[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]বিজ্ঞানী.অর্গঃ বিজ্ঞানী.অর্গ এর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। আমাদেরকে সাক্ষাতকার দেবার জন্য ধন্যবাদ। প্রথমেই আপনার সমন্ধে আমাদের একটু বলুন।
ড. নাভিদ সালেহঃ আপনাকেও ধন্যবাদ। আমি বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস এট অস্টিন-এর সিভিল, আর্কিটেকচারাল এবং এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনারিং বিভাগের একজন সহযোগী অধ্যাপক। গত এক দশক যাবৎ আমি অধ্যাপনার সাথে জড়িত। তার আগে আমি পোস্ট-ডক্টরাল ট্রেনিং নিয়েছি ইয়েল ইউনিভার্সিটি থেকে। আমি ডক্টরাল ডিগ্রী গ্রহণ করি কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটি থেকে ২০০৭ সালে। আমার গবেষণার উদ্দেশ্য, স্বল্প অর্থ এবং শক্তি ব্যয় করে পানি বিশোধন করা। এ গবেষণার অভিনবত্ব হল, অ্যাটমিক ম্যানিপুলেশন-এর মাধ্যমে পদার্থের সহজাত গুণকে কাজে লাগানো। পদার্থের স্ফটিকী বিন্যাস আর ইলেকট্রনিক দশাকে ব্যবহার করে পানিকে দূষণ মুক্ত করাই এ প্রযুক্তির লক্ষ্য। [/box]
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]বিজ্ঞানী.অর্গঃ বর্তমানে কি নিয়ে কাজ করছেন?
ড. নাভিদ সালেহঃ গত কয়েক বছরে আমার গবেষণাগার একটি নতুন পদার্থের সংশ্লেষ করেছে। লক্ষ্য হল, সংশ্লেষিত ন্যানো-পদার্থটির ইলেক্ট্রনিক বিন্যাসকে প্রয়োগ করে পানিতে আয়ন এবং রেডিকাল স্থাপন করা যা পানি দূষণকারী জীবাণুকে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম। তবে এইটি বলে রাখা প্রয়োজন যে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রশ্মির বিকিরণ পদার্থটিকে সক্রিয় করবার জন্য আবশ্যক। আমরা মাইক্রোওয়েভ রশ্মিকে প্রয়োগ করছি, যা কিনা সাধারণত পানি বিশোধনের জন্য উপযুক্ত নয়। এটি মনে রাখা প্রয়োজন যে নতুন পদার্থ সংস্থাপিত কোনো কৌশল তখনি কার্যকর হবে যদি এর প্রয়োগ নিরাপদ এবং টেকসই । সে প্রয়াসেই আমার গবেষণাগার ন্যানো-পদার্থের পরিবেশগত প্রভাব পর্যালোচনা করে। পানিতে, বায়ুতে, অথবা মাটিতে নিষ্কৃতির পর ন্যানো-কণিকার আচার পর্যবেক্ষন এ পদার্থগুলোর নিরাপদ নকশার সুযোগ করে দেয়। [/box]
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]বিজ্ঞানী.অর্গঃ Water treantent বা পানি পরিশুদ্ধকরণ এর ক্ষেত্রে আপনি নানোপ্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। এটি কিভাবে কাজ করে?
ড. নাভিদ সালেহঃ পানির দূষকগুলো যে স্কেল-এ, জৈব আর অজৈব অণু এবং স্থূলানুসমূহ সেই একই স্কেল-এ; অৰ্থাৎ, আংস্ট্রম থেকে ন্যানোমিটার দৈর্ঘ্যের। তাই পানীয় দূষক দূরীকরণে ন্যানোমিটার দৈর্ঘ্যের পদার্থের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কেবল তাই নয়, এ ক্ষুদ্র স্কেল-এ পদার্থের রাসায়নিক এবংজীবতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য আরো প্রবলতর হয়ে ওঠে। তাই পদার্থিক এই অভিনব গুণগুলোকে কাজে লাগিয়ে পানি বিশোধন অনেক কার্যকরী হতে পারে। [/box]
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]বিজ্ঞানী.অর্গঃ ভাইরাসের সাথে নানোটিউব সংযুক্ত এর একটি গবেষনা আপনি করছেন। এটি কোথায় ব্যবহার হবে?
