্য করে।
নমনিয়তা: প্রটো-২ প্রযুক্তি কমপক্ষে ২৫টি জোড়াকে নাড়াতে সক্ষম। একইসাথে কাধ এবং কব্জি ঘোড়ানো, বাকাঁনো থেকে সবই করা যায়। কনুই গোটানো থেকে আঙ্গুল এবং আঙ্গুলের জোড়া আলাদা আলাদা করে নাড়ানো এবং বাকাঁনো যায়। প্রত্যেকটি আঙ্গুলের জোড়ার হাড় একসাথে ও খুব হাল্কা ওজনের এবং এই হাড় কার্বন ফাইবার ও এলুমিনিয়ামের মিশ্রন থেকে তৈরী হয়েছে।
নির্মাণ শৈলী: সুপার ডুপার এই যন্ত্রের নির্মাণ শৈলী বড়ই বিচিত্র, বিস্ময়কর এবং আধুনিক।
চুড়ান্ত পর্যায়ে বায়োনিক হাত হবে অনেক বেশী মানবিক বোধ সম্পন্ন। যেমন, হাতের তাপের তারতম্য বোধ, তাপমাত্রা বোঝার ক্ষমতা, কোন জিনিসের উপরে হাত রেখে তা অনুধাবন করা ইত্যাদি। পুরোপুরি গ্রন্থিবদ্ধ হাতের সাহায্যে লিখার কাজও করা যাবে।
টাচ্ বায়োনিকের প্রধান নির্বাহী স্টুয়ার্ট মেড বলেছেন যে, আমরা খুবই আনান্দিত এবং খুশি যে বায়োনিক হাতের মতো একটি আধুনিক এবং উন্নত প্রযুক্তি বাজারজাত করন, ব্যবসা ও গবেষনা করতে পারছি এবং এর উন্নতি কল্পে সকল ধরণের কাজ করতে পারছি। তিনি আরো বলেন, আমরা তখনই পুরোপুরিভাবে সফল হবো যখন এই বায়োনিক হাত সারা বিশ্বব্যাপি বিশেষত প্রকৃত দুঃস্থ ও পীড়িত লোকের কাছে পৌছাতে পারবো। আমরা সবসময় একটি ব্যাপারে সচেষ্ট, তা হচ্ছে প্রকৃত রোগী বা ভূক্তভোগীদের মাঝে সঠিক ও সময়পোযোগী সেবা বিতরণ, যার সাহায্যে একজন আঘাতপ্রাপ্ত বা বিকলঙ্গ ব্যাক্তি যেন পরিপূর্ণ ও সঠিক সেবা পায়। তিনি বলেন, বায়োনিক হাতের মাধ্যমে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌছানো সত্যিকার ভাবেই আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জিং কাজ।
ইতিমধ্যে বায়োনিক হাত পরীক্ষামূলকভাবে ইউনিভার্সিটি অব স্ট্রেথক্লাইডের পঙ্গু ও বিকলাঙ্গ রোগীদের মাঝে ব্যবহার করা হচ্ছে। বায়োনিক হাতের আবিস্কারক মি: ডেভিড গোও বর্তমানে ইডেনবার্গের এস্‌লে এনস্‌লে হাসপাতালে স্টেট-অফ-দি-আর্ট সেন্টারে নতুন ধরণের গবেষনামূলক কাজ করছেন। তিনি বায়োনিক হাত নিয়ে খুবই আশাবাদী। তিনি আশা করছেন আগামী দুই থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে সারা বিশ্ববাপী বায়োনিক হাত ছড়িয়ে পড়বে, যার ফল স্বরুপ দেহের অনান্য অঙ্গও তৈরী করা সম্ভব হবে। ফলে স্বাস্থ ও সেবা খাতে যাদুর ছোয়ার মত কাজ করবে এই বায়োনিক হাত। সর্বপরি বায়োনিক হাতের চুড়ান্ত সাফল্যের উপরে নির্ভর করছে অনান্য অঙ্গের এমনকি বায়োনিক চোখের ভবিষ্যৎ।

Share

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ফ্রি ইমেইল নিউজলেটারে সাবক্রাইব করে নিন। আমাদের নতুন লেখাগুলি পৌছে যাবে আপনার ইমেইল বক্সে।

বিভাগসমুহ

গবেষণার তথ্য ও বিজ্ঞানীদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে, বিজ্ঞানী.অর্গ নবীন প্রজন্মকে গবেষণার প্রতি অনুপ্রাণিত করে।

Contact:

biggani.org@জিমেইল.com

সম্পাদক: ড. মশিউর রহমান

Biggani.org connects young audiences with researchers' stories and insights, cultivating a deep interest in scientific exploration.

Copyright 2024 biggani.org