পৃথিবীর জ্বর

dh 

পৃথিবীর জ্বর

মনোজকুমার দ. গিরিশ  

      

      

      পৃথিবীর তাপ বেড়ে গেছে৤ পৃথিবীর জ্বর হয়েছে৤ প্রবল উদ্যোগ নিতে হবে রোগ সারাতে নয়তো এ পৃথিবী আর বাঁচবে না৤ আমরা বাঁচবো না৤ পৃথিবীর জ্বর হয়েছে, সেটা আমরা জানি৤ তাপ বেড়েছে অনেকটা৤ বিজ্ঞানীরা সেকথা আমাদের জানিয়েছেন৤ নানা কারণে পৃথিবীতে পরিবেশ দূষণ যত বাড়ছে, পৃথিবীর জ্বরও ততো বাড়ছে৤ সেকথা আজ আর কারও অজানা নেই৤ এককালে যে-সংবাদপত্র পরিবেশের জন্য মন্ত্রীপদ তৈরি হওয়া নিয়ে খুব হেসেছিল, সে কাগজও এখন বড় বড় করে পরিবেশের কথা বলে৤ সেটা খুবই ভালো কথা, আশার কথা৤ কিন্তু সেটা কতটা সত্য কথা এবং কাজের কথা তা বোঝা যায় না৤ কারণ দেখা যায় অঢেল বিজ্ঞাপন ছেপে ছেপে কাগজগুলি প্রচুর আয় করছে আর মুখে পরিবেশের কথা বলছে৤ কাগজ তৈরি হয় গাছ থেকে, তাই কাগজ তৈরি করার জন্য গাছ কাটতে হয়, এতে পরিবেশের খুব ক্ষতি হয়, তা সবার জানা, অবশ্যই জানা আছে সংবাদপত্রগুলিরও, কিন্তু তারা নির্বিকারভাবে বিজ্ঞাপন ছেপে হাজার হাজার টন কাগজ নষ্ট করছে ৤

 

       এই আধুনিক যুগে যখন টিভি রেডিয়োতে শত শত বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়, সেখানে কাগজে বিজ্ঞাপন ছেপে কাগজ নষ্ট তথা গাছ নষ্ট করা ঠিক নয়৤ এভাবে দিনে দিনে পৃথিবীর যে জ্বর বাড়ছে, পৃথিবীর সংকট বাড়ছে– তা সকলের জানা, তবু কেন এসব হতে দেওয়া হচ্ছে সেটা বোঝা কঠিন৤ সরকারের এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার৤ কাগজের পৃষ্ঠা সংখ্যা সর্বোচ্চ ৮ হবে বলে সীমা বেঁধে দিতে হবে৤ সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দু‘ পৃষ্ঠা অতিরিক্ত বাড়ানো যেতে পারে৤ এই পরিসরের মধ্যেই তাদের বিজ্ঞাপন ইত্যাদি প্রকাশ করতে হবে, নিজেদের ইচ্ছে মতো কাগজের পৃষ্ঠাসংখ্যা বাড়ানো যাবে না৤

        তা ছাড়া কোন একটি কাগজের প্রচারসংখ্যা সর্বাধিক কত হবে তারও একটা সীমা বেঁধে দিতে হবে৤ ধরি তা এক লাখ হতে পারে৤ কাগজে ছেপে সংবাদপত্র প্রকাশ করে মানুষকে সংবাদ পৌঁছে দেবার দিন আর নেই, আধুনিক বৈদ্যুতিন মাধ্যম বা টিভি সে কাজটি অনেক বেশি সফলভাবে করছে, সচল ছবি, বক্তার কথা তৎক্ষণাৎ শোনাবার ব্যবস্থাও সেখানে আছে, তাই এখন এযুগে আর কাগজ– তথা গাছ– তথা পরিবেশ হনন করে সংবাদপত্র প্রকাশের দরকার নেই৤ বিশ্বের খবর যখন মুহূর্তের মধ্যে পৃথিবীর অপর প্রান্ত থেকে শোনা এবং দেখাও যায় তখন কেন আর প্রাচীন মুদ্রণ-মাধ্যমে পুরানো বাসি খবর ছেপে অকারণ ’পিছিয়ে পড়া‘?  

 

মনোজকুমার দ. গিরিশ
Latest posts by মনোজকুমার দ. গিরিশ (see all)

About মনোজকুমার দ. গিরিশ

Check Also

স্পেস-টাইম কন্টিনিউয়াম

কখনও ভেবে দেখেছেন যে কেন মানুষের বাস্তব চেতনা শুধু দৈর্ঘ্য বা দূরত্ব মাত্রা ও সময় মাত্রার বেড়াজালে আবদ্ধ ? কেন আমাদের উপলব্ধি “স্পেস-টাইম কন্টিনিউয়াম” প্রেক্ষাপট ছেড়ে বেরোতে পারে না ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে পদার্থবিদ্যা নিজেই হোঁচট খায় ! তবে পদার্থবিদ্যার প্রসূতি যা অর্থাৎ মনুষ্য-মস্তিষ্ক, তার গভীরে প্রবেশ করলে এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যেতেও পারে !

ফেসবুক কমেন্ট


  1. মনোজকুমার,
    Thanks for your thoughts. We all can make a difference to build a better tomorrow.

    Dr. Ahmed Sharif once shared his view with journalists in Dhaka regarding our mutual moral responsibility: “Amader orthhoniti krishi nirovor. Kroshoker takai potrika chhapa hoi. Onek porishor jurre protidin potrikai, kulkhani o biggapon chhapa hoi. Eguli kroshoker ki upokare ase?”

    “Amar jiboner shresthho sompod, amar khhoti sikarer shokti” ~ Dr. Ahmed Sharif.

  2. মনোজকুমার দ. গিরিশ

    Shafiul Islam জ্ঞানী পণ্ডিত Dr. Ahmed Sharif-এর অতি মূল্যবান মতামত ‎তুলে ধরে আমাকে অনুগৃহীত করেছেন, সে জন্য তাঁকে ধন্যবাদ৤ আমাদের ‎সুবিধার্থে তিনি যদি আর একটু বেশি সময় ব্যয় করে তাঁর কথাগুলি বাংলা হরফে ‎লিখতেন তো আরও ভালো হত৤ ‎

    মনোজকুমার দ. গিরিশ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।