ড. নাভিদ সালেহঃ ভাইরাস হলো প্রোটিনের সহ-সমাবেশ (সেলফ-এসেম্বলি) যা নিকটবর্তীয় (short-ranged) কিছু অনন্য ‘বল’ (ফোর্স) উপস্থাপন করে। কার্বন ন্যানোটিউব-এর মতো ন্যানো-স্কেল-এর পদার্থ তখন ভাইরাসের এই বল অনুভব করতে সক্ষম হয়। এভাবে ন্যানোটিউব বিভিন্ন ভাইরাসকে নিজের সাথে জুড়ে নিয়ে পরিবেশে অনেক দূর পরিবহন করতে পারে এবং পানিবাহিত ভাইরাসজনিত ঝুঁকি বাড়াতে পারে। অন্যদিকে, এই প্রপঞ্চকে ব্যবহার করা যেতে পারে পানি অথবা বায়ু থেকে ভাইরাস অপসারণে। আমার গবেষণাগার এই দুবিষয়েই গবেষণা করছে। [/box]
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]বিজ্ঞানী.অর্গঃ Peapods কি? এটি নিয়ে কি গবেষনা করছেন?
ড. নাভিদ সালেহঃ এটি একটি কৈতুহলউদ্দীপক প্রশ্ন। Peapods হলো নতুন প্রজন্মের বিমিশ্র (কম্পোসিট) ন্যানো-কণিকা, যা গোলীয় fullerene-কে সংস্থাপিত করে নলাকার ন্যানোটিউবের অভ্যন্তরে। এভাবে অভিনব বৈশিষ্ট্যের সঞ্চারণ সম্বব। আমরা এহেন বিমিশ্র বা কম্পোসিট ন্যানো-কণিকা সংশ্লেষ এবং ব্যবহার করছি পানি বিশোধনের লক্ষ্যকে সামনে রেখে।[/box]
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]বিজ্ঞানী.অর্গঃ ভবিষ্যতে কি নিয়ে কাজ করতে চান?
ড. নাভিদ সালেহঃ পরিবেশবিজ্ঞানে বিমিশ্র বা কম্পোসিট ন্যানো-কণিকা নিয়ে কাজ খুব সম্প্রতি আরম্ভ হয়েছে। আমার গবেষণাগারকে এর পথিকৃৎ বলতে পারেন। এই নবপ্রজন্মের ন্যানো-কণিকার আচার বিশ্লেষণ করা এবং অতঃপর পানি বিশোধনে এর ব্যবহার করা আমার আগামী দশ বছেরের লক্ষ্য। [/box]
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]বিজ্ঞানী.অর্গঃ গবেষনার পাশাপাশি আপনি বাংলাদেশের তরুনদের নিয়ে আপনি বেশ কিছু কাজ করছেন। সেগুলি সমন্ধে আমাদের একটু বলুন।
ড. নাভিদ সালেহঃ সত্য কথা বলতে, বড় পরিসরে এখনো তেমন কিছু করা হয়নি। ব্যক্তিগত পর্যায়ে বেশকিছু তরুণ শিক্ষার্থী আর গবেষকদের নিয়ে কাজ করেছি এবং তাদের একাডেমিক পরামর্শ দিয়েছি। একসময় বিতর্ক করতাম। মাঝে মাঝে বিতর্ক দলের কাজ দেখি, ফিডব্যাক দেই। ভবিষ্যতে দেশে গবেষণা এবং বৈজ্ঞানিক পাণ্ডুলিপি তৈরির কৌশল শেখাবার ইচ্ছে আছে।[/box]
[box type=”shadow” align=”” class=”” width=””]বিজ্ঞানী.অর্গঃ তরুন শিক্ষার্থি যারা বিজ্ঞানে কাজ করতে চায় তাদের জন্য আপনার কোন উপদেশ বা বক্তব্য কি?
ড. নাভিদ সালেহঃ একটাই বক্তব্য: যা শিখবে যথাযথ ভাবে শিখবে। আর বৈজ্ঞানিক প্রশ্ন তৈরির কৌশল আয়ত্ত করবে। ভালো প্রশ্নই ভালো গবেষণার জন্ম দেয়। প্রশ্ন করতে জানাটা আমারদের শিখতে হবে। অহেতুক এবং অমূলক প্রশ্ন নয়। অন্তর্দৃষ্টি-সমৃদ্ধ প্রশ্ন যা একটি প্রকল্প বা hypothesis নির্মাণে সক্ষম। [/box]
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে আরো নতুন নতুন সংবাদ জানতে সাবস্ক্রাইব করুন।
[mc4wp_form id=”3448″]
এরকম আরো বেশি বেশি সাক্ষাতকার হওয়া উচিৎ। অসাধারণ একজন মানুষের সাক্ষাতকার নিয়েছেন, ওনার সানিধ্যে যাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছিলো।